বাংলাদেশে বিপুল আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত সে দেশের নাগরিক পি কে হালদার এ রাজ্যে গোপনে বিদেশি মুদ্রা লেনদেন করত। বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে হালদারমশাই পশ্চিমবঙ্গে এসে আত্মগোপন করে। ঢাকা থেকে বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যে তথ্য পাঠিয়েছিল তার ভিত্তিতে তদন্ত করছে ইডি। সেই সূত্র ধরে ইডি খতিয়ে দেখছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাংলাদেশি পি কে হালদারের সংযোগ।
বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর থেকে গ্রেফতার করা হয় পি কে হালদার (প্রশান্ত কুমার হালদার) কে। জেরায় সে স্বীকার করে পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও সরকারি দলের নেতাদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ। আদালতে পি কে হালদারের হুঁশিয়ারি ছিল সময় হলেই সব বলব।
জেনে নিন পি কে হালদারের কথা: তার বান্ধবীর সংখ্যা লজ্জা দেবে বহু বিলিওনারকে
Bangladesh: ৮০ জন গার্লফ্রেন্ড বাংলাদেশি পি কে হালদারের, পশ্চিমবঙ্গে বেআইনি লেনদেন
পি কে হালদদারের সঙ্গে কি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কোনও লেনদেন সম্পর্ক ছিল? এই দিকটি খতিয়ে দেখছে ইডি। তবে জানা যাচ্ছে, পি কে হালদার উত্তর ২৪ পরগনার এক হেভিওয়েট তৃ়ণমূল কংগ্রেস নেতা ও মন্ত্রীর সঙ্গে সংযোগ স্পষ্ট করে। কে সেই নেতা? ইডির ইঙ্গিত অশোকনগর, গাইঘাটার লোক তিনি। তিনি বিশেষ প্রতিপত্তিশালী। ইডি তদন্তে উঠে এসেছে বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা গোপনে এ রাজ্যে এনে স্থানীয় কয়েকজন তৃণমূল নেতাদের মাধ্যমে কাটমানি ভিত্তিক চুক্তিতে টাকা ভাঙাতেন পি কে হালদার। তার বিলাসবহুল বাড়ি ও সম্পত্তি ক্রোক করেছে ইডি।
অর্পিতার ফ্ল্যাটে মিলেছে মুজিব ছাপ প্যাকেট। কেন এমন প্যাকেট? পড়ুন:
SSC Scam: অর্পিতার বাড়ি থেকে উদ্ধার টাকার ব্যাগে মুজিব ছাপ, তদন্ত চাইলেন সুকান্ত
এদিকে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে তৃ়ণমূল কংগ্রেস সরকারের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জমা করা বিপুল অর্থ তার বান্ধবী অর্পিতা মুখার্জির ফ্ল্যাট থেকে বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। তদন্তে উঠে এসেছে বিপুল বিদেশি মুদ্রা জড়ো করেছিলেন পার্থ। এখানেই ইডির সন্দেহ জমাট হচ্ছে। ইতিমধ্যে টাকার বাণ্ডিল থেকে একটি প্যাকেটে বাংলাদেশের জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি দেখে চমকে যান ইডি আধিকারিকরা। এর পরেই বাংলাদেশের দুদকের পাঠানো তথ্য আরও খতিয়ে দেখছে ইডি।
কে এই পি কে হালদার?
বাংলাদেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠান রিলায়েন্স ফাইন্যান্স ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার। প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা সে আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ। পি কে হালদারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিশ জারি করেছে ইন্টারপোল। বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে উঠে আসে বরিশালের বাসিন্দা পশ্চিমবঙ্গে লুকিয়ে থাকা পি কে হালদারের তথ্য। তার এক সহযোগী সুকুমার মৃধার একটি বাড়ি আছে অশোকনগরে। গোপনে ভারতে ঢুকে টাকা দিয়ে ভারতীয় নাগরিকত্ব পরিচয় কিনেছিল পি কে হালদার।