ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) দলে নতুন জাদু শুরু হয়েছে। ভেনিজুয়েলা (Venezuela Football) থেকে এসেই লাল-হলুদ সমর্থকদের সমর্থকদের মন জিতে নিয়েছেন রিচার্ড সেলিস (Richard Celis)। সাত নম্বর জার্সি পরিহিত সেলিস মাঠে যখন দৌড়ান, তখন যেন নতুন করে প্রাণ ফিরে পায় কলকাতার ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাব। তার পায়ের কাজ থেকে বলের দখল সব কিছুই তাকে দ্রুত জনপ্রিয় করে তুলেছে। তবে শুধু তার খেলার সামর্থ্য নয়, তার ব্যক্তিত্ব এবং মনোভাবও তাকে দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।
রদবদল ভারতীয় ফুটবলে, কেরালার ঘরের ছেলে ইন্টার কাশীতে
রিচার্ড সেলিস আসার পর থেকে ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণভাগে এক নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। দলের অন্যান্য ফুটবলারদের সঙ্গে তার সমন্বয়ও বেশ শক্তিশালী হয়েছে। এরই মধ্যে ডগলাস দ্য সিলভা (Douglas Silva), যিনি তিন প্রধানে খেলা করছেন, তার মতে সেলিস হলেন এক কোয়ালিটি প্লেয়ার। ডগলাস বলেন, “যারা ফুটবল বোঝেন, তারা বুঝতে পেরেছেন রিচার্ড সেলিস ট্যালেন্টেড প্লেয়ার। তবে ওকে ইস্টবেঙ্গলের পরিস্থিতিটা ভাল করে বুঝতে হবে, তবেই সে আরও কার্যকরী হতে পারবে।”
সেরার তালিকায় মশাল বাহিনির জোড়া খেলোয়াড়, বাদ মোহনবাগান
তবে সেলিসের সবচেয়ে বড় শক্তি তার মাঠে উপস্থিতি এবং নিজস্ব খেলা। তার দ্রুত গতিতে উইং ধরে দৌড়ানো, ওয়ান-টু পাসে বিপক্ষের রক্ষণকে ধাক্কা দেওয়া। বল পায়ে রেখে দৃষ্টিনন্দন ফুটবল উপস্থাপন করার ক্ষমতা এসবই তাকে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে। একদিকে যেমন তার পায়ে চমৎকার বলের কাজ, তেমনি তার শারীরিক ক্ষমতাও তাকে দ্রুত গতির আক্রমণে সহায়তা করে। যা তাকে ইস্টবেঙ্গলে এক অমূল্য সম্পদে পরিণত করেছে।
সপ্তাহের সেরা পাঁচ ভারতীয়ের তালিকায় বাগানের দুই ফুটবলার
একই কথা বলছেন লাল-হলুদ অধিনায়ক ক্লেটন সিলভাও। তিনি সেলিসের খেলা নিয়ে মন্তব্য করেছেন, “রিচার্ড ভাল প্লেয়ার। সে ইস্টবেঙ্গলকে সাহায্য করতে এসেছে এবং আসার পর থেকেই সে তার উপস্থিতি মাঠে যথেষ্ট ভালভাবে ফুটিয়ে তুলেছে।” কিন্তু ক্লেটন এই বিষয়টিও উল্লেখ করেছেন যে, রিচার্ডের সফলতার জন্য দলের জন্য তার ভূমিকা বড়। বিশেষত, ক্লেটনের সঙ্গে রিচার্ড সেলিসের কম্বিনেশন বেশ ভালোই কাজ করছে। ডগলাসও লাল-হলুদের দুই ফুটবলারের প্রসঙ্গে বলেন, “রিচার্ডের সঙ্গে ক্লেটনের কম্বিনেশনটা খুবই ভালো, কারণ ক্লেটন নিজের পজিশন বদলে সেলিসকে সহায়তা করছে, দলের জন্য নিজের কিছু ছাড় দিয়েছে।”
প্রাক্তন ফুটবলারদের মতে, রিচার্ড সেলিস এখনও পুরোপুরি ম্যাচ ফিট হয়ে ওঠেননি, তবে যদি আরও কিছু ম্যাচ খেলে যান, তবে তার খেলা আরও ধারাল হবে। ডগলাস সেলিসকে পরামর্শও দিয়েছেন, “তোমার যদি মনে হয় যে ইস্টবেঙ্গল লিগের শীর্ষে রয়েছে এবং তুমি ফ্যান্সি ফুটবলে ঝুঁকতে পার, তবে সেটা এখন বন্ধ করতে হবে। বল তাড়াতাড়ি ছাড়ো, যাতে ইস্টবেঙ্গল আরও লাভবান হয়।”
ফার্স্ট বয়ের কাছে হোঁচট খেয়ে সাফাই জারাগোজার
এখন পর্যন্ত কেরালা ব্লাস্টার্সের বিপক্ষে রিচার্ড সেলিস তার গতি ও পায়ের কাজের মাধ্যমে বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করেছিলেন। যদিও তার একটি শট কেরালার পোস্টে গিয়ে আছড়ে পড়েছিল, তবুও এখনও গোল করা সম্ভব হয়নি। তবুও সমর্থকদের বিশ্বাস, সেলিস একদিন অবশ্যই গোল করবেন এবং দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠবেন। তার শটের শক্তি এবং লক্ষ্যভেদে থাকা স্পষ্ট যে, তিনি খুব শীঘ্রই গোলের স্বাদ পাবেন।
ক্যারিয়ারের শেষ সময়ে পেলের ক্লাবে নাম লেখালেন নেইমার
ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা এখন রিচার্ড সেলিসের প্রতি অগাধ আস্থা রেখেছেন। তার প্রতিভা এবং কঠোর পরিশ্রমের মিশলে, তারা বিশ্বাস করেন যে সেলিস একদিন ইস্টবেঙ্গলের ইতিহাসে নিজের জায়গা পাকা করবেন। সেলিসের ছোঁয়ায় বদলে যাবে ইস্টবেঙ্গল এবং দলের আক্রমণভাগে নতুন এক জোয়ার আসবে।