ভারতীয় ক্রিকেটের তারকা রিঙ্কু সিং (Rinku Singh) মাঠের বাইরে এক নতুন অধ্যায় শুরু করলেন। ৮ জুন লখনউয়ের দ্য সেন্ট্রাম হোটেলে সাংসদ প্রিয়া সারোজের সঙ্গে তিনি বাগদান সারলেন। এই ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তাঁদের ঘনিষ্ঠ পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং ক্রিকেট ও রাজনীতির কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব।
অনুষ্ঠানের আগে রিঙ্কু তাঁর পরিবারের সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরে চৌধেরা ওয়ালি বিচিত্রা দেবী মন্দিরে গিয়ে আশীর্বাদ গ্রহণ করেন। বাগদানের দিন রিঙ্কু ও প্রিয়া একসঙ্গে সাদা ও গোলাপি রঙের সমন্বিত পোশাকে ভেন্যুতে পৌঁছান। ফুলক্রাম হলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ফুলের সাজসজ্জা ও আলোকসজ্জার মাধ্যমে এক মুগ্ধকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল। ৩০০ জনেরও বেশি অতিথি ধারণক্ষমতার এই হলে ক্রিকেট ও রাজনীতির বিশিষ্ট মুখের সমাগম ঘটে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন ক্রিকেটার প্রবীণ কুমার, পীযূষ চাওলা এবং উত্তরপ্রদেশ রঞ্জি দলের অধিনায়ক আরিয়ান জুয়াল। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের মধ্যে ছিলেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব, সাংসদ ডিম্পল যাদব, প্রিয়ার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সাংসদ ইকরা হাসান, সমাজবাদী পার্টির বর্ষীয়ান নেতা অধ্যাপক রাম গোপাল যাদব এবং কংগ্রেস নেতা রাজীব শুক্লা।
অনুষ্ঠানটি ছিল জাঁকজমকপূর্ণ। ১২x১৬ ফুটের একটি বিশাল মঞ্চ স্থাপন করা হয়েছিল। অতিথিদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছিল ঐতিহ্যবাহী লখনউয়ের খাবারের এক বিশাল সম্ভার, যার মধ্যে বেশ কিছু খাবার রিঙ্কু ও প্রিয়া নিজেরা বেছে নিয়েছিলেন। অতিথিদের থাকার জন্য সেন্ট্রামে ১৫টি কক্ষ বুক করা হয়েছিল, যার মধ্যে পাঁচটি কক্ষ ছিল রিঙ্কুর ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের জন্য।
নিরাপত্তার দিকটিও ছিল কঠোর। শুধুমাত্র বারকোডযুক্ত পাসধারী অতিথিদেরই প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মীদের পাশাপাশি পুলিশের একটি দল ভিআইপি অতিথিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বক্ষণ সতর্ক ছিল।
ক্রিকেট মাঠে রিঙ্কুর এই বছরের আইপিএল মরশুম ততটা সফল ছিল না। কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে তিনি ২০৬ রান করেন, গড় ২৯.৪২ এবং স্ট্রাইক রেট ১৫৩.৭৩। দলটির পারফরম্যান্সও ছিল হতাশাজনক। ১৪ ম্যাচে মাত্র ৫টি জয় নিয়ে তারা পয়েন্ট তালিকায় অষ্টম স্থানে থেকে মরশুম শেষ করে, নেট রান রেট ছিল -০.৩০৫।
তবে, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে রিঙ্কু ভারতীয় দলের এক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। ৩০টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ২২ ইনিংসে তিনি ৫০৭ রান করেছেন, গড় ৪৬.০৯ এবং স্ট্রাইক রেট ১৬৫.১৪। এর মধ্যে তিনটি অর্ধশতক রয়েছে। ২০২৩ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক করা এই ২৭ বছর বয়সী ক্রিকেটার এখনও তাঁর প্রথম আন্তর্জাতিক শতকের অপেক্ষায়।
রিঙ্কু দুটি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচও খেলেছেন এবং লিস্ট এ ক্রিকেটে তাঁর রেকর্ড দুর্দান্ত। ৫২ ইনিংসে তিনি ১,৮৯৯ রান করেছেন, গড় ৪৮.৬৯ এবং স্ট্রাইক রেট ৯৪.৮।
মাঠের পারফরম্যান্স যাই হোক, রিঙ্কুর ব্যক্তিগত জীবনের এই নতুন অধ্যায় তাঁর ভক্তদের মনে আনন্দের সঞ্চার করেছে। তাঁর এই বাগদান অনুষ্ঠান ক্রিকেট ও রাজনীতির এক অনন্য মিলনের সাক্ষী হয়ে থাকল। সামনের দিনগুলোতে রিঙ্কু ও প্রিয়ার জীবন আরও সুখ ও সমৃদ্নিময় হোক, এই কামনা সকলের।