রূপানির পরিবারের সাথে দেখা করে শোক জ্ঞাপন প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী (pm) নরেন্দ্র মোদী আজ শুক্রবার গুজরাটের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানির পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। রূপানি আমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট এআই ১৭১-এর ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন, যাতে মোট ২৪১ জন যাত্রী ও ক্রু সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। বিজেপি নেতা বিজয় রূপানির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, তিনি ছিলেন একজন নম্র, পরিশ্রমী এবং দলের আদর্শের প্রতি দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ব্যক্তি।

এক্স-এ একটি পোস্টে মোদী লেখেন (pm)

এক্স-এ একটি পোস্টে মোদী (pm) লেখেন, “শ্রী বিজয়ভাই রূপানি জির পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছি। এটা কল্পনা করা যায় না যে বিজয়ভাই আমাদের মাঝে আর নেই। আমি তাঁকে কয়েক দশক ধরে চিনতাম। আমরা একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছি, এমনকি সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং সময়েও।

বিজয়ভাই ছিলেন নম্র এবং পরিশ্রমী, দলের আদর্শের প্রতি দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” তিনি আরও বলেন, “দঙ্গলের মধ্যে উঠে এসে তিনি বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন এবং গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছেন।”

প্রধানমন্ত্রী (pm) রূপানির বিভিন্ন পদে অবদানের প্রশংসা করে বলেন, “তিনি রাজকোট মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনে, রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে, গুজরাট বিজেপি সভাপতি এবং রাজ্য সরকারের মন্ত্রী হিসেবে প্রতিটি ভূমিকায় নিজেকে বিশিষ্ট করেছেন।” মোদী আরও বলেন, “বিজয়ভাইয়ের সঙ্গে আমি যখন তিনি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তখন ব্যাপকভাবে কাজ করেছি।

তিনি গুজরাটের উন্নয়নের গতিপথ ত্বরান্বিত করেছেন, বিশেষ করে ‘ইজ অফ লিভিং’ বাড়ানোর ক্ষেত্রে অনেক উদ্যোগ নিয়েছেন। আমাদের মধ্যে হওয়া আলোচনাগুলি আমি সবসময় মনে রাখব। এই শোকের মুহূর্তে আমার চিন্তা তাঁর পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে রয়েছে। ওম শান্তি।”

দুর্ঘটনার বিবরণ

বৃহস্পতিবার, ১২ জুন, আমেদাবাদের সরদার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের উদ্দেশে টেকঅফ করা এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ফ্লাইট এআই ১৭১ মাত্র পাঁচ মিনিট পর মেঘানিনগরে বিজে মেডিকেল কলেজের হোস্টেলে আছড়ে পড়ে। বিমানে ১২ জন ক্রু সদস্য-সহ মোট ২৪২ জন ছিলেন।

শুক্রবার মধ্যরাতে এয়ার ইন্ডিয়া নিশ্চিত করে যে ২৪১ জন প্রাণ হারিয়েছেন। অলৌকিকভাবে একমাত্র জীবিত ব্যক্তি হলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক বিশ্বাস কুমার রমেশ। তিনি বলেন, “আমি সিটবেল্ট খুলে বিমান থেকে বেরিয়ে আসি। চারপাশে শুধু মৃতদেহ ছিল। আমার বাঁ হাত পুড়ে যায়।”

পরিবার ও প্রতিবেশীদের শোক

বিজয় রূপানির স্ত্রী অঞ্জলি রূপানি শুক্রবার আমেদাবাদে পৌঁছান। গুজরাটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংঘভি তাঁকে গ্রহণ করেন। রূপানির অন্যান্য পরিবারের সদস্যরাও বৃহস্পতিবার আমেদাবাদ সিভিল হাসপাতালে, আসরওয়ায় পৌঁছান। রূপানির প্রতিবেশী কিরণবেন হৃদয়বিদারকভাবে বলেন, “এখনও মনে হয় তিনি আমাদের মাঝে আছেন। গতকাল থেকে আমি কিছু বলতে পারিনি। তাঁর স্মৃতি চিরকাল আমাদের সঙ্গে থাকবে। আমরা সব উৎসব একসঙ্গে পালন করতাম। এটা বিশ্বাস করা কঠিন।”

রূপানির প্রতিবেশী ও পারিবারিক চিকিৎসক ডা. নয়ন শাহ বলেন (pm), “আমরা ৩৫ বছর ধরে প্রতিবেশী। তাঁর স্মৃতি চিরকাল আমাদের সঙ্গে থাকবে। ভালো-মন্দ সময়ে আমরা একসঙ্গে ছিলাম। সব উৎসব একসঙ্গে পালন করতাম। এটা বিশ্বাস করা খুব কঠিন, কিন্তু আমাদের তাঁর স্মৃতি নিয়ে বাঁচতে হবে।”

উদ্ধার ও তদন্ত

দুর্ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দা, ফায়ার ব্রিগেড, এনডিআরএফ এবং সিআরপিএফ-এর দল উদ্ধার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে। কেন্দ্রীয় বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী (pm) রাম মোহন নায়ডু কিনজারপু বিমানে রূপানির উপস্থিতি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, “ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ জানতে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত হবে।” অনেক মৃতদেহ পুড়ে অচেনা হয়ে গেছে, তাই ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্তকরণ করা হবে।

চার বছর পর ফের ভারত-চিন ‘এয়ার কানেক্ট’, মিলল সবুজ সংকেত

ক্ষতিপূরণ ও সমবেদনা

টাটা গ্রুপ ১ কোটি টাকা এবং এয়ার ইন্ডিয়া মন্ট্রিল কনভেনশন অনুযায়ী ১.৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী (pm) দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং আহত বিশ্বাস কুমারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি সহ বিশ্বনেতারা শোক প্রকাশ করেছেন। গুজরাট বিজেপি সভাপতি সিআর পাটিল বলেন, “বিজয় রূপানির মৃত্যু আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।”

এই দুর্ঘটনা ভারতের বিমান চলাচলের ইতিহাসে একটি মর্মান্তিক ঘটনা। বিজয় রূপানির মতো বিশিষ্ট নেতার মৃত্যু গুজরাট এবং বিজেপির জন্য বড় ধাক্কা। প্রধানমন্ত্রী মোদীর (pm) শ্রদ্ধাঞ্জলি এবং তদন্তের প্রতিশ্রুতি শোকাহত পরিবারগুলির জন্য সান্ত্বনার আশা জাগিয়েছে। আমরা প্রার্থনা করি, নিহতদের আত্মা শান্তি লাভ করুক।