গত শনিবার, কলকাতার আকাশ কার্যত মেঘে ঢেকে গিয়েছিল। দিনভর বৃষ্টির (Weather Update) ফলে শহরের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টির পরিমাণ ৮৪ মিলিমিটার পৌঁছায়, যা এই মরশুমের দ্বিতীয় ভারী বৃষ্টি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বিশেষভাবে, কলকাতার বৃষ্টির পরিমাণ অন্যান্য শহরের তুলনায় বেশি ছিল, (Weather Update) যদিও ঘূর্ণিঝড় বা টানা দুর্যোগ ছিল না। তবে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বৃষ্টি একটি অস্বাভাবিক ঘটনা এবং এটি স্থানীয় মেঘের কারণেই হয়েছে।
এদিনের বৃষ্টির পরিমাণ একসঙ্গে পুরো শহরে(Weather Update) সমান হয়নি। কোথাও ছিল প্রচুর বৃষ্টি, আবার কোথাও ছিল একেবারে শুষ্ক পরিস্থিতি। যেমন, দমদমে ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, কিন্তু উলুবেড়িয়াতে সেই পরিমাণ ছিল ১০০ মিলিমিটার। আর ডায়মন্ডহারবারে বৃষ্টি একেবারে হয়নি। এই ধরনের তফাৎ কলকাতার বৃষ্টিতে সচরাচর দেখা যায় না, বিশেষত যখন ঘূর্ণিঝড় বা অন্যান্য মহা দুর্যোগ থাকে না।
অবস্থা অস্বাভাবিক, তবে প্রস্তুতি নিতে হবে
কলকাতার এই ধরনের বৃষ্টি সাধারণত ঝড় বা ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে যুক্ত থাকে, কিন্তু এবারের পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুসারে, এই বৃষ্টি মূলত স্থানীয় মেঘের কারণেই হয়েছে। তারা বলছেন, এমন পরিস্থিতি প্রাকৃতিক নিয়মের বাইরে, তাই এর সাথে মেলা কোনো বড় দুর্যোগ বা ঘূর্ণিঝড় ছিল না।
তবে, আরও বড় আশঙ্কা তৈরি হয়েছে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে। আগামী (Weather Update) ২৪ জুলাই, বৃহস্পতিবার উত্তর বঙ্গোপসাগরে একটি নতুন নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে। এটি কলকাতার উপকূলে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা বাড়াতে পারে। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানাচ্ছে, এই নিম্নচাপের কারণে দক্ষিণবঙ্গে প্রবল বর্ষণ হবে (Weather Update) এবং এই পরিস্থিতি আগামী সপ্তাহে আরও তীব্র হতে পারে।
আগামী সপ্তাহের পরিস্থিতি: ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা
প্রাথমিক পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী বৃহস্পতিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া ও দুই মেদিনীপুরে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর শুক্রবার গোটা দক্ষিণবঙ্গেই ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। তবে যে কোনো ধরনের দুর্যোগ বা ব্যাপক বন্যার আশঙ্কা বাড়াতে পারে নিম্নচাপটি। একদিকে যেমন পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় আগের বন্যা পরিস্থিতি থেকে কিছুটা স্বাভাবিকতা ফিরছে, আবার নতুন করে আবার বন্যা হতে পারে, বিশেষত ডিভিসির(Weather Update) জলস্তরের বাড়তি চাপের কারণে।
বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে নিম্নচাপের কারণে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু অঞ্চলে জল জমে গিয়েছিল এবং পশ্চিমাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা জলে ডুবে গিয়েছিল। এর মধ্যে আরামবাগ, গোঘাটের বড় এলাকা এবং ঘাটাল জেলা ছিল সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত। এখনও পর্যন্ত, ঘাটাল ও এর আশেপাশের এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে জীবনযাত্রা দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে।
বৃষ্টি ও বজ্রবিদ্যুৎ: আরও বৃষ্টির আশঙ্কা
রবিবারের পরে, দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু এলাকায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির(Weather Update) সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষত বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম বর্ধমান এবং বীরভূমে বৃষ্টির আশঙ্কা থাকবে। যদিও সোম ও মঙ্গলবার বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা কমবে, বুধবার থেকে পরিস্থিতি আবার ঘণীভূত হবে এবং বৃষ্টির পরিমাণ ও ব্যাপকতা দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় বাড়তে থাকবে।
উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস
উত্তরবঙ্গেও বৃষ্টির পরিস্থিতি সংকটজনক হতে পারে। রবিবার থেকে পাহাড়-ডুয়ার্সে প্রবল বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি অঞ্চলে বিশেষভাবে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ২১ জুলাই পর্যন্ত উত্তরবঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে এবং এতে পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিধসের সম্ভাবনা প্রবল।
এই বৃষ্টি এবং আবহাওয়া পরিস্থিতি যথেষ্ট চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বন্যার পূর্বাভাস, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সাথে যেন নতুন করে জীবনের সমস্যা আর না বাড়ে, তার জন্য সরকার ও সাধারণ জনগণকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা, রাস্তার সমস্যা এবং কৃষির উপর প্রভাব পড়ছে। দফতরের তরফ থেকে সকলকে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে, যাতে এই অনির্দিষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যায়।