ইন্ডিয়ান সুপার লিগের (ISL) চলতি মরসুমে খুবই কঠিন পরিস্থিতে ইস্টবেঙ্গল এফসি (East Bengal FC)। একের পর এক ম্যাচে পরাজয়, তার উপর দলের মধ্যে চোট সমস্যা দলের পারফরম্যান্সকে আরও দুর্বল করে তুলছে। যার ফলে দলের ফর্ম মন্দের ভাল হলেও, জয় থেকে অনেক দূরে। বিশেষ করে রাইটব্যাক পজিশনে থাকা ফুটবলারদের চোট নিয়ে বাড়তি উদ্বেগ দেখা যাচ্ছে। এই কারণে কেরালা ব্লাস্টার্সের (KeraLa Blasters) বিরুদ্ধে দলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। এবার সেই চ্যালেঞ্জ নিতে তৈরি অস্কার ব্রুজোর (Oscar Bruzon) ছাত্ররা।
মহাকুম্ভে মেসি-রোনাল্ডো? ভাইরাল ভিডিয়োতে স্তম্ভিত নেটিজেনরা
গত কিছু ম্যাচে দলের অন্যতম সেরা রাইটব্যাক মহম্মদ রাকিপ ও প্রভাত লাকড়া চোটের কবলে পড়ে মাঠের বাইরে চলে গেছেন। তাদের অনুপস্থিতিতে, দলের রাইটব্যাক পজিশন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর ফলে, কেরালা ব্লাস্টার্সের বিপক্ষে ম্যাচে রাইটব্যাক হিসেবে মাঠে নামবেন কে? এই নিয়ে জল্পনা চলছে। তবে লাল-হলুদ কোচ অস্কার ব্রুজো এরই মধ্যে তার পরিকল্পনা সাজিয়ে ফেলেছেন। ম্যাচের আগে অনুশীলনে দেখা যায়, রাইটব্যাক হিসেবে খেলানো হচ্ছে জিকসন সিংকে (Jeakson Singh)। যিনি এর আগে কখন এই পজিশনে খেলেননি। একাধিক নতুন পদক্ষেপ নিয়ে দলের কাঠামো ঠিক রাখার চেষ্টা করছেন ব্রুজো। যদিও রাইটব্যাকের সমস্যাটি দলের জন্য উদ্বেগের কারণ, তবুও কোচ আশাবাদী যে দল কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে ভালো ফল করতে পারবে।
ব্রুজো কি পারবে মশাল জ্বালাতে? দেখে নিন সম্ভাব্য একাদশ
এদিনের অনুশীলনে আরেকটি আশাব্যঞ্জক খবর ছিল দলের আক্রমণের দিকে মনোযোগ দেওয়া। সম্ভবত কোচ ব্রুজো দলের আক্রমণ নিয়ে বেশ কিছু পরিবর্তন আনছেন। বিশেষ করে নবাগত বিদেশি রিচার্ড সেলিসকে (Richard Celis) আক্রমণের মূল শক্তি হিসেবে রেখে। সেলিস তার অভিষেক ম্যাচে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে নজর করেছিলেন সমর্থকদের। এদিনও তাকে মাঠে রেখে কোচ মূলত আক্রমণের শক্তি বাড়ানোর চেষ্টা করবেন। এর ফলে, আক্রমণাত্মক খেলায় আরও তেজী হতে পারে দল, যা ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
এছাড়া, দলের মিডফিল্ডের শক্তি বাড়াতে ফেরানো হয়েছে বাঙালি মিডফিল্ডার সৌভিক চক্রবর্তীকে (Souvik Chakrabarti)। তিনি ইনজুরির কারণে কিছুদিন মাঠের বাইরে ছিলেন, তবে গত ম্যাচে কার্ড সমস্যায় মাঠে নামতে পারেননি তিনি। সৌভিকের ফিরে আসা দলের জন্য নিঃসন্দেহে একটি বড় ইতিবাচক ঘটনা, কারণ তার অভিজ্ঞতা ও কৌশল দলের মাঝমাঠে শক্তিশালী উপস্থিতি তৈরি করবে।
জেতা ম্যাচ হাতছাড়া করে খেলোয়াড়দের দুষলেন জামিল
তবে, দলের চোট সমস্যা একেবারেই কাটছে না। ইতিমধ্যেই দলের দুই নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার আনোয়ার আলি ও সউল ক্রেসপো ইনজুরির কারণে এই ম্যাচে নেই। আনোয়ার আলি, যিনি দলের একটি বড় শক্তি, চোটের কারণে দলের সঙ্গে অনুশীলন করতে পারেননি। অন্যদিকে, সউল ক্রেসপো এখনও তার রিহ্যাব প্রক্রিয়ায় রয়েছেন। তাদের অনুপস্থিতিতে, ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণভাগে কিছুটা শূন্যতা তৈরি হবে, যা কেরালা ব্লাস্টার্সের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
এছাড়া, দলের ফর্মেশনও বেশ কয়েকটি ম্যাচে বদলে গেছে। কোচ ব্রুজো বিভিন্ন পজিশনে ফুটবলারদের পরীক্ষা করেছেন, যাতে একাধিক সমস্যার সমাধান বের করা যায়। তবে, খেলোয়াড়দের চোটের কারণে পুরো দল মিলে একটি সুনির্দিষ্ট সিস্টেম তৈরি করা এখনও সম্ভব হয়নি। ফলে, দলের খেলার ধরণ কিছুটা অস্থিতিশীল হতে পারে। বিশেষ করে এমন একটি ম্যাচে যেখানে জয় ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।
আলবার গোলে বাজিমাত! বহুদিন পর ঘরের মাঠে জয় হায়দরাবাদের
ইস্টবেঙ্গলের সামনে এখনও বড় চ্যালেঞ্জ। আইএসএলে প্রথম ছয়ে জায়গা করে নেওয়ার স্বপ্ন এখন প্রায় শেষের পথে। তবে দলের বর্তমান পরিস্থিতি থেকেও তারা যদি ঘুরে দাঁড়াতে পারে। তাহলে আগামীদিনের জন্য বড় সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে জয় প্রাপ্তি তাদের এই মরসুমে ফিরে আসার শেষ সুযোগ হয়ে দাঁড়াবে।