দেশজুড়ে আবারও বাড়ছে কোভিড-১৯ সংক্রমণ। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সক্রিয় কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫,৩৬৪। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৭৬৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের—যার মধ্যে কেরলে ২ জন, পঞ্জাব ও কর্নাটকে ১ জন করে।
কেরল ফের শীর্ষে, পশ্চিমবঙ্গে ৫৮ নতুন সংক্রমণ
কেরল সর্বাধিক আক্রান্ত রাজ্য হিসেবে ফের শীর্ষে, যেখানে একদিনেই ১৯২ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। এরপরেই রয়েছে গুজরাত (১০৭), পশ্চিমবঙ্গ (৫৮) ও দিল্লি (৩০)। এই চার রাজ্য মিলিয়েই গত ২৪ ঘণ্টার সংক্রমণের প্রায় ৬৫ শতাংশ।
মহারাষ্ট্রেও সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। শুক্রবার রাজ্যটিতে ১১৪ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১,২৭৬ এবং মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৮। সর্বাধিক আক্রান্ত জেলা হল পুনে (৪৪) ও মুম্বই (৩৭), এরপর মীরা-ভায়ান্দর ও পনভেল (৭টি করে)।
পশ্চিমবঙ্গে মোট সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৯৬। গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৮ জন আক্রান্ত ও ৯১ জন সুস্থ হয়েছেন। মৃতের সংখ্যা এখনো ১।
দিল্লি, ছত্তিশগড় ও হরিয়ানাতেও নজরদারি বাড়ছে India sees COVID-19 cases surge
দিল্লিতে শুক্রবার নতুন করে ৩০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে রাজধানীতে সক্রিয় আক্রান্ত ৫৯২। জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৭, তবে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন কোনও মৃত্যু হয়নি।
ছত্তিশগড়ে সম্প্রতি সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজ্য জুড়ে স্ক্রিনিং চালানো হয়। মোট ১,১৮৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়, যার মধ্যে ৫০ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে।
হরিয়ানায় শুক্রবার ৩১ জন নতুন রোগীর সন্ধান মিলেছে। গুরুগ্রাম ও ফারিদাবাদে যথাক্রমে ৯ ও ১১ জন আক্রান্ত। রাজ্যের মোট সক্রিয় আক্রান্ত ৮৭।
ভয় নয়, সতর্কতা জরুরি বলছেন বিশেষজ্ঞরা
স্বাস্থ্য দফতরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অধিকাংশ রোগীর উপসর্গ মৃদু এবং বাড়িতে থেকেই তাঁদের চিকিৎসা চলছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কোভিড এখন এন্ডেমিক হয়ে উঠেছে এবং মৌসুমি ভাইরাসে পরিণত হচ্ছে। মাঝে মাঝে সংক্রমণ বাড়লেও আতঙ্কের কিছু নেই।
দেশজুড়ে হাসপাতাল প্রস্তুতির মহড়া
৬ জুন দেশজুড়ে সমস্ত হাসপাতালে কোভিড পরিস্থিতি সামলাতে প্রস্তুতি মূল্যায়নের জন্য মক ড্রিল পরিচালিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার সমস্ত রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে, যাতে হাসপাতালগুলিতে অক্সিজেন, আইসোলেশন বেড, ভেন্টিলেটর ও প্রয়োজনীয় ওষুধের পর্যাপ্ত মজুত থাকে।
২ ও ৩ জুন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজিএইচএস ড. সুনীতা শর্মার নেতৃত্বে একাধিক বৈঠক হয়, যেখানে বিভিন্ন রাজ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে দেশের বর্তমান কোভিড পরিস্থিতি এবং প্রস্তুতি পর্যালোচনা করা হয়।
এছাড়াও ILI (ইনফ্লুয়েঞ্জা সদৃশ অসুস্থতা) এবং SARI (তীব্র শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতা) নজরদারির আওতায় রাখা হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী, প্রত্যেকটি SARI রোগীর এবং ৫% ILI রোগীর কোভিড পরীক্ষা করা হচ্ছে। যাঁদের রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাঁদের নমুনা Whole Genome Sequencing-এর জন্য পাঠানো হচ্ছে ICMR VRDL নেটওয়ার্কে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মূল্যায়ন
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের মে মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড-১৯-কে ‘Public Health Emergency’ হিসেবে আর বিবেচনা করছে না। এখন এটি একটি ঋতু নির্ভর এবং নির্দিষ্ট অঞ্চলে সীমিত রোগ বলেই দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
Bharat: India sees COVID-19 cases surge in June 2025 with 5,364 active cases. Kerala, Bengal, Maharashtra, Delhi, Chhattisgarh, Haryana report new infections. Experts advise caution, not fear. Hospitals conducted mock drills for preparedness nationwide. Stay updated on India’s COVID status.