আমেদাবাদ: আহমেদাবাদে ঘটে যাওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় ২৬৫ জনের মৃত্যু হলেও অলৌকিকভাবে বেঁচে গিয়েছেন একজন যাত্রী৷ নাম-বিশ্বাস কুমার রমেশ, এক ব্রিটিশ নাগরিক। বিস্ফোরণের আগুন থেকে কেবলমাত্র তাঁর আসনটি ছিটকে গিয়ে বিমানের ধ্বংসস্তূপ থেকে দূরে পড়েছিল বলেই প্রাণে বেঁচে যান তিনি।
দুর্ঘটনার পরে তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় আহত ও অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় আহমেদাবাদ সিভিল হাসপাতালে। বর্তমানে তিনি ট্রমা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন এবং পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।
“বিমানটা ভেঙে গেল, আমার সিটটা আলাদা হয়ে গেল”
রমেশের বিস্ময়কর অভিজ্ঞতার কথা হাসপাতালে চিকিৎসকদের বলেন৷ তিনি বলেন, “বিমানটা হঠাৎ করে ভেঙে গেল, আর আমার সিটটা পুরোপুরি আলাদা হয়ে যায়। তাই আগুনের মুখে পড়িনি। আমি লাফ দিইনি, আমাকে ছিটকে ফেলে দেয় সেই বিস্ফোরণ।”
বিমানের বাম দিকের এমারজেন্সি দরজার পাশে ১১A নম্বর সিটে বসেছিলেন রমেশ। বিমানের কাঠামো ভেঙে যাওয়ার পর সেই অংশটি ছিটকে গিয়ে মূল ধ্বংসের কেন্দ্র থেকে দূরে পড়ে যায়। ফলে আগুনের শিকার হননি তিনি। একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, রক্তাক্ত ও ক্লান্ত রমেশকে অ্যাম্বুলেন্সের দিকে লুটিয়ে হেঁটে যেতে, আর চারপাশের মানুষ তাঁকে প্রশ্নবানে জর্জরিত করছেন-বাকি যাত্রীরা কোথায়? কেউ বেঁচেছেন কি না?
মাত্র ৬০০-৮০০ ফুট উঁচুতে উঠেই ভেঙে পড়ে বিমান Sole Survivor Plane Crash India
১১ বছর পুরনো বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমানটি আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল। তবে উড়ানের মাত্র ৫ মিনিটের মাথায়, দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে বিমানটি ভেঙে পড়ে বিজে মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলের উপর। বিমানটিতে ছিল মোট ২৩০ জন যাত্রী ও ১২ জন ক্রু।
এয়ার ইন্ডিয়া সূত্রে জানা গিয়েছে, যাত্রীদের মধ্যে ১৬৯ জন ছিলেন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ নাগরিক, ৭ জন পর্তুগিজ ও ১ জন কানাডীয়ান। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন গুজরাট মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানি-ও।
মে’ডে কল পাঠিয়েছিলেন পাইলট, কিন্তু আর কিছুই করার ছিল না
টেক-অফের কিছু পরেই পাইলট এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলকে (ATC) ‘Mayday’ সংকেত পাঠিয়েছিলেন, যা সম্পূর্ণ জরুরি পরিস্থিতির ইঙ্গিত দেয়। তবে তার কিছু সময়ের মধ্যেই, বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিমানটি আকাশে ঘোরার সময়ই হঠাৎ আগুন ধরে যায়। মাত্র ৬০০-৮০০ ফুট উচ্চতায় উঠে সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নীচে পড়ে যায়।
তদন্ত চলছে, খোঁজা হচ্ছে ব্ল্যাক বক্স
এই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার পেছনে কী কারণ ছিল, তা জানতে শুরু হয়েছে ফর্মাল ইনভেস্টিগেশন। তল্লাশি চলছে বিমানটির ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার এবং ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (ব্ল্যাক বক্স) খুঁজে পাওয়ার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে ধরা পড়বে শেষ মুহূর্তে কী বলছিলেন পাইলটরা, যন্ত্রপাতি ঠিকঠাক কাজ করছিল কি না এবং কীভাবে ভেঙে পড়ল একটি এত উন্নত প্রযুক্তির বিমান।