কলকাতা: দক্ষিণ কলকাতার কসবা এলাকায় একটি আইন কলেজের ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতি। শনিবার দুপুরে গড়িয়াহাট মোড়ে ওই ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে নামে বিজেপি। কর্মসূচিকে ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনা ছাড়িয়ে পৌঁছায় আইনশৃঙ্খলার জটিলতায়। অভিযোগ, পুলিশ ওই বিক্ষোভে বাধা দিলে ধাক্কাধাক্কির পরিস্থিতি তৈরি হয়। এরপর বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারসহ কয়েকজন নেতাকর্মীকে আটক করে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়।
পুলিশ মোতায়েন
বিক্ষোভ শুরুর আগে থেকেই গড়িয়াহাট মোড়ে পুলিশি মোতায়েন ছিল। পুলিশের দাবি, বিজেপির কর্মীরা ব্যারিকেড ভেঙে সামনে এগোনোর চেষ্টা করলে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে, বিজেপির তরফে অভিযোগ, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অকারণে বাধা দেওয়া হয় এবং নেতৃত্বকে ‘অবাঞ্ছিতভাবে’ আটক করা হয়।
ঘটনার জেরে গড়িয়াহাট এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় কয়েক ঘণ্টা ব্যাপী যানজট তৈরি হয়। অফিসফেরত কর্মী ও স্কুলপড়ুয়া সহ সাধারণ মানুষ ব্যাপক ভোগান্তির সম্মুখীন হন।
সুকান্তর বক্তব্য Kolkata Gang Rape Protest
ঘটনাস্থল থেকে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “আমরা থানায় হামলা করতে যাইনি, শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলাম। পুলিশ বেআইনিভাবে বাধা দিয়েছে। রাজ্য সরকার ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ নিয়েও নিঃশব্দ। তৃণমূলের নেতাদের নাম জড়িত থাকলেও প্রশাসন পদক্ষেপ নিচ্ছে না।”
প্রসঙ্গত, কসবার একটি আইন কলেজে এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে তিনজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই ধৃতদের সঙ্গে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠনের সম্পর্ক রয়েছে বলে দাবি করেছে বিজেপি এবং এবিভিপি। এবিভিপির তরফে দাবি করা হয়েছে, মূল অভিযুক্ত দক্ষিণ কলকাতা জেলা টিএমসিপি-র পদাধিকারী।
তীব্র প্রতিক্রিয়া শুভেন্দুর
ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এক টুইট বার্তায় তিনি লেখেন, “মমতার আমলে নারী সুরক্ষা শুধু বিপন্ন নয়, অগ্রাহ্য। কসবার ঘটনায় স্পষ্ট—পুলিশ ও প্রশাসন শাসকদলের ছত্রছায়ায় অপরাধীদের আড়াল করছে।”
তিনি এ-ও দাবি করেন যে, রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তারা যখন মুখ্যমন্ত্রীর সফরে দিঘায় ব্যস্ত, তখন কলকাতার এক কলেজে একটি মেয়ে ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। “এটাই বর্তমান শাসনব্যবস্থার প্রতিচ্ছবি,” মন্তব্য শুভেন্দুর।
শুক্রবারও কসবা থানার সামনে বিজেপি ও কংগ্রেস যৌথভাবে বিক্ষোভ দেখায়। সেখানে পথ অবরোধ ও স্লোগানের মধ্যে দিয়ে অভিযুক্তদের দ্রুত বিচার ও শাস্তির দাবি ওঠে। তখনও পুলিশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে আটক করেছিল।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক তীব্রতা আরও বাড়বে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত ধর্ষণ মামলা ও রাজনৈতিক যোগসূত্র নিয়ে বিস্তারিত কোনো মন্তব্য আসেনি।