মোদীর বিশ্বভ্রমণ কি ভারতের জন্য গৌরবময় অবস্থান আনবে? প্রশ্ন মহুয়ার

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিশ্ব ভ্রমণ নিয়ে এবার সরাসরি প্রশ্ন তুললেন তৃণমূল নেত্রী মহুয়া মৈত্র (Mahua)। তিনি একটি ভিডিও বার্তায় বলেছেন পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর ভারতের…

Mahua slams modi on his foreign tour

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিশ্ব ভ্রমণ নিয়ে এবার সরাসরি প্রশ্ন তুললেন তৃণমূল নেত্রী মহুয়া মৈত্র (Mahua)। তিনি একটি ভিডিও বার্তায় বলেছেন পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর ভারতের কূটনৈতিক এবং বিদেশ নীতির ক্ষেত্রে ব্যাপক ব্যর্থতা প্রকাশ পেয়েছে। এই প্রেক্ষিতে মহুয়া প্রশ্ন, করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর করদাতাদের অর্থে পরিচালিত বিশ্বভ্রমণ কি সত্যিই ভারতকে বিশ্ব মঞ্চে একটি শক্তিশালী অবস্থান এনে দিতে পারবে?

   

তিনি (Mahua) আর ও বলেন ২০২৫ সালের ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিরীহ মানুষের মৃত্যুর পর ভারতের কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া এবং আন্তর্জাতিক সমর্থনের অভাব দেশের বিদেশ নীতির দুর্বলতাকে বিশ্বের সামনে নিয়ে এসেছে । এই ঘটনা ভারতের বিশ্ব মঞ্চে প্রভাব প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী মোদীর কৌশল নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।

পহেলগাঁও জঙ্গি হামলা এবং কূটনৈতিক ব্যর্থতা

মহুয়া (Mahua) তার বার্তায় স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিয়েছিল, যার মধ্যে ছিল ইন্দুস জলচুক্তি স্থগিত করা, অটারি সীমান্ত বন্ধ করা এবং পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল করা। প্রধানমন্ত্রী মোদী হামলার পেছনে পাকিস্তানের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেন এবং জঙ্গিদের “পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত” ধাওয়া করে শাস্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

তবে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে ভারত প্রত্যাশিত সমর্থন পায়নি। কোনো বড় দেশ পাকিস্তানকে সরাসরি দায়ী করেনি বা নিন্দা জানায়নি। এমনকি ভারতের ঘনিষ্ঠ দেশগুলিও পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার প্রেক্ষিতে ভারতের পাশে দাঁড়ায়নি। এই কূটনৈতিক ব্যর্থতা ভারতের বিদেশ নীতির দুর্বলতাকে স্পষ্ট করে তুলেছে।

মোদীর বিশ্বভ্রমণ এবং করদাতার অর্থ

গত এক দশকে প্রধানমন্ত্রী মোদী ৭০টিরও বেশি দেশ সফর করেছেন, যার মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং অন্যান্য দেশে একাধিকবার সফর রয়েছে। এই সফরগুলি ভারতের “উদীয়মান শক্তি” হিসেবে ইমেজ তৈরি এবং বিশ্ব মঞ্চে প্রভাব বিস্তারের জন্য পরিচালিত হয়েছে। তবে, এই সফরগুলির খরচ করদাতাদের অর্থ থেকে মেটানো হয়, যা বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।

মহুয়া (Mahua) প্রশ্ন তুলছেন, এই বিশাল ব্যয় কি সত্যিই ভারতের জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় কার্যকর ফল দিয়েছে? পহেলগাঁও হামলার পর ভারতের একাকী অবস্থান ইঙ্গিত দেয় যে মোদীর এই বিশ্বভ্রমণ ভারতকে আন্তর্জাতিক সমর্থন জোগাড়ে সফল করতে পারেনি।

আন্তর্জাতিক সমর্থনের অভাব

পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর ভারত সাতটি কূটনৈতিক প্রতিনিধি দল ৩২টি দেশে পাঠিয়েছিল, যাতে হামলার পেছনে পাকিস্তানের ভূমিকা এবং ভারতের সামরিক পদক্ষেপ ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর ন্যায্যতা তুলে ধরা যায়। (Mahua) কিন্তু কোনো দেশ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরাসরি নিন্দা জানায়নি। এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ইসরায়েল, এবং জাপানের মতো ভারতের কৌশলগত মিত্ররাও শুধুমাত্র হামলার নিন্দা করেছে, পাকিস্তানকে দায়ী করেনি।

এই ঘটনা ভারতের কূটনৈতিক ব্যর্থতার প্রমাণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এক্স-এর পোস্টে কেউ কেউ দাবি করেছেন, পহেলগাঁও হামলার পর পাকিস্তান আইএমএফ এবং এডিবি থেকে আর্থিক সাহায্য পেয়েছে, এমনকি রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্সিও পেয়েছে, যা ভারতের বিদেশ নীতির ব্যর্থতাকে আরও স্পষ্ট করে।মোদীর কূটনৈতিক কৌশলের সমালোচনা

Advertisements

মহুয়ার মতে, (Mahua) মোদীর বিদেশ ভ্রমণ ব্যক্তিগত ইমেজ তৈরি এবং জনসংযোগের উপর বেশি কেন্দ্রীভূত। তাঁর সফরগুলি ভারতের “উত্থানের গল্প” তুলে ধরলেও, সংকটের সময়ে আন্তর্জাতিক সমর্থন জোগাড়ে ব্যর্থ হয়েছে।

পহেলগাঁও কাণ্ডের পর ভারতের একাকী অবস্থান এই দাবির প্রমাণ। বিশ্লেষকরা বলছেন, মোদী এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের ঘন ঘন আন্তর্জাতিক সফর এবং সম্মেলনে অংশগ্রহণ সত্ত্বেও, ভারত পাকিস্তানকে বিশ্ব মঞ্চে বিচ্ছিন্ন করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতা ভারতের বিশ্ব শক্তি হিসেবে উত্থানের দাবিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

অভ্যন্তরীণ প্রভাব এবং জনমত

পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও এর প্রভাব পড়েছে। বিজেপি হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে জনগণের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে তাদের “কঠোর নিরাপত্তা” ইমেজকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করেছে।

তবে, বিরোধী দলগুলি, (Mahua) বিশেষ করে কংগ্রেস, মোদীর বিদেশ নীতির সমালোচনা করে বলেছে, ২৬/১১ হামলার পর কংগ্রেস সরকার পাকিস্তানকে বিশ্ব মঞ্চে বিচ্ছিন্ন করতে সক্ষম হয়েছিল, কিন্তু পহেলগাঁও হামলার পর ভারত নিজেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এই সমালোচনা জনগণের মধ্যে মোদীর নেতৃত্বের উপর প্রশ্ন তুলেছে।

চিন-পাকের ঘুম ভাঙাতে আসছে ‘LORA মিসাইল’, ৪০০ কিমি দূর থেকে শত্রুকে ধ্বংস করবে বায়ুসেনা

ভবিষ্যৎ পথ

পহেলগাঁও হামলার পর ভারতের কূটনৈতিক ব্যর্থতা এবং মোদীর বিশ্বভ্রমণের কার্যকারিতা নিয়ে এবার সরাসরি আক্রমণ মহুয়ার। এবং স্পষ্টতই করদাতাদের অর্থে পরিচালিত এই সফরগুলি যদি ভারতের জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় ব্যর্থ হয়, তবে তা দেশের জনগণের প্রতি অবিচার। আগামী দিনে ভারতের বিদেশ নীতি কীভাবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে।