গণধর্ষণ কাণ্ডে নয়া মোড়, নির্যাতিতাকে টেনে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য ধরা পড়ল CCTV-তে

কলকাতা: কসবা আইন কলেজ (Kasba Law College) গণধর্ষণ কাণ্ডে এবার নতুন মোড়। শুক্রবার রাত থেকেই তদন্তে গতি আনতে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ…

গণধর্ষণ কাণ্ডে নয়া মোড়, নির্যাতিতাকে টেনে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য ধরা পড়ল CCTV-তে

কলকাতা: কসবা আইন কলেজ (Kasba Law College) গণধর্ষণ কাণ্ডে এবার নতুন মোড়। শুক্রবার রাত থেকেই তদন্তে গতি আনতে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ নমুনা সংগ্রহ করল ফরেন্সিক টিম। পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে তদন্তে নামে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা।

সূত্রের খবর, নির্যাতিতা তরুণীর অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় তদন্তকারী দল। কলেজের (Kasba Law College) বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়। সেখান থেকেই উদ্ধার হয় একাধিক প্রমাণ। বিশেষ করে কলেজের একটি ঘর থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে একটি হকিস্টিক। কেন এই হকিস্টিক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, তা নিয়ে তদন্তকারীরা এখনই মুখ খুলতে নারাজ।

   

এছাড়া কলেজের (Kasba Law College) কমন রুম থেকেও গুরুত্বপূর্ণ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেখানে রক্তের দাগ মিলেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। অভিযোগ, কমন রুমেই ঘটনার আগে মারধরের শিকার হয়েছিলেন নির্যাতিতা। তাই সেই স্থান থেকেই রক্তের নমুনা ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

ঘটনাস্থল হিসাবে চিহ্নিত গার্ড রুম থেকেও নমুনা সংগ্রহ করেছেন ফরেন্সিক টিম। জানা গিয়েছে, সমস্ত নমুনা শনিবার ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানো হবে বিশ্লেষণের জন্য।

শুধু তাই নয়, তদন্তের স্বার্থে কলেজের (Kasba Law College) সিসিটিভি ফুটেজও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের ক্যাম্পাসে অন্তত পাঁচ থেকে ছয়টি সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। সেখানকার হার্ডডিস্ক ইতিমধ্যেই জব্দ করা হয়েছে। তদন্তকারীদের আশা, ওই ফুটেজে ঘটনার সময়ের চলাফেরা স্পষ্ট ধরা পড়বে।

পুলিশের এক সূত্র জানিয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে যে অভিযুক্তরা অভিযোগকারিণীকে জোর করে টেনে নিয়ে যাচ্ছে কলেজের ভিতরেই। এই ফুটেজ তদন্তে বড় ভূমিকা নিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

এদিকে, আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ সংগ্রহে নেমেছে পুলিশ। অভিযোগ, ঘটনার পর নির্যাতিতা তরুণীর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তখন তাঁকে ইনহেলার এনে দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি। সেই ইনহেলার কোন দোকান থেকে কেনা হয়েছিল, তা জানার জন্য ওই দোকানের সিসিটিভিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।

Advertisements

নির্যাতিতা তরুণী পুলিশের কাছে দেওয়া অভিযোগপত্রে জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ছাত্রের বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার কারণেই তাঁকে গার্ড রুমে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তাঁর আরও অভিযোগ, আগেও তাঁকে হেনস্তা করা হয়েছিল।

এই মামলায় এখনও পর্যন্ত মোট চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্তরা প্রত্যেকেই কলেজের ছাত্র এবং টিএমসিপি নেতার পরিচয় রয়েছে তাদের মধ্যে।

রাজ্য জুড়ে এই ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া ছড়িয়েছে। শিক্ষা দফতর ইতিমধ্যেই রিপোর্ট তলব করেছে। কলেজ প্রশাসনও চাপের মুখে।

এখন তদন্তের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে সবাই। ফরেন্সিক রিপোর্ট এবং সিসিটিভি ফুটেজ হাতে আসার পর তদন্তে বড় অগ্রগতি হতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

তবে এই ঘটনার পর রাজ্য জুড়ে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্কের পরিবেশ। কলেজ ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নের ঝড় উঠেছে। সরকারি স্তরে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন সকলেই।