এই মুহূর্তে ইন্ডিয়ান সুপার লিগে (ISL) ফর্মের দিক দিয়ে বেশ কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে ইস্টবেঙ্গল এফসি (East Benagl FC)। গত কয়েকটি ম্যাচে খারাপ ফলের পর, তাদের প্লে-অফে খেলার সম্ভাবনা কার্যত শেষ হয়ে এসেছে। কিন্তু এর মধ্যেই তারা মরণপণ চেষ্টা করছে আবার ছন্দে ফিরে আসতে। শুক্রবার কলকাতার বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে তাদের সামনে চ্যালেঞ্জ হবে কেরালা ব্লাস্টার্স (Kerala Blasters)। এই ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল জিততে না পারলে প্লে-অফের স্বপ্ন যে একেবারে শেষ হয়ে যাবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
মাঠেই শ্বাসকষ্ট, খেলার ময়দান ছাড়লেন খেলোয়াড়
ইস্টবেঙ্গলের জন্য এই ম্যাচটা তাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে লাল-হলুদ ব্রিগেড লিগ টেবিলের শীর্ষ দশের মধ্যেও প্রবেশ করতে লড়াই করছে। কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে তাদের জয় অবশ্যই আত্মবিশ্বাসের এক বড় সংকেত হতে পারে। তবে কেরালার পরিস্থিতি অনেকটা বিপরীত। তারা এখনও প্লে-অফের টিকিট নিশ্চিত করতে মরিয়া এবং এই মরিয়া মনোভাব ইস্টবেঙ্গলের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
দীর্ঘদিন পর ঘরের মাঠে জয়ের উচ্ছ্বাস হায়দরাবাদে, কি বললেন কোচ চেম্বাকাথ?
View this post on Instagram
প্রথমত, ইস্টবেঙ্গলের সামনে এই মুহূর্তে যেটা সবচেয়ে বড় চিন্তা, তা হল তারকা ফুটবলারদের ইনজুরি। দলের কিছু গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় যেমন আনোয়ার আলি, সাউল ক্রেসপো এবং মহম্মদ রাকিপ, প্রভাত লাকরার চোট নিয়ে কিছুটা সন্দেহ রয়েছে। তাদের অনুপস্থিতি দলকে বড় আঘাত দিতে পারে, কারণ তারা সকলেই একক দক্ষতায় ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন। বিশেষ করে আনোয়ার আলি, যিনি রক্ষণভাগে দলের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ। তার না খেলা ইস্টবেঙ্গলের জন্য এক বড় ধাক্কা হতে পারে। ক্রেসপো এবং রাকিপের অনুপস্থিতিতেও মাঝমাঠে শক্তির ঘাটতি দেখা দিতে পারে, যা কেরালার বিরুদ্ধে তাদের গেম প্ল্যানকে আরও জটিল করে তুলবে।
কেরালা ম্যাচে লাল-হলুদের নতুন দায়িত্ব পাচ্ছেন এই ফুটবলার
তবে, ইস্টবেঙ্গল যে কেবল ইনজুরি সমস্যায় ভুগছে তা নয়। তাদের সাম্প্রতিক ফর্মও উদ্বেগজনক। লাল-হলুদ ব্রিগেড গত তিন ম্যাচে পরপর পরাজিত হয়েছে, যা তাদের প্লে-অফের যাত্রাকে অনেকটা কঠিন করে দিয়েছে। এখন তাদের হাতে মাত্র ৮টি ম্যাচ বাকি এবং এই বাকি ম্যাচগুলিতে যদি তারা জিততে না পারে। তবে আইএসএলের এই মরসুমে তাদের প্লে-অফে যাওয়ার আশা কার্যত শেষ হয়ে যাবে। এই পরিস্থিতিতে, আগামী ম্যাচটি তাদের জন্য রূপকথার মতো এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হতে চলেছে।
আর এই বিপর্যয়ের মধ্যে একটি আশার আলো দেখা দিয়েছে রিচার্ড সেলিসের উপস্থিতি। গত ম্যাচে, তিনি ইস্টবেঙ্গলের জার্সিতে ডেবিউ করেছিলেন এবং ফর্মে থাকা এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে তার পারফরম্যান্স নজর কেড়েছিল। সেলিস ২৮ বছর বয়সি একজন দক্ষ উইঙ্গার, যিনি তার গতিশীলতা এবং দক্ষতায় ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন। তার এই পারফরম্যান্স থেকে ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকরা নতুন আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন।
মহাকুম্ভে মেসি-রোনাল্ডো? ভাইরাল ভিডিয়োতে স্তম্ভিত নেটিজেনরা
এদিকে, কেরালা ব্লাস্টার্সের পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। তাদের শিবিরে অনেকটাই ইতিবাচক শক্তি রয়েছে, এবং প্লে-অফে টিকিট নিশ্চিত করতে তারা মরিয়া। ব্লাস্টার্সদের স্পষ্ট লক্ষ্য, তারা শেষ পর্যন্ত প্লে-অফে পৌঁছাতে পারে কিনা, তা নিশ্চিত করতে, তারা প্রতিটি ম্যাচকে নিজেদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে। এর ফলে, কেরালার বিরুদ্ধে এই ম্যাচে তাদের পরিকল্পনাও অত্যন্ত পরিকল্পিত ও শক্তিশালী হতে চলেছে।
ইস্টবেঙ্গল যদি এই ম্যাচে হেরে যায়, তবে তাদের সমর্থকদের ক্ষোভের ঝড় শুরু হতে পারে। কারণ, লাল-হলুদ ব্রিগেডের সমর্থকরা চিরকালই দলের প্রতি গভীর আস্থা রেখেছেন। কিন্তু এই ধরনের পারফরম্যান্স তাদের হতাশ করতে পারে। যদিও বর্তমান চোট সমস্যাগুলো ইস্টবেঙ্গলকে কিছুটা পিছিয়ে দিয়েছে, তবে সেলিসের মতো একজন তারকা খেলোয়াড়ের উপস্থিতি দলটিকে কিছুটা সঞ্জীবিত করতে পারে।
ব্রুজো কি পারবে মশাল জ্বালাতে? দেখে নিন সম্ভাব্য একাদশ
এই ম্যাচে, সঠিক পরিকল্পনা এবং সঠিক খেলোয়াড়দের সঠিক জায়গায় রাখার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে। কেরালার বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গল যদি সামনের লড়াইয়ে জিততে পারে। তবে তাদের আত্মবিশ্বাস অনেকটা বাড়বে এবং প্লে-অফের পথে কিছুটা সুযোগ তৈরি হতে পারে। তবে, ফল যদি বিপরীত হয়, তবে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠবে।