কলকাতা পুলিশ শনিবার (৩১ মে, ২০২৫) স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, অপারেশন সিঁদুর (bjp) নিয়ে করা সাম্প্রদায়িক মন্তব্য সহ একটি ভিডিও আপলোড করা ইনস্টাগ্রাম ইনফ্লুয়েন্সার শর্মিষ্ঠা পানোলির গ্রেপ্তার অবৈধ বলে যে দাবি উঠেছে, তা সম্পূর্ণ ভুল এবং বিভ্রান্তিকর। পুলিশ জানিয়েছে, শর্মিষ্ঠাকে নোটিস দেওয়ার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে এড়িয়ে গেছেন। ফলে আদালতের নির্দেশে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারের পটভূমি
শর্মিষ্ঠা পানোলি, যিনি পুনের একটি আইনি প্রতিষ্ঠানে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করছেন, সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন, যেখানে অপারেশন সিঁদুর নিয়ে তাঁর মন্তব্য সাম্প্রদায়িক বলে অভিযোগ ওঠে(bjp)। ভিডিওটি ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দেওয়ার পর তিনি তা মুছে ফেলেন এবং ক্ষমা চেয়ে একটি বিবৃতি জারি করেন। তবে, ততক্ষণে কলকাতায় তাঁর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের হয়ে যায়।
কলকাতা পুলিশ তাঁকে নোটিস দেওয়ার একাধিক চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। ফলে, আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। শুক্রবার রাতে কলকাতা পুলিশ গুরুগ্রামে তাঁর পরিবারের সঙ্গে অবস্থানরত শর্মিষ্ঠাকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশের বিবৃতি অনুযায়ী, (bjp)তাঁকে গ্রেপ্তারের পর উপযুক্ত ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করা হয় এবং আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ট্রানজিট রিমান্ডে নেওয়া হয়।
কলকাতা পুলিশের বিবৃতি
কলকাতা পুলিশ শনিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, “শর্মিষ্ঠা পানোলির গ্রেপ্তার অবৈধ বলে সামাজিক মাধ্যমে যে অপপ্রচার চলছে, তা সম্পূর্ণ ভুল এবং বিভ্রান্তিকর।” তারা জানিয়েছে, “সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া যথাযথভাবে মেনে চলা হয়েছে। তাঁকে নোটিস দেওয়ার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু তিনি প্রতিবারই পলাতক ছিলেন। ফলে, যথাযথ আদালতের নির্দেশে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয় এবং তাঁকে গুরুগ্রাম থেকে বৈধভাবে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ জনগণের কাছে আহ্বান জানিয়েছে, “অনুগ্রহ করে অযাচাইকৃত বা জল্পনামূলক তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকুন এবং নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে তথ্য গ্রহণ করুন।”
বিজেপির প্রতিক্রিয়া (bjp)
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা এবং বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী (bjp) এই গ্রেপ্তারের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, এই গ্রেপ্তার “নির্দিষ্ট ভোটব্যাঙ্ককে তুষ্ট করার জন্য” করা হয়েছে। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, “তৃণমূলের সাংসদ মহুয়া মৈত্র দেবী কালীর বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করার পর তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক এফআইআর দায়ের হয়েছিল।
কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? তৃণমূলের সাংসদ সায়নী ঘোষ মহাদেবের বিরুদ্ধে কী পোস্ট করেছিলেন? কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে বহু এফআইআর রয়েছে, কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র ‘সনাতনী’দের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।” অধিকারী আরও বলেন, “তৃণমূল তুষ্টিকরণের রাজনীতি করছে।(bjp)
একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায় তাদের ভোটব্যাঙ্ক, এবং এই গ্রেপ্তার তাদের তুষ্ট করার জন্য। মহুয়া মৈত্র একটি টক শো-তে দেবী কালীর বিরুদ্ধে অবমাননাকর ভাষা ব্যবহার করেছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে ২০০টি এফআইআর দায়ের হয়েছিল। কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”
সামাজিক মাধ্যমে বিতর্ক
শর্মিষ্ঠার গ্রেপ্তারের পর সামাজিক মাধ্যমে এই ঘটনা নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। কেউ কেউ তাঁর গ্রেপ্তারকে অবৈধ বলে দাবি করেছেন, আবার অনেকে পুলিশের পদক্ষেপের সমর্থন করেছেন। কিছু নেটিজেন মনে করেন, তাঁর ভিডিও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারত, যা আইনি ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা তৈরি করেছে। অন্যরা বলছেন, এই গ্রেপ্তার মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উপর আঘাত।
অল্পের জন্য সোনা হাতছাড়া ভারতের, শেষ মুহূর্তে বাজিমাত পাকিস্তানের
শর্মিষ্ঠার প্রতিক্রিয়া
শর্মিষ্ঠা পানোলি ভিডিওটি মুছে ফেলার পর একটি ক্ষমাপ্রার্থনা জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তাঁর মন্তব্যের উদ্দেশ্য কাউকে আঘাত করা ছিল না এবং তিনি তাঁর ভুলের জন্য দুঃখিত। তবে, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর তিনি পুলিশের নোটিস এড়িয়ে চলেছিলেন বলে পুলিশের দাবি।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করেছে(bjp)। তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে ইতিমধ্যেই তীব্র রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব চলছে। শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে তুষ্টিকরণের রাজনীতির অভিযোগ উঠেছে, যা আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
তৃণমূলের একাংশ এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, পুলিশ আইন অনুযায়ী কাজ করছে এবং এই গ্রেপ্তার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয়। তারা দাবি করেছে, শর্মিষ্ঠার ভিডিও সামাজিক সম্প্রীতির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারত।
কলকাতা পুলিশ শর্মিষ্ঠা পানোলির গ্রেপ্তারকে বৈধ বলে দাবি করেছে এবং অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সতর্ক করেছে। এই ঘটনা রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সংবেদনশীলতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিজেপির সমালোচনা এবং তৃণমূলের পাল্টা জবাব এই ঘটনাকে রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলেছে। আগামী দিনে এই মামলার আইনি গতিপ্রকৃতি এবং রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে আরও আলোচনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।