Yuvraj Singh 7 sixes: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্মৃতি ফিরিয়ে মাস্টার্স লিগে যুবি’র ৭ ছক্কা

ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম ক্যারিশম্যাটিক ব্যাটসম্যান যুবরাজ সিং (Yuvraj Singh) আবারও প্রমাণ করলেন কেন তিনি ক্রিকেটের ইতিহাসে একজন কিংবদন্তি। বৃহস্পতিবার ইন্ডিয়ান মাস্টার্স লিগে (IML) তিনি ৩০…

Yuvraj Singh Smashes 7 Sixes in IML

short-samachar

ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম ক্যারিশম্যাটিক ব্যাটসম্যান যুবরাজ সিং (Yuvraj Singh) আবারও প্রমাণ করলেন কেন তিনি ক্রিকেটের ইতিহাসে একজন কিংবদন্তি। বৃহস্পতিবার ইন্ডিয়ান মাস্টার্স লিগে (IML) তিনি ৩০ বলে ৫৯ রানের একটি বিধ্বংসী ইনিংস খেলে ভারতীয় দলকে অস্ট্রেলিয়া মাস্টার্সের বিরুদ্ধে জয় এনে দিয়েছেন। এই ম্যাচে যুবরাজ ৭টি বিশাল ছক্কা এবং একটি চার মেরে ভক্তদের মনে ২০০৭ সালের আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছেন। সেই টুর্নামেন্টে তিনি ইংল্যান্ডের পেসার স্টুয়ার্ট ব্রডের এক ওভারে ৬টি ছক্কা হাঁকিয়ে বিশ্বকে চমকে দিয়েছিলেন। এবারও তাঁর ব্যাট থেকে উড়ে আসা ছক্কার ঝড়ে অস্ট্রেলিয়া মাস্টার্সের স্বপ্ন ভেঙে গেল।

   

ইন্ডিয়ান মাস্টার্স লিগের এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ভারতীয় দল প্রথমে ব্যাট করে ২২০/৭ রানের একটি শক্তিশালী স্কোর গড়ে তোলে। যুবরাজ সিং ছিলেন এই ইনিংসের প্রধান স্তম্ভ। অস্ট্রেলিয়ার লেগ স্পিনার ম্যাকগেইনের এক ওভারে তিনি তিনটি ছক্কা হাঁকিয়ে প্রমাণ করলেন যে বয়স তাঁর ব্যাটিং দক্ষতাকে ম্লান করতে পারেনি। তাঁর এই আগ্রাসী ব্যাটিং ভক্তদের মনে ২০০৭ সালের সেই স্মরণীয় মুহূর্তগুলো ফিরিয়ে এনেছে। যুবরাজের এই ঝড়ো ইনিংসের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন মাস্টার ব্লাস্টার সচিন তেন্ডুলকর। সচিন ৩০ বলে ৪২ রান করেন, যার মধ্যে ছিল ৭টি চার। তাঁর এই ক্লাসিক ইনিংস ম্যাচে ভারতের ভিত আরও মজবুত করে।

Also Read |  এই স্প্যানিশ মিডফিল্ডারের দিকে নজর আইএসএলের দুই ক্লাবের 

এছাড়াও স্টুয়ার্ট বিনি ২১ বলে ৩৬, ইউসুফ পাঠান ১০ বলে ২৩ এবং ইরফান পাঠান ৭ বলে ১৯ রানের দুর্দান্ত ক্যামিও খেলে ভারতের স্কোরকে ২২০-এ পৌঁছে দেন। এই বিশাল রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া মাস্টার্স শুরুতেই হোঁচট খায়।

২২১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া পাওয়ারপ্লে-র মধ্যেই তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায়। ভারতীয় পেসার বিনয় কুমার শুরুতেই বিপজ্জনক শেন ওয়াটসনকে (৫) আউট করে দেন। এরপর তিনি শন মার্শকে (২১) ফিরিয়ে অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা আরও খারাপ করে দেন। এরপর মাঠে নামেন বাঁ-হাতি স্পিনার শাহবাজ নাদিম, যিনি এই ম্যাচে ভারতের জয়ের নায়ক হয়ে ওঠেন। নাদিম ৪ ওভারে মাত্র ১৫ রান দিয়ে ৪ উইকেট তুলে নেন। তিনি প্রথম ওভারেই বেন ডাঙ্ককে (২১) আউট করেন। এরপর নাথান রিয়ারডন (২১), নাথান কুল্টার-নাইল (০) এবং বেন হিলফেনহাউসকে (২) আউট করে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইনআপে ধস নামান।

পাওয়ারপ্লে-র পর অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ছিল ৪৯/৩। এরপর স্টুয়ার্ট বিনি দ্রুত ড্যানিয়েল ক্রিশ্চিয়ানকে (২) আউট করে দলের জয়ের পথ আরও সহজ করেন। রিয়ারডন একপ্রান্তে লড়াই চালানোর চেষ্টা করেছিলেন। বিনি তাঁর একটি কঠিন রিটার্ন ক্যাচ ফেলে দিলে রিয়ারডন জীবন পান এবং দুটি দুর্দান্ত বাউন্ডারি মারেন। কিন্তু নাদিম ফিরে এসে টানা দুই বলে রিয়ারডন এবং কুল্টার-নাইলকে আউট করে অস্ট্রেলিয়াকে ৭৪/৬-এ নামিয়ে আনেন।

অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং আরও বিপর্যস্ত হয় যখন বাঁ-হাতি স্পিনার পawan নেগি স্টিভ ও’কিফকে শূন্য রানে আউট করেন। এর মধ্যে বেন কাটিং একাই লড়াই চালিয়ে যান। তিনি ৩৯ রানের একটি ঝড়ো ইনিংস খেললেও ইরফান পাঠান তাঁকে আউট করে অস্ট্রেলিয়ার শেষ আশাটুকুও শেষ করে দেন। অস্ট্রেলিয়া শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ওভারে সব উইকেট হারিয়ে পরাজয় মেনে নেয়।

এই জয়ের ফলে ভারতীয় দল ইন্ডিয়ান মাস্টার্স লিগের ফাইনালের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। শুক্রবার একই ভেন্যুতে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা মাস্টার্স এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ মাস্টার্স। গ্রুপ পর্বে শীর্ষে থাকা শ্রীলঙ্কা মাস্টার্স এই ম্যাচে ফেভারিট হিসেবে মাঠে নামবে।

এই ম্যাচের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ভক্তরা যুবরাজ সিং-এর প্রশংসায় মেতে উঠেছেন। একজন ভক্ত লিখেছেন, “যুবরাজ এখনও ছক্কা মারার রাজা। ২০০৭-এর স্মৃতি ফিরিয়ে দিলেন।” আরেকজন লিখেছেন, “সচিন, যুবি, ইউসুফ, ইরফান—এই দল অপ্রতিরোধ্য।” বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীরাও এই জয়ে উচ্ছ্বসিত। কলকাতার একজন সমর্থক বলেন, “যুবরাজের ব্যাটিং দেখে মনে হল যেন সময় পিছিয়ে গেছে। আমরা ফাইনালে ভারতের জয় চাই।”
এই ম্যাচে যুবরাজ সিং-এর পারফরম্যান্স শুধু ভারতীয় দলের জয়ই নিশ্চিত করেনি, বরং ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে আবারও সেই পুরনো দিনের উত্তেজনা ফিরিয়ে এনেছে। ফাইনালে ভারতের প্রতিপক্ষ যেই হোক না কেন, যুবরাজের এই ফর্ম ভারতীয় সমর্থকদের জন্য এক বড় আশার আলো।