রাত পোহালেই একুশে জুলাই। এদিনের সম্মলেনকে ঘিরে চলছে জোর কদমে প্রস্তুতি। রাজ্যের আনাচে-কানাচে থেকে আসছে তৃণমূলের কর্মী সমথর্করা। রবিবার সন্ধ্যায় প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে ধর্মতলায় যান তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সঙ্গে ছিলেন কলকাতার পুলিস কমিশনারও। সেখানে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘একুশে জুলাই চিরকাল চলবে, কোনওদিনই বন্ধ হবে না’। তাঁর কথায়, ‘আমাদের বছরের একটা কর্মসূচি শহীদ স্মরণে আমরা এখানে করি। এই নিয়েও অনেকে আপত্তি আছে। অনেকে আপত্তি জানায়। তারা যখন নবান্ন অভিযান করেন পুলিসের পারমিশন ছাড়া, তখন আপত্তিটা কোথায় থাকে। কই, তাঁদের যখন সেন্ট্রাল কর্মসূচি থাকে, আমরা তো প্যারালাল কর্মসূচি করি না’।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, বিভিন্ন জায়গা থেকে আসেন সহকর্মীরা। বৃষ্টির কারণে কিছুটা সমস্যা হলেও ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে লক্ষাধিক মানুষ। তিনি বলেন, আগে মানুষ ভোট দিতে পারতেন না। মাল্টিস্টোরেড বিল্ডিং তালা বন্ধ করে রাখত। গণতন্ত্র স্তব্ধ করে রাখত। ১৩ জন মারা যায়। ১৫০ জন পুলিশের কারণে আহত হয়। নো আইডি কার্ড, নো ভোট শেষনের সময় থেকে শুরু হয়। এরপর থেকে মানুষ ভোট দেওয়ার অধিকার পায়’।
একুশে জুলাইয়ের শহিদ-সহ সমস্ত শহীদের স্মরণে মা-মাটি-মানুষ দিবস ও গণতন্ত্র দিবস হিসেবে স্মরণ করে থাকার জন্য পালন করা হয় এই দিনটি। এদিন ধর্মতলার মঞ্চ থেকে বিজেপি এবং সিপিএম শাসিত রাজ্যগুলিকে তুলোধোনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘ডবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলিতে বিজেপি কাউকে ভোট দিতে দেয় না। সিপিএমশাসিত রাজ্য তো পশ্চিমবাংলায় আমরা হাতেনাতে ফল পেয়েছি। তাদের আবার বড় বড় কথা! সিপিএমশাসিত রাজ্য তো পশ্চিমবাংলায় আমরা হাতেনাতে ফল পেয়েছি। তাদের আবার বড় বড় কথা’!
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘প্রায় ৩৩ বছর ধরে এই অনুষ্ঠানটি এই জায়গা হয়,তার কারণ এখানে অনেকগুলি প্রাণ লুটিয়ে পড়েছিল। এই এলাকায় রক্তের বন্যা বয়ে গিয়েছিল। তাই আমাদের বছরের একটা কর্মসূচি শহীদ স্মরণে আমরা এখানে করি’।
বক্তব্যের শেষ পর্বে তিনি কেন্দ্রীয় শাসকদল ও বাংলার প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে শিক্ষা নেওয়া উচিত। কথায় কথায়, চোর ডাকাত বলা। মুখের কোনও ভাষা নেই। কত মানুষের উপরে অত্যাচার, বাংলাভাষীদের উপরে অত্যাচার। আমি সব ভাষা, সব রাজ্যকে সম্মান করি। এর মানে এটা নয় যে, বাংলা ভাষায় কথা বললেই তাঁকে জেলে পুরে দিতে হবে। সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি, ঝড়-জল হলেও আসবেন। বর্ষা হলেও আসবেন। বর্ষায় ভেজা আমাদের অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। যাঁরা জীবন দিয়েছেন, তাঁদের চোখের জল এইদিনটায় আমরা দেখতে পাই। একুশে জুলাই চিরকাল চলবে, কোনওদিনই বন্ধ হবে না’।