একুশে জুলাইয়ের আগে রাজনৈতিক উত্তেজনার আবহে ফের শিরোনামে উঠে এল ‘তিলোত্তমা কাণ্ড’। এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে ফের সরব হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যের বিরোধীরা পরিকল্পিতভাবে রাজ্য প্রশাসনের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে। আর সেই পরিকল্পনারই অংশ ছিল তিলোত্তমা কাণ্ড। কুণালের কথায়, “আবার তারা আসবে, আবার তারা শকুনের রাজনীতি করবে।”
তিলোত্তমা কাণ্ড কী?
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে কলকাতার একটি নামী আবাসনে এক কিশোরীর মৃত্যুকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। সেই ঘটনার তদন্ত ঘিরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংবাদমাধ্যমের একাংশ যে ভাবে নানা জল্পনা ও প্রশ্ন তোলে, তাতে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও শুরু হয় চাপানউতোর। তৃণমূলের পক্ষ থেকে তখন থেকেই দাবি করা হয়, এই ঘটনাকে হাতিয়ার করে রাজ্য সরকারকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি ও বিরোধী দলগুলি।
কুণাল ঘোষের বক্তব্য
এক সাংবাদিক সম্মেলনে কুণাল ঘোষ বলেন, “এই ধরনের ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু কিছু রাজনৈতিক দল এবং তাদের সহযোগী মিডিয়া এই ঘটনাগুলিকে এমনভাবে ব্যবহার করে, যাতে রাজ্য সরকারের প্রতি মানুষের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়। এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার। আমরা এটা বরদাস্ত করব না।”
তিনি আরও বলেন, “৯ অগস্টের পর আবার এরা রাস্তায় নামবে। আবার শকুনের মতো লাশের রাজনীতি করবে। কিন্তু মানুষ এখন বুঝে গিয়েছে কে কার জন্য রাজনীতি করছে আর কে প্রকৃত অর্থে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে।”
একুশে জুলাইয়ের বার্তা
তৃণমূলের তরফে ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে, ২১ জুলাই শহিদ দিবসের সভা থেকে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সভাকে ঘিরে প্রস্তুতি তুঙ্গে। কুণাল ঘোষের বক্তব্য থেকেও পরিষ্কার, দল বিরোধীদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে চাইছে। তিলোত্তমা কাণ্ড সেই প্রচারের বড় অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষণ
রাজনৈতিক মহলের মতে, একুশে জুলাইয়ের আগে এই ধরনের মন্তব্য মূলত জনমত প্রভাবিত করার কৌশল। কুণাল ঘোষের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে তৃণমূল স্পষ্ট বার্তা দিতে চাইছে যে, তারা কোনও ভাবেই প্রশাসনের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার সহ্য করবে না। বিরোধীদের বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচার’-এর অভিযোগ তুলে দলের কর্মীদের চাঙ্গা রাখার চেষ্টা চলছে।
পাল্টা প্রতিক্রিয়া
বিরোধী দলগুলি অবশ্য কুণালের এই বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাদের মতে, কুণাল ঘোষ মূল ঘটনা থেকে নজর ঘোরাতে চাইছেন। বিজেপির এক নেতার কটাক্ষ, “তৃণমূল এখন সব কিছুকেই ষড়যন্ত্র বলছে। আসলে ওদের দুর্নীতি ঢাকতেই এ সব বলা হচ্ছে।”