বিমা শিল্পে বিরাট আঘাত দিয়ে আরও বিক্রির পথে মোদী সরকার

সরকারি সম্পত্তি বিক্রির পথে আরও একটি নতুন পদক্ষেপ করল মোদী সরকার। এলআইসির বেসরকারীকরণের পর এবার আরও একটি বিমা সংস্থার দিকে নজর কেন্দের। ন্যাশনাল ইনসিওরেন্স, ইউনাইটেড…

বিমা শিল্পে বিরাট আঘাত দিয়ে আরও বিক্রির পথে মোদী সরকার

সরকারি সম্পত্তি বিক্রির পথে আরও একটি নতুন পদক্ষেপ করল মোদী সরকার। এলআইসির বেসরকারীকরণের পর এবার আরও একটি বিমা সংস্থার দিকে নজর কেন্দের।

ন্যাশনাল ইনসিওরেন্স, ইউনাইটেড ইনসিওরেন্স এবং ওরিয়েন্টাল ইনসিওরেন্স এই তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থার মধ্যে একটির বিলগ্নিকরণের চিন্তাভাবনা শুরু করেছে মোদী সরকার।

বিজেপি বিরোধী অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করছেন, এভাবেই মোদী সরকার একের পর এক লাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বেসরকারি হাতে তুলে দিয়ে দেশটাকেই বিক্রি করার পরিকল্পনা করেছে।

জানা গিয়েছে, এই তিন বিমা সংস্থার মধ্যে ইউনাইটেড ইন্ডিয়া ইনসিওরেন্সের বেসরকারিকরণ করতে চায় কেন্দ্র। খুব শীঘ্রই এ ব্যাপারে বিলগ্নিকরণ সম্পর্কিত কমিটির কাছে সুপারিশ পাঠাতে চলেছে নীতি আয়োগ। কমিটি এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

কেন্দ্রের যুক্তি, ইউনাইটেড ইন্ডিয়ার আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে এই বিমা সংস্থার লোকসান হয়েছে ১ হাজার ৪৮৫ কোটি টাকা। যদিও ২০২০-২১ অর্থবর্ষে সেই লোকসান কমে হয় ৯৮৫ কোটি টাকা। কিন্তু তারপরে এই সংস্থার বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত থেকে সরছে না মোদী সরকার।

যদিও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চলতি অর্থবর্ষে এই বিমা সংস্থার লোকসানের পরিমাণ আরও কমতে চলেছে। এই বিষয়ে গত বাজেট অধিবেশনের জবাবি ভাষণে সংসদে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ শতাব্দী রায় প্রশ্ন তুলেছিলেন, লোকসানের অজুহাতে যদি সরকারি সংস্থাকে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তাহলে সেই সংস্থাকে সরকার নিজে কেন পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করছে না?

Advertisements

উল্লেখ্য, বিমাসংস্থাগুলির আর্থিক পরিস্থিতির উন্নতির জন্য ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে তিন বিমা সংস্থাকে ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র। তারমধ্যে ন্যাশাল ইনসিওরেন্সকে দেওয়া হয়েছে ৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা, ওরিয়েন্টাল ইউসিওরেন্সে বরাদ্দ ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা এবং ইউনাইটেড ইনসিওরেন্সে দেওয়া হয়েছে ১০০ কোটি টাকা।

সাধারণত ভবিষ্যতের জন্য আমজনতা বিমা করে থাকেন। অভিযোগ, মোদী সরকার সাধারণ মানুষের ভবিষ্যত নিয়েই ছিনিমিনি খেলতে চাইছে। সে কারণেই তারা নিজেদের স্বার্থে এভাবে একের পর এক রাষ্ট্রয়াত্ত সংস্থাকে বেসরকারি হেতে তুলে দিচ্ছে।

এর আগে তিন বিমা সংস্থাকে একত্রিত করে একটি বিমা সংস্থা তৈরি করার চিন্তাভাবনা করেছিল মোদী সরকার। যদিও তা কার্যকর করা হয়নি।

রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থার বেসরকারিকরণ নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ৪-৫টি বেসরকারি বিমা সংস্থা। তাদের কর্তাব্যক্তিরা অর্থনৈতিক পরিষেবা বিষয়ক দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, ব্যাঙ্কের তুলনায় বিমা সংস্থার বেসরকারিকরণের কাজটি কেন্দ্রের পক্ষে অনেকটা সহজ। কারণ, সংসদে পাস হয়ে গিয়েছে জেনারেল ইনসিওরেন্স বিজনেস ন্যাশানালাইজেশন অ্যাক্ট সংশোধনী। নতুন আইনে বিমায় সরকারকে ৫১ শতাংশের কম অংশীদারি রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে ব্যাংক বেসরকারিকরণ বিল এখনও পেশ হয়নি সংসদে।