১৬ বছর পর হংকংয়ে ইতিহাস বদলাতে মরিয়া সুনীলরা, গাওলি উসকে দিলেন পুরনো স্মৃতি

১৬ বছর পর আবার হংকংয়ের (Hong Kong) মাটিতে পা রাখল ভারতের সিনিয়র পুরুষ ফুটবল দল (Indian Football Team)। ২০০৯ সালে বন্ধুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলতে এসেছিল তারা,…

Indian Football Team to play in Hong Kong after 16 years

১৬ বছর পর আবার হংকংয়ের (Hong Kong) মাটিতে পা রাখল ভারতের সিনিয়র পুরুষ ফুটবল দল (Indian Football Team)। ২০০৯ সালে বন্ধুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলতে এসেছিল তারা, কিন্তু এবার তাদের মিশন আরও বড়। ২০২৭ এএএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের (AFC Asian Cup 2027 qualifier) গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ, যা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১০ জুন, ২০২৫।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ব্যাংকক থেকে হংকংয়ে পৌঁছেই ভারতের কোচ মানোলো মার্কুয়েজ ও তার সহকারী কোচেরা দলের ব্যস্ত সময়সূচি শুরু করেন। সন্ধ্যা ৬টায় হংকং পৌঁছে তারা সরাসরি সোজা যান সো কন পোতে অবস্থিত হংকং স্টেডিয়ামে, যেখানে স্বাগতিক হংকং দল প্রস্তুতিমূলক ম্যাচে নেপালের মুখোমুখি হয়। ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়। অন্যদিকে ভারতীয় দল, যারা একদিন আগে থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে ০-২ ব্যবধানে হেরেছিল, তারা হংকংয়ে তাদের প্রথম অনুশীলন সেশন শুরু করেছে শুক্রবার।

   

এই দলে একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে রয়েছেন সুনীল ছেত্রী, যিনি এর আগেও হংকংয়ে ভারতের হয়ে খেলেছেন। সহকারী কোচ মহেশ গাওলি স্মরণ করলেন ২০০৯ সালের সেই ম্যাচের কথা, যেটি ভারতের জন্য ছিল এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপ ২০০৮ জয়ের পর প্রথম বিদেশ সফরের অংশ।

গাওলি বলেন, “আমরা তখন ০-১ ব্যবধানে পিছিয়ে ছিলাম। আমি বদলি হিসেবে নেমে ছিলাম লেফট-ব্যাক পজিশনে। মাঝমাঠ থেকে একটি লম্বা বল বাড়াই এবং ভাইচুং ভুটিয়া তা দারুণভাবে শেষ করেন। পরে অবশ্য আমরা ইনজুরি টাইমে এক গোল খেয়ে হেরে যাই।”

তিনি আরও যোগ করেন, “স্টেডিয়ামে ভাল ভিড় ছিল। অনেক ভারতীয় সমর্থকও ছিল, যা বিদেশের মাটিতে দারুণ অনুভূতি দেয়। বব হাউটনের অধীনে তখন আমরা ভালো খেলছিলাম।”

এর আগে ২০০৬ সালেও গাওলি হংকংয়ে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলেছিলেন, যেটি ২-২ গোলে ড্র হয়েছিল। তখন দলের কোচ ছিলেন সৈয়দ নাঈমুদ্দিন।

থাইল্যান্ডের হার থেকে শিক্ষা নিয়ে হংকং ম্যাচে নজর মার্কুয়েজের

Advertisements

হংকং বনাম নেপাল ম্যাচটি মাঠে বসে দেখার পর গাওলি বলেন, “হংকং এখন উন্নতি করছে, তবে নেপাল অনেক সুসংগঠিতভাবে রক্ষা করেছে। খুব বেশি সুযোগ দেয়নি। আমরা কলকাতায় আগের বাছাইপর্বে হংকংকে হারিয়েছিলাম, কিন্তু এবার পরিস্থিতি একেবারেই আলাদা। তাদের দলে এখন অনেক প্রাকৃতিককরণ করা খেলোয়াড় রয়েছে।”

তিনি আশাবাদী Iভারতীয় দল ইতিবাচক দিকগুলো বজায় রাখতে পারলে ভালো ফল হবে। এই প্রসঙ্গে গাওলি বলেন, “থাইল্যান্ড ম্যাচে আমরা বেশ কিছু পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করেছিলাম। সেগুলো কাজে লাগাতে পারলে ফল আমাদের পক্ষেই যাবে। দলের পরিবেশ এখন দারুণ।”

কোচিং স্টাফের আরেক সদস্য, গোলরক্ষক কোচ মার্ক গ্যামন, ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত হংকং প্রিমিয়ার লিগের সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট ক্লাবে কাজ করেছেন। তিনি জানান, “আমি যখন এখানে কাজ করতাম, তখন জাতীয় দলে খুব কম বিদেশি খেলোয়াড় ছিল। এখন অনেক ব্রাজিলিয়ান ও স্প্যানিশ খেলোয়াড় হংকং পাসপোর্ট পেয়ে জাতীয় দলে খেলছেন।”

তিনি উদাহরণ দেন স্টেফান পেরেইরার, যিনি সাউদার্নে খেলতেন এবং স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড মানোলো ব্লেদার, যিনি নেপালের বিরুদ্ধে সদ্য অভিষেক করেছেন।

“হংকংয়ে ঘোড়দৌড় সবচেয়ে জনপ্রিয়, কিন্তু ফুটবল সবচেয়ে জনপ্রিয় দলগত খেলা। জাতীয় দলের ম্যাচে দর্শক সমর্থন ভালোই থাকে,” বলেন গ্যামন।

তিনি আরও বলেন, “লিগের ম্যাচে ভিড় কম হলেও জাতীয় দলের জন্য সমর্থকরা খুব উৎসাহী থাকে। তারা ৯০ মিনিট চিৎকার করে উৎসাহ দেয়। তাছাড়া এখানে প্রচুর ভারতীয় আছে, তাই আমাদেরও ভালো সমর্থন থাকবে। মঙ্গলবারের ম্যাচে দুর্দান্ত পরিবেশ হবে।” ১৬ বছর আগের কষ্টের স্মৃতি ভুলে ভারতের লক্ষ্য এবার ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি নয়, বরং এক নতুন অধ্যায় রচনা করা।