তাজিকিস্তানে (Tajikistan) পা রেখেছে ভারতের অনূর্ধ্ব-২৩ পুরুষ ফুটবল দল (Indian Football Team U23)। কোচ নৌসাদ মুসার (Naushad Moosa) নেতৃত্বাধীন ব্লু কোল্টসরা দুটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলবে তাজিকিস্তান ও কিরগিজ প্রজাতন্ত্রের বিপক্ষে। প্রথম ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে বুধবার, ১৮ জুন ভারতীয় সময় রাত ৮:৩০টায়।
ভারতীয় দল ১ জুন থেকে কলকাতায় প্রস্তুতি শিবিরে ছিল এবং সেখান থেকেই সোমবার সন্ধ্যায় তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবেতে পৌঁছায়। মঙ্গলবার সকালে হালকা মোবিলিটি সেশন এবং সন্ধ্যায় ৯০ মিনিটের অনুশীলন সেশনের মধ্য দিয়ে মূল ম্যাচের প্রস্তুতি শুরু করেছে দল।
এই দুটি ম্যাচ আগামী সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য এএএফসি অনূর্ধ্ব-২৩ এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ারের প্রস্তুতির অংশ। সেখানে ভারতকে গ্রুপ পর্বে মুখোমুখি হতে হবে বাহরাইন, কাতার ও ব্রুনেই মতো প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে। এই টুর্নামেন্টে যোগ্যতা অর্জন করাই মূল লক্ষ্য, যা ভারতীয় অনূর্ধ্ব-২৩ দলের ইতিহাসে প্রথমবার হতে পারে।
দলের কোচ নৌসাদ মুসা এই দলে দ্বিতীয়বারের মতো দায়িত্ব পালন করছেন। গত বছর তিনি মালয়েশিয়ার বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচে দলের দায়িত্বে ছিলেন। তার মতে, এই ধরণের আন্তর্জাতিক ম্যাচ তরুণ ফুটবলারদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা।
IFA উদ্যোগে কলকাতায় রেফারি অ্যাসেসরদের দুদিনের সেমিনার
মুসা বলেন, “বাচ্চারা খুব উদ্দীপ্ত। আমি তাদের বোঝাচ্ছি, এই ম্যাচগুলো কতটা গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য। প্রতিপক্ষ যেমনই হোক, আমাদের আমাদের কাজ ঠিকভাবে করতে হবে।”
হিশোর সেন্ট্রাল স্টেডিয়ামের কৃত্রিম টার্ফে খেলা এবং দুশানবের প্রায় ৭০০ মিটার উচ্চতার কারণে কিছুটা পরিবেশগত পরিবর্তনের মুখে পড়তে হবে ভারতীয় দলকে। উপরন্তু, এখানকার তাপমাত্রা দিনে প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছায়, যা শারীরিকভাবে একটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে।
“আবহাওয়া গরম, তবে এটা আমাদের জন্য অস্বাভাবিক কিছু না। কলকাতাতেও এরকম থাকে। স্টেডিয়ামে সমর্থকদের উপস্থিতি আমাদের খেলোয়াড়দের বাড়তি অনুপ্রেরণা দেবে। অনেকেই এখানে প্রথমবার খেলতে এসেছে, তাদের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ,” বললেন ৫৩ বছর বয়সী মুসা।
হিশোর স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা ২০,০০০ এবং আগেও ভারতীয় সিনিয়র দলের ম্যাচে বিপুল সংখ্যক ভারতীয় দর্শক উপস্থিত ছিলেন বলে জানান কোচ। তিনি আশা করছেন, এবারও একই রকম সমর্থন পাবে দলটি।
তাজিকিস্তানের অনূর্ধ্ব-২৩ দল তাদের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিল ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে, যেখানে তারা সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুটি ম্যাচেই ০-৩ ব্যবধানে হেরেছিল। ২০২৪ সালের এশিয়ান কাপে তারা গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয়, ইরাক ও সৌদি আরবের কাছে হেরে এবং থাইল্যান্ডকে হারিয়ে।
তবে যুব ফুটবলে প্রতিটি বছরেই দলে পরিবর্তন আসে। তাই প্রতিপক্ষের আগের পারফরম্যান্স খুব একটা প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করছেন মুসা। “তাজিকিস্তান গতবার অনূর্ধ্ব-২৩ এশিয়ান কাপে খেলেছে এবং তাদের সিনিয়র দলও ভালো করেছে। যদিও কাল যারা খেলবে তারা অনেকেই নতুন, কিন্তু তারা একটা শক্তিশালী দলই হবে,” বলেন তিনি।
দলের পরবর্তী ম্যাচ কিরগিজ প্রজাতন্ত্রের বিপক্ষে, ২১ জুন অনুষ্ঠিত হবে। এই ম্যাচগুলোর মাধ্যমে তরুণ ভারতীয় ফুটবলাররা আন্তর্জাতিক স্তরে নিজেদের যাচাই করে নেওয়ার দারুণ সুযোগ পাচ্ছে। প্রস্তুতি, পারফরম্যান্স এবং মানসিক দৃঢ়তা – সব মিলিয়ে এই সফর হতে চলেছে ভবিষ্যতের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
