জরুরি অবস্থা জারির নির্দেশ প্রত্যাহার করলেন শ্রী লংকার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া। তবুও থামছে না বিক্ষোভ৷ গত কয়েকদিন ধরে পথে নেমে সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র বিক্ষোভ দেখাচ্ছে শ্রীলঙ্কাবাসী (Sri Lanka Crisis)। বিক্ষোভ দমন করতে দেশে জারি করা হয়েছিল জরুরি অবস্থা। কিন্তু সামাল দেওয়া যায়নি মানুষের ক্ষোভ। শেষপর্যন্ত বুধবার থেকে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করে নিলেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট। জনতার প্রতিবাদ বিক্ষোভের জেরে মাথা নত করতে বাধ্য হলেন গোতাবায়া।
চলতি বছরের শুরু থেকেই আর্থিক সঙ্কটে ভুগছে শ্রীলঙ্কা। তাদের বৈদেশিক মুদ্রার ভাঁড়ার শূন্য। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, দ্বীপরাষ্ট্র জ্বালানি তেল, কাগজ, কালি, ওষুধ কোনও কিছুই আমদানি করতে পারছে না। প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম ধরাছোঁয়ার বাইরে। দীর্ঘ সময় দেশে বিদ্যুৎ থাকছে না। ভারতের কাছ থেকে পাওয়া ডিজেল দিয়ে বিদ্যুৎ সঙ্কট মেটানোর সাময়িক চেষ্টা করেছে লংকা সরকার। কিন্তু সেই ডিজেলও শেষ হওয়ার পথে।
বিক্ষোভের জেরে মন্ত্রিসভার পদত্যাগের পর প্রেসিডেন্ট দেশের সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ সরকার গঠনের ডাক দিয়েছিলেন। কিন্তু বিরোধীরা সেই প্রস্তাব উড়িয়ে দিয়েছে। দেশের নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে আলি সাবরিকে নিয়োগ করেছিলেন রাজাপক্ষে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যেেই নতুন অর্থমন্ত্রীও পদত্যাগ করেন। ফলে শ্রীলঙ্কার সঙ্কট ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও দেশবাসী প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে অনড়।
দেশের প্রধান বিরোধী দল জানিয়ে দিয়েছে, তারা কোন অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করবে না। ইতিমধ্যেই সরকার থেকে সরে এসেছে শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টি। দলের এই সিদ্ধান্তের পরে সংসদের ডেপুটি স্পিকার পদে ইস্তফা দিয়েছেন রঞ্জিত সিয়ামবালাপিতিয়া।ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের ঘাটতির কারণে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। জিনিসপত্রের দাম এতটাই বেড়েছে যে, বহু মানুষ সামান্য চাল-ডালও কিনতে পারছেন না। কার্যত অভুক্ত রয়েছেন শ্রীলঙ্কার অধিকাংশ মানুষ।
সাধারণ মানুষ থেকে ব্যবসায়ী সকলেই ক্ষোভে ফুঁসছেন প্রেসিডেন্টের উপর। সাধারণ দ্বীপরাষ্ট্রবাসীর অভিযোগ, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া চিনের কাছে তাঁদের দেশকে বিক্রি করে দিয়েছেন। এখন অন্য দেশের থেকে ঋণ নিয়ে চিনের ধার মেটাতে চাইছেন।