আল কায়েদা (Al Qaeda) জঙ্গি সংগঠনের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশে (Bangladesh) ঘাঁটি তৈরি ও হামলার পরিকল্পনা করা ছয় উগ্র ধর্মীয় শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও জঙ্গি দমন শাখা সিটিটিসি’র প্রধান মহম্মদ আসাদুজ্জামান সাংবাদিক সম্মেলনে একথা জানান।
আল কায়েদা ভারতীয় উপমহাদেশ শাখা বারবার বাংলাদেশকে ভিত্তি করে ভারতের একাধিক এলাকায় নাশকতার বার্তা দিয়েছে। এবার যে ছয় যুবককে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশের জঙ্গি দমন শাখা তাদের স্বীকারোক্তি, সশস্ত্র হামলা চালানো।
বাংলাদেশে জঙ্গি নাশকতার এই আল কায়েদা জাল কতদূর ছড়িয়েছে তা জানতে ধৃতদের লাগাতার জেরা চলছে। সিটিটিসি প্রধান জানান, ঢাকার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, চট্টগ্রামের টেকনাফ থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতরা পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ে ঘাঁটিতে জঙ্গি হামলার প্রশিক্ষণ শিবির খোলার পরিকল্পনা করে। সেখান থেকে বাংলাদেশে হামলা করারও ছক করেছিল।
জানানো হয়েছে, নাশকতার মূল পরিকল্পনাকারী আবদুর রউফ। সে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে ধর্মীয় শিক্ষার জন্য গিয়েছিল। সেখানেই আল কায়েদার সাথে সংশ্লিষ্ট হয়। বাংলাদেশে ফিরে আরও কয়েকজনকে নাশকতায় উদ্বুদ্ধ করে। এদের নিয়ে টেকনাফের পাহাড়ি এলাকায় জঙ্গি ঘাঁটি তৈরি করার পরিকল্পনা করে। একাধিক সূত্র মারফত ঢাকা পুলিশের জঙ্গি দমন বিভাগ অভিযান চালায়। সিটিটিসি প্রধান মহম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, ৬ জন ধরা পড়লেও তাদের সহযোগী আরও কয়েকজনের খোঁজে অভিযান চলছে।
তদন্ত সূত্রে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বাংলাদেশ সংলগ্ন ভারতের দুটি রাজ্য অসম এবং পশ্চিমবঙ্গেও কতটা জাল ছড়িয়েছে আল কায়েদা। কারণ এই জঙ্গি সংগঠনটির ভারতীয় উপমহাদেশ শাখার প্রধান লক্ষ্য বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা।
ঢাকা পুলিশ বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, শুধু আল কায়েদা নয়, তালিবান গোষ্ঠির ঘনিষ্ঠদের সংযোগ আছে এমন কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
তালিবান গোষ্ঠির কব্জায় এখন আফগানিস্তান। এদের সহযোগী হাক্কানি নেটওয়ার্ক জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে আছে নেপাল, ভারতে। পশ্চিমবঙ্গ ও অসম সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন বিভাগেও তাদের সংযোগ আছে। দুই দেশের গোয়েন্দা বিভাগ আগেই এমন জানিয়েছে। অসম ও পশ্চিমবঙ্গর বিভিন্ন জেলায় দুটি সংগঠনের সাথে জড়িতদের বেশ কয়েকজন ধরা পড়েছে। তারা বিচারাধীন।
বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদের সাম্প্রতিক গতিবিধিতে স্পষ্ট, পুরনো জেএমবি, নব্য জেএমবি এবং বিভিন্ন উগ্র গোষ্ঠির তেমন নাশকতামূলত সক্রিয়তা নেই। তবে প্রকাশ্যে পুলিশের কব্জা থেকে ধৃত জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে।