কলকাতা: দক্ষিণ কলকাতা ল’ কলেজে প্রথম বর্ষের ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় আরও এক ধাপ এগোল তদন্ত। শুক্রবার কলেজের নিরাপত্তা রক্ষী পিনাকি বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। মূল অভিযুক্ত তৃণমূল কংগ্রেসের এক নেতা-সহ এর আগেই তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পিনাকি বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতারের পর এই মামলায় মোট গ্রেফতারের সংখ্যা দাঁড়ালো চার।
ছাত্রীর ওপর ঘণ্টার পর ঘণ্টা নির্যাতন
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৫ জুন কলেজ প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা রক্ষীর ঘরেই ২৪ বছর বয়সী ছাত্রীর ওপর ঘণ্টার পর ঘণ্টা নির্যাতন চালানো হয়। ঘটনার সময় কলেজের প্রধান গেট বন্ধ ছিল এবং নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও পিনাকি কোনও হস্তক্ষেপ করেননি। নির্যাতিতার অভিযোগ, এই ঘটনার সময় পিনাকি গেটের বাইরেই বসে ছিলেন৷ সাহায্যের জন্য তার কাছে বহুবার আকুতি জানিয়েও কোনও সাড়া পাননি।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ পেয়েছে, পিনাকি বন্দ্যোপাধ্যায় মূল অভিযুক্তের নির্দেশে নিরাপত্তা রুম ত্যাগ করেন এবং নির্যাতিতাকে একা ফেলে দেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ স্পষ্ট৷ এমনকী অপরাধের কথা কর্তৃপক্ষ কিংবা পুলিশের কাছেও তিনি জানাননি। সই কারণেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অভিযুক্ত কলেজের প্রাক্তন ছাত্র law college security guard arrested
মূল অভিযুক্ত কলেজের প্রাক্তন ছাত্র এবং বর্তমানে একজন প্র্যাকটিসিং আইনজীবী। অভিযোগ রয়েছে, ধর্ষণের সময় তিনি নির্যাতিতার উপর যৌন নিপীড়ন করেছেন, আর দুটি কলেজ ছাত্র এই বর্বর ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন।
এই নৃশংস ঘটনায় পুরো শহর অস্থির। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার দাবি করছেন। কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, বাকি অভিযুক্তদের ধরার জন্য তারা তদন্ত অব্যাহত রেখেছে এবং প্রয়োজনীয় সব আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা জানান, “আমরা এই ঘটনায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার। অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ও তৎপর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ যেন এমন নিষ্ঠুরতার শিকার না হয়, সেই জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”