তাঁদের আশঙ্কা তৃণমূল কংগ্রেস এত সহজে হাল ছাড়বে না। তাঁরা অর্থাত দেউচা পাঁচামি এলাকার তৃণমূল কংগ্রেসেরই সমর্থকরা। এরা বেশিরভাগ আদিবাসী। এদের দাবি, কোনওভাবেই সরকারের খনি প্রকল্পে জমি দান করব না। সোমবার প্রস্তাবিত কয়লা খনির জন্য জমিদাতাদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার অনুষ্ঠানে ধুন্ধুমার ঘটল। আদিবাসীদের তাড়া খেয়ে পালালেন সরকারি কর্মী ও বীরভূমের (Birbhum) তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা।
দেউচা পাঁচামির এই আদিবাসী বিক্ষোভের ভিডিও রাজ্য জুড়ে তীব্র আলোড়ন ফেলেছে। এভাবে টিএমসি নেতাদের পালানোর ঘটনা রাজনৈতিকভাবে শাসকদল বিব্রত বলে মনে করা হচ্ছে। বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস এ বিষয়ে নীরব।
আর দেউচা পাঁচামির আদিবাসী বাসিন্দাদের আশঙ্কা, তাড়া খেয়ে পালানোর পর টিএমসি এলাকা ঘিরতে পারে। অভিযোগ, রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে যে গণহত্যা ঘটেছে তার পিছনে রয়েছে বালি ও পাথর খাদান থেকে পাচার ও বখরা। এর জেরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও স্থানীয় উপপ্রধানকে খুনকে কেন্দ্র করে বগটু়ই গ্রামে গণহত্যা হয়।
দেউচা পাঁচামির বাসিন্দাদের অভিযোগ, মহম্মদ বাজারের এই এলাকা কয়লা খনি তৈরি হলে পাচার আরও বাড়বে। বিপুল এই বেআইনি লেনদেনের সুযোগ নিতে মরিয়া তৃণমূল। তারা এলাকায় রাজনৈতিক চাপ তৈরি করতে চায়। এর থেকে সংঘর্ষ ও গণহত্যার আশঙ্কা করছেন আদিবাসীরা।
রাজ্যে বাম জমানায় বীরভূম ছিল সিপিআইএমের একচ্ছত্র ঘাঁটি। তৃণমূলের আমলে শাসকদলেরই রমরমা। জেলায় বিরোধী দল বিজেপির অস্তিত্ব নেই। তবে ক্ষমতা হারানোর পরেও কিছু সংগঠন ধরে রেখেছে সিপিআইএম।
সিপিআইএমের দাবি, কয়লা খনি তৈরির অছিলায় দেউচা পাঁচামির জমি অধিগ্রহণের পিছনে বেসরকারি সংস্থার হাতে বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদ তুলে দিতে চাইছে তৃণমূল সরকার। আরও অভিযোগ, ভূমিপূত্রদের উচ্ছেদ করার চক্রান্ত করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেউচা পাঁচামির বিদ্রোহ থেকেও এমনই বার্তা আসছে। ফলে রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্র বীরভূমের এই এলাকা। প্রকল্পের বিরোধিতায় আন্দোলনে নেমেছে বীরভূম জমি জীবন জীবিকা ও প্রকৃতি বাঁচাও মহাসভা।
রাজ্য সরকারের দাবি, বীরভূমের মহম্মদ বাজার ব্লকের দেউচা পাঁচামিতে তৈরি হতে চলেছে দেশের সর্ববৃহৎ কয়লা খনি৷ এই প্রকল্পে ৩৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হওয়ার কথা৷ কর্মসংস্থান হবে লক্ষাধিক মানুষের৷ মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভাতেও হুঁশিয়ারি দেন, দেউচা পাঁচামিতে কোনও আন্দোলন বরদাস্ত করা হবে না।