জামশেদপুর এফসি (Jamshedpur FC) ভারতীয় সুপার লিগে (ISL) যোগ দেওয়ার পর থেকে, তাদের মনোমুগ্ধকর খেলা এবং উৎসাহী সমর্থকদের জন্য বিখ্যাত। আট বছরে মাত্র দুবার সেমিফাইনালে পৌঁছালেও, ‘ফার্নেস’-এর এই দল তাদের বিশাল সমর্থক বাহিনীর জন্য পরিচিত, যারা দলের জন্য সবসময় উদ্দীপনা ছড়ায়। লাল খনির ইতিহাসে বেশ কিছু খেলোয়াড় তাদের অসাধারণ প্রতিভা দিয়ে সমর্থকদের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। জামশেদপুর এফসি’র সেরা ১০ খেলোয়াড়ের, যারা এই জার্সির গৌরব বাড়িয়েছেন।
১০. প্রণয় হালদার
প্রণয় হালদার জামশেদপুর এফসি’র মিডফিল্ডের এক অপরিহার্য নাম। ঋণে এসেও তিনি সমর্থকদের হৃদয় জয় করেছেন। ২০২০-২১ মৌসুমে আইএসএল শিল্ড জয়ে তার ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মোহনবাগানে ফিরে যাওয়ার পর জামশেদপুর তার অভাব অনুভব করে, এবং পরে তাকে আবার দলে ফিরিয়ে আনা হয়। চোটের কারণে কিছু সময় মাঠের বাইরে থাকলেও, প্রয়োজনের মুহূর্তে তিনি সবসময় দলের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
৯. জর্ডান মারে
অস্ট্রেলিয়ান স্ট্রাইকার জর্ডান মারে নেরিজুস ভাল্সকিসের বিকল্প হিসেবে দলে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু তার অসাধারণ পারফরম্যান্স তাকে প্রথম একাদশে স্থান করে দেয়। শিল্ড জয়ী মৌসুমে তার গতিশীল খেলা দলের জন্য বড় সম্পদ ছিল। এই মৌসুমে তিনি আবার দলে ফিরেছেন এবং তার ভলি ও জয়সূচক গোল তাকে সমর্থকদের প্রিয় করে তুলেছে।
৮. টিপি রেহেনেশ
শিল্ড জয়ী মৌসুমের আরেক নায়ক টিপি রেহেনেশ। সুব্রত পালের প্রস্থানের পর তিনি গোলপোস্টে দায়িত্ব নেন এবং ওয়েন কয়েলের প্রত্যাশা পূরণ করেন। কেরলের এই গোলরক্ষক তার দ্বিতীয় মৌসুমে শিল্ড জয়ের সৌভাগ্য অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি মুম্বই সিটি এফসি’তে যোগ দেন।
৭. হাভিয়ের হার্নান্দেজ
এক মৌসুমেই হাভিয়ের হার্নান্দেজ জামশেদপুরের নেতৃত্ব দিয়ে দলকে সেমিফাইনাল এবং কলিঙ্গ সুপার কাপের ফাইনালে নিয়ে যান। আইএসএলের অন্যতম সেরা বিদেশি খেলোয়াড় হিসেবে তিনি বয়সের সঙ্গে আরও পরিণত হয়েছেন। আগামী মৌসুমেও তার কাছ থেকে বড় কিছু আশা করছে জামশেদপুর।
৬. স্টিফেন এজে
নাইজেরিয়ান ডিফেন্ডার স্টিফেন এজে জামশেদপুরের প্রতিরক্ষার মেরুদণ্ড। সেট পিসে গোল করার ক্ষমতা তাকে বিশেষ করে তুলেছে। ওয়েন কয়েলের প্রথম মৌসুমে তিনি দলে যোগ দেন এবং পরে কুইন্স পার্কে কয়েলের সঙ্গে পুনর্মিলনের পর আবার জামশেদপুরে ফিরে আসেন।
৫. ড্যানিয়েল চিমা চুকু
জামশেদপুরের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা ড্যানিয়েল চিমা চুকু। ৫৫ ম্যাচে ২১ গোল করে তিনি দলের অন্যতম সেরা আফ্রিকান সাইনিং হয়ে উঠেছেন। হায়দরাবাদ এফসি’র বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক থেকে শুরু করে জয়সূচক গোল, চিমা সমর্থকদের প্রিয় নায়ক।
৪. সুব্রত পাল
‘স্পাইডারম্যান’ সুব্রত পাল জামশেদপুর এফসি’র প্রথম মৌসুমে গোল্ডেন গ্লাভ জিতে ইতিহাস গড়েন। ৬ ফুট ১ ইঞ্চি লম্বা এই গোলরক্ষক তিন মৌসুম দলের হয়ে খেলে সমর্থকদের হৃদয়ে স্থান করে নেন।
৩. পিটার হার্টলি
জামশেদপুরের প্রথম শিল্ড জয়ী অধিনায়ক পিটার হার্টলি। তার নেতৃত্বে দল এক নতুন রূপ পায়। ইংলিশ ডিফেন্ডারের দৃঢ়তা এবং আক্রমণাত্মক মানসিকতা দলকে ২০২১-২২ মৌসুমে শিল্ড জিতিয়েছে।
২. তিরি
দলের প্রথম অধিনায়ক তিরি ৪৯ ম্যাচে প্রতিরক্ষায় স্থিতিশীলতা এবং সেট পিসে অবদান রেখেছেন। তিরি-মেমো-পাল ত্রয়ী সমর্থকদের কাছে কিংবদন্তি।
১. গ্রেগ স্টুয়ার্ট
স্কটিশ মায়েস্ত্রো গ্রেগ স্টুয়ার্ট এক মৌসুমেই জামশেদপুরের ইতিহাসে অমর হয়ে যান। ২১ ম্যাচে ১০ গোল এবং ১০ অ্যাসিস্ট করে তিনি ২০২১-২২ মৌসুমে গোল্ডেন বল জেতেন এবং দলকে শিল্ড জিতিয়েছেন। তার কার্লিং শট এবং গোলাজো আইএসএল-এর ইতিহাসে অমর।