এসএসসি-র সদ্য প্রকাশিত নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করলেন ২০১৬ সালের চাকরিহারা প্রার্থী লুবানা পারভিন। তাঁর অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে রাজ্য সরকার নতুন রুল তৈরি না করেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। হাইকোর্ট মামলার আর্জি গ্রহণ করেছে। আগামী ৫ জুন বিচারপতি রাজা বসু চৌধুরীর বেঞ্চে মামলার শুনানি হওয়ার কথা।
লুবানা পারভিনের আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের দাবি, সুপ্রিম কোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা অনুসারে ২০১৬ সালের প্রক্রিয়ায় সেই বছরের প্রার্থীদের মধ্য থেকেই নিয়োগ করতে হবে এবং সেই সময়কার রুল অনুযায়ী নিয়োগ হওয়া উচিত। অথচ রাজ্য সরকার ২০২৫ সালের নতুন রুল এনে এই প্রক্রিয়া শুরু করেছে, যা পুরোপুরি অবৈধ।
বয়স ও অভিজ্ঞতা সংক্রান্ত ছাড় নিয়েও উঠছে প্রশ্ন
আইনজীবীর আরও দাবি, সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল—যেসব প্রার্থী একাধিক পরীক্ষায় বসেছেন, তাঁরা প্রত্যেকবারের জন্য বয়সে ছাড় পাবেন। কিন্তু এসএসসি-র নতুন বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, একবার মাত্র ছাড় দেওয়া হবে। পাশাপাশি, যাঁদের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা নেই, তাঁদের কোনও নম্বর বরাদ্দ নেই। ফলে তাঁদের সুযোগ কার্যত শূন্য। অন্যদিকে, অভিজ্ঞ প্রার্থীদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১০ নম্বর। এই ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ পক্ষপাতদুষ্ট ও বৈষম্যমূলক বলেই দাবি মামলাকারীর।
নতুন নিয়োগ রুলে কী কী পরিবর্তন? SSC new notification Challenge
নতুন রুল অনুসারে, অ্যাকাডেমিক নম্বর কমিয়ে ৩৫ থেকে ১০ করা হয়েছে৷ লিখিত পরীক্ষার নম্বর বাড়ানো হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০৷ ইন্টারভিউর জন্য রাখা হয়েছে ১০ নম্বর৷ নতুনভাবে যুক্ত হয়েছে ‘লেকচার ডেমো’ এবং ‘টিচিং এক্সপেরিয়েন্স’ এর জন্য অতিরিক্ত ১০+১০ নম্বর৷
ফলে যাঁদের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা নেই, তাঁদের পূর্ণ নম্বর পাওয়া অসম্ভব বলেই দাবি মামলাকারীর আইনজীবীর। তাঁর বক্তব্য, “এতে একদল চাকরিহারা প্রার্থী পুরোপুরি বঞ্চিত হচ্ছেন। সুপ্রিম কোর্ট কখনও বলেনি, নতুন করে রুল তৈরি করে এভাবে নম্বর ভাগ করতে। এটা এক ধরনের ঘুরপথে নির্দিষ্ট প্রার্থীদের সুবিধা দেওয়া।”
নতুন বিজ্ঞপ্তির মূল তথ্য
রাজ্য সরকার ৩১ মে’র মধ্যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানিয়েছে—
আবেদন শুরু: ১৬ জুন বিকেল ৫টা থেকে (অনলাইন)
লিখিত পরীক্ষা সম্ভাব্য তারিখ: সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ
ফল প্রকাশ: অক্টোবরের চতুর্থ সপ্তাহ
প্রার্থীদের বয়সসীমা: ২১–৪০ বছর, (ওবিসি/এসসি/এসটি ও প্রতিবন্ধীদের জন্য ছাড়)
২০১৬ সালের চাকরিহারাদের জন্য বয়সে বিশেষ ছাড়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে৷ তবে বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, পুরুষ প্রার্থীরা মেয়েদের স্কুলে নিয়োগের জন্য বিবেচিত হবেন না।
চূড়ান্ত শুনানি ৫ জুন
১৬ জুন থেকে শুরু হচ্ছে আবেদন প্রক্রিয়া। তার আগেই মামলাকারীর আর্জির শুনানি হবে কলকাতা হাইকোর্টে। মামলার রায়ের উপর নির্ভর করছে এসএসসি-র বহু প্রতীক্ষিত এই নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ।
West Bengal: SSC’s new recruitment notification faces Calcutta High Court challenge by Lubana Parveen, citing Supreme Court directive violations. She alleges the state ignored a new rule mandate for 2016 candidates, implemented 2025 rules, and introduced discriminatory age/experience criteria. Hearing set for June 5.