অয়ন দে, কোচবিহার: কোচবিহারের স্টেশন মোড়ে নবনির্মিত হনুমান মন্দিরের (Hanuman temple Cooch Behar) উদ্বোধন হতে চলেছে আগামী মঙ্গলবার, ১০ জুন। এই মন্দিরটি স্থানীয়দের ধর্মীয় আবেগ এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িত একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক এই মন্দির নির্মাণের কাজে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করেছেন, যা এলাকাবাসীদের মধ্যে উৎসাহ ও আনন্দের সঞ্চার করেছে। মন্দিরের উদ্বোধন উপলক্ষে বিশেষ পুজো, যজ্ঞানুষ্ঠান এবং প্রসাদ বিতরণের আয়োজন করা হয়েছে, যা ভক্ত ও নিত্যযাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করেছে।
জানা গেছে, স্টেশন মোড়ে পঞ্চবটি বট গাছের নীচে একসময় একটি হনুমান মন্দির ছিল। রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য সেই মন্দিরটি অস্থায়ীভাবে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। এরপর স্থানীয় উদ্যোক্তারা নতুন করে এই মন্দির নির্মাণের উদ্যোগ নেন। নির্মাণকাজের শেষ পর্যায়ে কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বিভিন্ন দিক থেকে সহযোগিতা করেছেন। তাঁর এই অবদান মন্দিরের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
রবিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে অভিজিৎ দে ভৌমিক মন্দিরের উদ্বোধন এবং এর সঙ্গে যুক্ত অনুষ্ঠানের বিষয়ে বিস্তারিত জানান। তিনি বলেন, “এই মন্দির কোচবিহারের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমরা চাই সকলেই এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এই আনন্দের মুহূর্তের সাক্ষী হন।” তিনি সকলকে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় শুরু হতে যাওয়া পুজো ও যজ্ঞানুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানান। এই দিন বিশেষ প্রসাদ বিতরণেরও আয়োজন করা হয়েছে, যা ভক্তদের মধ্যে উৎসাহ আরও বাড়িয়েছে।
নবনির্মিত মন্দিরটি ইতিমধ্যেই স্থানীয়দের মধ্যে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। স্টেশন মোড়ের এই মন্দিরটি তার স্থাপত্য সৌন্দর্য এবং ধর্মীয় তাৎপর্যের জন্য ভক্ত ও নিত্যযাত্রীদের মন জয় করেছে। বাসে ওঠানামার ফাঁকে অনেকেই মন্দিরটি দর্শন করতে যাচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দা রমা দেবী বলেন, “নতুন মন্দিরটি খুব সুন্দর হয়েছে। এখানে এসে মন শান্ত হয়। উদ্বোধনের দিন আমরা সপরিবারে পুজো দিতে আসব।” আরেক নিত্যযাত্রী প্রদীপ সাহা বলেন, “স্টেশন মোড়ে এমন একটি মন্দির তৈরি হওয়ায় আমরা গর্বিত। এটি আমাদের শহরের সৌন্দর্য ও আধ্যাত্মিকতা বাড়িয়েছে।”
মন্দির নির্মাণের উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, এই মন্দিরটি কেবল ধর্মীয় স্থান হিসেবেই নয়, বরং কোচবিহারের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ। মন্দিরটির নকশায় ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যের ছোঁয়া রাখা হয়েছে, যা এটিকে আরও রমণীয় করে তুলেছে। এছাড়া, মন্দিরের আশপাশের এলাকা পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর রাখার জন্যও বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অভিজিৎ দে ভৌমিকের এই উদ্যোগ স্থানীয়দের মধ্যে প্রশংসিত হয়েছে। এক্স-এ একটি পোস্টে বলা হয়েছে, “অভিজিৎ দে ভৌমিকের সহযোগিতায় স্টেশন মোড়ের হনুমান মন্দির নতুন রূপে ফিরে এসেছে। এটি কোচবিহারের জন্য গর্বের বিষয়।” তবে, কিছু বিরোধী মতও শোনা গেছে, যেখানে কেউ কেউ মনে করছেন যে রাজনৈতিক নেতাদের ধর্মীয় কাজে অংশগ্রহণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হতে পারে। তবে, অভিজিৎ দে ভৌমিক জানিয়েছেন, তাঁর এই অংশগ্রহণ কেবলমাত্র সমাজসেবা ও ধর্মীয় আবেগের প্রতি শ্রদ্ধার প্রকাশ।
মন্দিরের উদ্বোধনের দিন ভক্তদের ভিড় হবে বলে আশা করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের জন্য নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। পুজো ও যজ্ঞানুষ্ঠানের মাধ্যমে এই মন্দিরটি কোচবিহারের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক জীবনে একটি নতুন অধ্যায় যোগ করবে। এই মন্দির শুধু ভক্তদের জন্যই নয়, বরং নিত্যযাত্রী ও পর্যটকদের জন্যও একটি নতুন আকর্ষণ হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।