Kerala High Court: কেরল হাইকোর্ট দেশের মধ্যে প্রথমবারের মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবহারের উপর একটি নির্দিষ্ট নীতি প্রকাশ করেছে, যা রাজ্যের জেলা বিচার বিভাগে AI-এর দায়িত্বশীল ও নৈতিক ব্যবহারে দিকনির্দেশ দেবে। এই নীতিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, বিচারিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা আইনি যুক্তি তৈরির কাজে কোনওভাবেই AI ব্যবহার করা যাবে না। এর লক্ষ্য এই ধরনের প্রযুক্তির দায়িত্বশীল এবং নৈতিক স্থাপনা নিশ্চিত করা।
‘জেলা বিচার বিভাগে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সরঞ্জামের ব্যবহার সংক্রান্ত নীতি’ শীর্ষক এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, AI শুধু সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারবে—যেমন অনুসন্ধান বা প্রাথমিক তথ্য বিশ্লেষণে। কিন্তু কোনও রায়, আদেশ বা আইনি সিদ্ধান্তে AI-এর ভূমিকা রাখা যাবে না। নীতিতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, “বিচারিক দায়িত্ব মানুষের—AI নয়।”
এই নীতি কেরালার সব জেলা বিচারক, বিচারিক কর্মী, ইন্টার্ন ও আইন কেরানিদের জন্য প্রযোজ্য। নীতিটি অবস্থান বা সময় নির্বিশেষে ব্যক্তিগত, আদালতের মালিকানাধীন, বা তৃতীয় পক্ষের ডিভাইসগুলিতে AI ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে।
নীতিতে জেনারেটিভ AI (যেমন চ্যাটজিপিটি, জেমিনি, কোপাইলট, ডিপসিক) এবং আইনি গবেষণাভিত্তিক এআই সরঞ্জামগুলিকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এগুলোর ব্যবহারে স্বচ্ছতা, ন্যায্যতা, গোপনীয়তা এবং জবাবদিহিতার বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কেরালা হাইকোর্ট কড়াভাবে জানিয়ে দিয়েছে, কেউ এই নীতির লঙ্ঘন করলে বিচারিক আচরণ নিয়ন্ত্রণের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি জেলা বিচারকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তারা যেন দ্রুত এই নির্দেশিকা প্রচার করেন এবং মাঠপর্যায়ে এর কঠোর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করেন। বিশ্বব্যাপী প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থায় AI ব্যবহারের নৈতিকতা নিয়ে যখন আলোচনা চলছে, তখন কেরালা হাইকোর্টের এই পদক্ষেপ অন্যান্য রাজ্য ও বিচারব্যবস্থার কাছে একটি দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারে।