ইলিশের স্বাদ ফেরাতে নদীবক্ষে অভিনব উৎসব

বিশেষ প্রতিবেদন: ওঁরা বলছেন, “প্রতিজ্ঞা করুন গঙ্গার রুপালি ফসল ৪০০ গ্রামের নীচে কখনই কিনব না।” এই উদ্দেশ্য নিয়েই ডায়মণ্ডহারবারে হয়ে গেল এক অভিনব ইলিশ উৎসব।…

Hilsa

বিশেষ প্রতিবেদন: ওঁরা বলছেন, “প্রতিজ্ঞা করুন গঙ্গার রুপালি ফসল ৪০০ গ্রামের নীচে কখনই কিনব না।” এই উদ্দেশ্য নিয়েই ডায়মণ্ডহারবারে হয়ে গেল এক অভিনব ইলিশ উৎসব। যা ছোট ইলিশমাছ ধরার প্রতিবাদের সামিল। কোনও জনপ্রতিনিধিদের উদ্দ্যেগে নয় সম্পূর্ণ এই বাংলার কয়েকজন পরিবেশ সচেতন নাগরিকের চেষ্টায় অনুষ্ঠিত হয় এই ইলিশ উৎসব।

আপামর বাঙালীর অত্যন্ত প্রিয় মাছ ইলিশ। আর সেই জন্যই ইলিশ মাছ বাঙালীর রান্নাঘর থেকে ঠাকুর পুজোর ঘরে ঢুকে পড়েছে। সরস্বতী পুজো অথবা বিজয়া দশমীর সকালে ওপার বাংলার বাঙালিদের বাড়িতে কুলোতে জোড়া ইলিশ রেখে তেল-সিঁদুর পরিয়ে উলু ও শঙ্খের ধ্বনিতে তার আহ্ববান করে প্রণাম করা হয়। সোজা কথায় এপার থেকে ওপার বাঙালির ভীষণ প্রিয় এই ইলিশ মাছ।

Hilsa at diamondharbour

Advertisements

ঘটনা হল, এই ভরা বর্ষাকালে করোনার দংশনের ভয় কাটিয়ে বাজারে গিয়ে ইলিশের খোঁজ করেননি এমন বাঙালী খুবই বিরল। কিন্তু এবার বড় ইলিশের বড্ড আকাল, বাজারে যা কাঁচা ইলিশ বলে বিক্রি হচ্ছে তা সবই পোনা। ফলে বাজারে অনেক মাছ এলেও তার স্বাদ কম। এর কারণ ডিমওলা ও ছোট মাছ ধরা। এই ছোট ইলিশ মাছ ধরা কমাতে ডায়মন্ডহারবারের হুগলি নদীর সুভাষ ঘাটের কাছে একটি ভেসেলে ইলিশ উৎসবের সূচনা হয়। ভেসেলটি রায়চক-কুঁকড়াহাটি হয়ে ফের ডায়মন্ড হারবারে ফিরে আসে। ইলিশ নিয়ে সেমিনারেরও আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কবি কমল দে শিকদার, শাকিল আহমেদ, নাগসেন, চন্দন মাইতি-সহ দুই বাংলার লেখক এবং শিল্পীরা। ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। ইলিশ নিয়ে একটি গবেষণা গ্রন্থ এবং সাহিত্য সংকলনেরও উদ্বোধন করা হয় এই অনুষ্ঠানে।

উদ্যোক্তাদের তরফে লেখক শাকিল আহমেদ বলেন, ‘ছোট মাছ ধরে নেওয়ার জন্য বর্ষাকালে যখন পূবালী হাওয়া বয় তখন বৃষ্টির জল নদী বেয়ে সমুদ্রের মোহনার দিকে গেলেও ইলিশ মাছ ঝাঁকে ঝাঁকে আর নদীর মোহনা বেয়ে উজান পথে আগের মতো আসে না। এই প্রবণতা কমাতে আমাদের এই ইলিশ উৎসব। শুধু খাওয়া নয়, ইলিশকে বাঁচতেও দিতে হবে তবে পাবেন ভালো কিছু। তাই ‘ইলিশ বাঁচাও’ উৎসব করলাম আমরা।’’