ভারতীয় ফুটবল দল সম্প্রতি থাইল্যান্ডের বিপক্ষে একটি প্রীতি ম্যাচে ২-০ গোলে হেরেছে। এএফসি এশিয়ান কাপ ২০২৫-এর বাছাইপর্বে হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচের আগে তাদের জন্য বড় ধাক্কা। প্রথম বাছাই ম্যাচে গোলশূন্য ড্রয়ের পর, ব্লু টাইগার্স এখন হংকংয়ের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের (India vs Hong Kong) মুখোমুখি হতে চলেছে। কিন্তু তাদের কাছে কোনো শক্তিশালী গতি নেই। থাইল্যান্ডের বিপক্ষে এই হার মানোলো মার্কুয়েজের জন্য একটি সতর্কবার্তা, যা তাকে দলের কৌশল বা খেলোয়াড় নির্বাচনে কিছু জরুরি পরিবর্তন আনতে বাধ্য করছে। হংকংয়ের বিপক্ষে সাফল্য পেতে মার্কুয়েজের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন করতে পারে।
১. আয়ুষ ছেত্রীকে বাদ দেওয়া
আয়ুষ ছেত্রীর উপর মার্কুয়েজের ভরসা স্পষ্ট, কারণ এফসি গোয়ায় তার পারফরম্যান্স তাকে জাতীয় দলে সুযোগ এনে দিয়েছে। কিন্তু ২২ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার আন্তর্জাতিক ম্যাচের তীব্রতার সঙ্গে এখনো খাপ খাওয়াতে পারেননি। থাইল্যান্ডের বিপক্ষে তার সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স ছিল বিশেষভাবে হতাশাজনক। তিনি মাঝমাঠে প্রতিপক্ষের আক্রমণ ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং বল পুনরুদ্ধারে সফল হননি। তার পাসিংও আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এই পরিস্থিতিতে ছেত্রীকে বাদ দিয়ে সুরেশ সিংয়ের মতো অভিজ্ঞ মিডফিল্ডারকে খেলানো বুদ্ধিমানের কাজ হবে। সুরেশ মাঝমাঠে আরও স্থিতিশীলতা এবং শক্তি যোগ করতে পারেন, যা ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২. ব্র্যান্ডন ফার্নান্ডেজ এবং লালিয়ানজুয়ালা ছাংটেকে শুরুর একাদশে রাখা
হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচে ভারতের আক্রমণাত্মক শক্তি বাড়াতে হলে মার্কুয়েজকে তার সেরা আক্রমণভাগের খেলোয়াড়দের উপর ভরসা করতে হবে। ব্র্যান্ডন ফার্নান্ডেজ এবং লালিয়ানজুয়ালা ছাংটেকে শুরুর একাদশে ফিরিয়ে আনা অত্যন্ত জরুরি। ফার্নান্ডেজ ভারতীয় দলের সবচেয়ে সৃজনশীল খেলোয়াড়। তার সেট-পিস থেকে ক্রস এবং ফাইনাল থার্ডে সুনির্দিষ্ট পাস প্রতিপক্ষের জন্য হুমকি। অন্যদিকে, ছাংটে তার গতি, বল নিয়ে আত্মবিশ্বাস এবং গোল করার ক্ষমতা দিয়ে প্রতিপক্ষের প্রতিরক্ষায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারেন। তার অপ্রত্যাশিত চাল প্রতিপক্ষের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। এই দুই খেলোয়াড় শুরু থেকে খেললে ভারতের আক্রমণ অনেক বেশি কার্যকর হবে।
৩. মাঝমাঠে আরও খেলোয়াড় যোগ করা
থাইল্যান্ডের বিপক্ষে মার্কুয়েজ ৪-৪-২ ফর্মেশন নিয়ে পরীক্ষা করেছিলেন, যা ভারতের জন্য বুমেরাং হয়ে ফিরেছে। এই ফর্মেশনে মাঝমাঠে খেলোয়াড়ের সংখ্যা কম থাকায় ছেত্রী এবং লালেংমাওয়িয়া রাল্টে প্রায়ই তিন বা তার বেশি থাই খেলোয়াড়ের সঙ্গে মোকাবিলা করতে বাধ্য হয়েছেন। ফলে ভারত মাঝমাঠে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বারবার প্রতিপক্ষের আক্রমণের মুখে পড়েছে। হংকংয়ের বিপক্ষে এই ভুল পুনরাবৃত্তি করলে ফল আরও বিপর্যয়কর হতে পারে।
মার্কুয়েজকে তার ফর্মেশন পরিবর্তন করে মাঝমাঠে আরও একজন খেলোয়াড় যোগ করতে হবে। একটি ৪-৩-৩ ফর্মেশন আদর্শ হতে পারে, যেখানে নিখিল প্রভুর মতো একজন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার প্রতিরক্ষার সামনে বসে প্রতিপক্ষের আক্রমণ ভাঙতে পারেন। এটি মাঝমাঠে শক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি ভারতকে বল দখলে রাখতে এবং আক্রমণাত্মক খেলায় ধীরে ধীরে গতি বাড়াতে সাহায্য করবে। এছাড়াও, এই ফর্মেশন হংকংয়ের কাউন্টার-অ্যাটাক রুখতে আরও কার্যকর হবে।