গোঁড়ামির শৃঙ্খল ভাঙার ডাক, নারী স্বাধীনতায় ভাগবতের জোরাল বার্তা

সোলাপুর: “নারী যদি উঠে দাঁড়ান, গোটা সমাজ উঠে দাঁড়ায়।” শুক্রবার মহারাষ্ট্রের সোলাপুরে দাঁড়িয়ে এ কথা বললেন আরএসএস সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত। তাঁর মতে, নারীর উন্নয়ন কোনও…

গোঁড়ামির শৃঙ্খল ভাঙার ডাক, নারী স্বাধীনতায় ভাগবতের জোরাল বার্তা

সোলাপুর: “নারী যদি উঠে দাঁড়ান, গোটা সমাজ উঠে দাঁড়ায়।” শুক্রবার মহারাষ্ট্রের সোলাপুরে দাঁড়িয়ে এ কথা বললেন আরএসএস সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত। তাঁর মতে, নারীর উন্নয়ন কোনও অনুগ্রহ নয়, বরং জাতীয় অগ্রগতির অবিচ্ছেদ্য শর্ত (Mohan Bhagwat Women Empowerment)। সমাজে মেয়েদের এখনও যে সমস্ত রক্ষণশীল প্রথা ও দৃষ্টিভঙ্গি তাদের স্বাধীনতা রুদ্ধ করে রেখেছে, সেগুলির অবসান জরুরি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

উদ্যোগর্ধিনী নামের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ভাগবত বলেন, “নারী শুধুই একজন ব্যক্তি নন, তিনি ভবিষ্যতের ধারক। একজন পুরুষ হয়তো মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কাজ করেন, কিন্তু একজন নারী তাঁর মমতা, চিন্তাভাবনা, আদর্শের মাধ্যমে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে গড়ে তোলেন। তাঁর প্রভাব মৃত্যুর পরেও টিকে থাকে।”

   

তিনি জানান, “ঈশ্বর নারীদের এমন কিছু অতিরিক্ত গুণ দিয়েছেন, যা পুরুষদের নেই। তবুও নারী-পুরুষ উভয়ের মধ্যেই কাজের সবরকম ক্ষমতা সমানভাবে দেওয়া হয়েছে। তাই সমাজে যদি নারীদের বাধা দেওয়া হয়, তাহলে তা মানবিক সম্ভাবনারই দমন।”

পুরুষদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা স্পষ্ট: “নারীদের উন্নয়নের দায়িত্ব নেওয়ার ভান না করে বরং নিজেদের অহংকার সরিয়ে তাঁদের সামনে থাকা বাধাগুলি দূর করুন। নারী নিজেই নিজের পথ তৈরি করবেন। তিনি যখন নিজেকে উন্নীত করেন, তখন গোটা সমাজও উন্নত হয়।”

সাম্প্রতিক সময়ে আরএসএস প্রধানের এই বক্তব্যকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কারণ, অতীতে আরএসএস বারবার ‘পরম্পরার’ প্রসঙ্গে নারীকে ‘ঘরের লক্ষ্মী’ হিসেবে ব্যাখ্যা করত। সেই সংগঠনের মুখ থেকেই এবার নারীর আত্মনির্ভরতা এবং আত্মমর্যাদার উপর এত জোর, তা এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গির ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মত পর্যবেক্ষকদের।

Advertisements

অনুষ্ঠানে উদ্যোক্তা ও সমাজকর্মী মহিলাদের প্রশংসা করে ভাগবত বলেন, “উদ্যোগর্ধিনী যেভাবে মহিলাদের দক্ষতার উন্নয়ন ও আত্মনির্ভর করে তুলছে, তা দেশের সামাজিক কাঠামো পাল্টে দেওয়ার দিকেই ইঙ্গিত করছে। শুধু অর্থনৈতিকভাবে নয়, মানসিকভাবে শক্তিশালী ও আত্মবিশ্বাসী নারীই সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।”

এই অনুষ্ঠান ঘিরে সোলাপুরে জমায়েত হয়েছিল বহু কর্মজীবী নারী ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর প্রতিনিধি। তাঁদের উপস্থিতিতে ভাগবতের বার্তা হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক ও সামাজিক আলোচনার নতুন প্রেক্ষিত।