যাত্রীদের যাত্রা অভিজ্ঞতা আরও স্বচ্ছ ও সুশৃঙ্খল করতে বড় পদক্ষেপ নিল ভারতীয় রেল। ওভারবুকিং এবং কোচে অযাচিত ভিড় রুখতে এবার থেকে ট্রেনের মোট আসনের ২৫ শতাংশের বেশি ওয়েটিং লিস্টেড টিকিট ইস্যু করা যাবে না বলে জানাল রেল মন্ত্রক।
১,০০০ আসনে ২৫০ ওয়েটিং টিকিট
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এসি ফার্স্ট, এসি সেকেন্ড, এসি থার্ড, স্লিপার এবং চেয়ার কার, সব ধরনের শ্রেণির ক্ষেত্রেই এই সীমা বলবৎ হবে। অর্থাৎ, কোনও ট্রেনে যদি ১,০০০টি আসন থাকে, তাহলে সর্বোচ্চ ২৫০টি ওয়েটিং টিকিট ইস্যু করা যাবে। এর বেশি নয়।
রেল বোর্ড সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই দেশের বিভিন্ন জোনাল রেলওয়েকে এই নিয়ম কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজধানী, শতাব্দী, দুরন্ত, মেল/এক্সপ্রেস ও সুপারফাস্ট—সব ট্রেনেই এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।
যাত্রীদের দুশ্চিন্তা কমাতে রেলের নয়া নীতি Train ticket new waiting list rule
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদন অনুসারে, চার্ট তৈরি হওয়ার আগেই সাধারণত ২০ থেকে ২৫ শতাংশ ওয়েটিং টিকিট কনফার্ম হয়ে যায়। সেই পরিসংখ্যানের ভিত্তিতেই রেল এবার সীমা বেঁধে দিল।
রেল মন্ত্রকের মতে, এই সিদ্ধান্তের ফলে যাত্রীরা শুরু থেকেই বুঝতে পারবেন তাঁদের টিকিট নিশ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা কতটা। সেই সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় বুকিং, হয়রানি এবং কোচে বিশৃঙ্খলার সুযোগ অনেকটাই কমবে।
আগে কী ছিল নিয়ম?
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে রেল বোর্ডের নির্দেশিকা অনুযায়ী এসি ফার্স্ট ক্লাসে সর্বোচ্চ ৩০টি, এসি সেকেন্ডে ১০০টি, এসি থার্ডে ৩০০টি এবং স্লিপার ক্লাসে ৪০০টি করে ওয়েটিং টিকিট ইস্যু করা যেত। ফলে অনেক যাত্রী শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দুশ্চিন্তায় থাকতেন টিকিট কনফার্ম হবে কি না তা নিয়ে।
রেলের এক শীর্ষকর্তা বলেন, “ওয়েটিং টিকিটের সংখ্যা বেশি হওয়ায় অনেক যাত্রীই কনফার্ম টিকিট ছাড়াই সংরক্ষিত কোচে উঠে পড়তেন। এতে যাত্রীদের অসুবিধা, নিরাপত্তা সমস্যা ও বিশৃঙ্খলা সবই বেড়ে যেত। এবার তা অনেকটাই কমবে বলে আশা করছি।”
বিশেষ সুবিধা সংরক্ষিত থাকবে
এই পরিবর্তনের মধ্যেও বিশেষ শ্রেণির যাত্রীদের জন্য (যেমন: প্রবীণ নাগরিক, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও মহিলারা) সংরক্ষিত কোটাগুলি বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে রেল মন্ত্রক। নতুন নীতির ফলে বুকিং ব্যবস্থা আরও স্বচ্ছ ও বাস্তবসম্মত হবে বলেই মনে করছেন আধিকারিকরা।