” এসো-মা লক্ষ্মী বসো ঘরে/আমার এই ঘরে থাকো আলো করে”- এই গানের কলির মাধ্যমেই সমগ্র বাঙালি জাতি ধনদেবী অর্থাৎ মা লক্ষ্মীর (Lakshmi Puja) আরাধনা করে থাকেন। বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গোৎসব সবেমাত্র কাটতে না কাটতেই ধনদেবীর আরাধনা করার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে গোটা বঙ্গবাসী। হাতে রয়েছে মাত্র একটা দিন, এই একটা দিন পোহালেই বাংলার ঘরে ঘরে প্রত্যেক মানুষ মেতে উঠবেন মা লক্ষ্মীর আরাধনায়। কথায় কথায় লোকে বলে, “মা লক্ষী যেনো সর্বদা অচলা থাকে ঘরে ঘরে”। কথাটির অর্থ হল এই ভুবনবাসীর প্রত্যেকের ঘর যেন সর্বদা ধনধান্যে ভরে থাকে।
ধনসম্পত্তি গৃহে অচলা রাখার জন্য প্রধানত বাঙালিরা মা লক্ষ্মীকেই পূজার্চনা করে থাকেন। সারাবছরই নানান সময় ভিন্ন প্রকারের লক্ষ্মীপুজো হয়ে থাকলেও এই কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা পালিত হয় বঙ্গবাসী প্রত্যেক ঘরে ঘরে। বঙ্গবাসীর বিশ্বাস এই পূজা করলে ঘরে সবকিছুই থাকবে পরিপূর্ণ। এই লক্ষ্মী পূজা প্রধানত সন্ধ্যাবেলা করা হয় বলে এই পূজাকে কোজাগরী লক্ষ্মী পূজাও বলা হয়ে থাকে। ‘কোজাগরী’ শব্দটি অর্থ কে জেগে আছে। বলা হয়, যার কিছু নেই সে পাওয়ার আশায় জাগে আর যার আছে সেটা যেন না হারায় তার আশায় জাগে।
এই পুজো করতে প্রধানত লাগে টাকা, স্বর্ণমুদ্রা, ধান পান, কড়ি, হলুদ ও হরিতকী, পঞ্চরত্ন,পঞ্চশস্য, ফুল দূর্বা, বেলপাতা, গঙ্গাজল ইত্যাদি। নানান ধরনের ফল নিবেদন সহ এক বিশেষ ধরনের ফল এই সময় লক্ষী পূজোয় ধনদেবীকে অর্পণ করা হয়, তা হল ফোঁফল। তাছাড়া মিষ্টি স্বরূপ দেওয়া হয় তিলের নাড়ু, নারকেল নাড়ু, মুড়ির নাড়ু, চন্দ্রপুলি, সন্দেশ প্রভৃতি। এই কোজাগরী লক্ষ্মীপূজায় ভোগ হিসেবে অনেকেই বাড়িতে জোড়া ইলিশ দেবীকে অর্পণ করেন। এছাড়াও লুচি পায়েস নানান মিষ্টি সহযোগে মাকে অর্পণ করা হয়।