ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal FC) বর্তমান পরিস্থিতি সত্যিই হতাশাজনক। দীর্ঘদিন পর, এই মরসুমে (ISL) একাধিক ভালো ফুটবলার যুক্ত করেও ভাগ্য খুলল না লাল-হলুদ শিবিরের। প্লে-অফের দৌড় শেষ হয়েছে অস্কার ব্রুজোর (Oscar Bruzon) ছাত্রদের। এবছর শক্তিশালী দল গঠন করেও কেন তাদের ফলাফল সন্তোষজনক হল না? একই কথা ভাবাচ্ছে ক্লাবের সদস্য থেকে সমর্থকদের। বিশেষ করে দলের ইনভেস্টর, ক্লাব কর্তারা এবং ফুটবল বিশেষজ্ঞরা প্রায় একই প্রশ্ন তুলছেন – ‘‘এত ভালো দল থাকার পরেও কেন ফল ভালো হচ্ছে না?’’
ইস্টবেঙ্গলের ইনভেস্টর, ইমামি কর্তা আদিত্য আগরওয়াল এই বিষয়ে এক সাখ্যাৎকারে জানিয়েছেন, ‘‘আমাদের দল গঠন খারাপ হয়নি, এটা সবারই জানা। আমাদের দল মাঝে মাঝে দারুণ খেলে, কিন্তু কখন কখন সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখা যাচ্ছে না। ভালো খেলার পর হঠাৎ হারিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে দলকে, আর এটি আমাদের জন্য বড় সমস্যা।’’
প্রথম ছয় ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল পর পর হেরে যাওয়ার কারণে তাদের পক্ষে মানসিকভাবে এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। সেই প্রসঙ্গে আদিত্য আগরওয়াল বলেন, ‘‘প্রথম ছয় ম্যাচে যদি কিছু পয়েন্ট আমাদের পক্ষে আসত, তাহলে পরবর্তী সময়ে ভাল ফলাফল সম্ভব হত। তবে পর পর হারানোর কারণে মনোবলও নষ্ট হয়েছে। তাছাড়া কোচ পরিবর্তন, চোট-আঘাতের সমস্যা, এসবও পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে।’’
এখন, যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তার থেকে দলকে কীভাবে ঘুরিয়ে আনা যাবে, সে সম্পর্কে ক্লাব কর্তাদের মতামতও গুরুত্বপূর্ণ। ইস্টবেঙ্গলের ক্লাবের শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার এই বিষয়ে মন্তব্য করেছেন, ‘‘এটা কোচের সিদ্ধান্ত হবে, যে কিভাবে দল ঘুরে দাঁড়াবে। আমাদের পক্ষ থেকে শুধু সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু মাঠের ভিতর কী ঘটবে, সেটা তো কোচের কাজ।’’
ইস্টবেঙ্গল কর্তারা বলছেন, দলের সব ফুটবলারই কোচের পছন্দ অনুযায়ী আনা হয়েছে। কোচের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী, প্রথমে ‘‘এ’’ তালিকাভুক্ত ফুটবলারদের নিয়ে আসা হয়েছে, এরপর ‘‘বি’’ তালিকার ফুটবলারদের আনা হয়েছে। অর্থাৎ, দল গঠন নিয়ে কোনও ভুল হয়নি, কিন্তু ফলাফল সাফল্যের সঙ্গে মিলছে না। এটা অত্যন্ত বিরক্তিকর, বিশেষ করে যখন ভালো খেলোয়াড়রা দলে রয়েছে, কিন্তু তবুও দল একসঙ্গে ভাল খেলে না।
অন্যদিকে, আঘাত ও চোটের সমস্যা আরেকটি বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নতুন ফুটবলাররা দলে আসার পরই দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে থাকার পর তাদের মানিয়ে নিতে কিছু সময় প্রয়োজন। তার পরেও দলের পারফরমেন্সে কোন ধরনের স্থিতিশীলতা দেখা যাচ্ছে না, যা দল এবং তার সমর্থকদের জন্য একেবারে হতাশাজনক।
সব মিলিয়ে, ইস্টবেঙ্গল এখন বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে। দলের অদ্ভুত পারফরম্যান্স এবং ইনজুরির কারণে তারা এখনও নিজেদের সঠিক ছন্দে ফিরে আসতে পারেনি। তবে, ক্লাব কর্তারা আশা প্রকাশ করছেন, তারা যদি এএফসি এবং সুপার কাপের জন্য প্রস্তুতি ভালোভাবে নিতে পারে, তাহলে তারা অন্তত মরসুমে শেষভাগে কিছুটা সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হবে। তবে ইন্ডিয়ান সুপার লিগ শেষ হলেই এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে অভিযান শুরু করবে মশাল ব্রিগেড।