অভিষেকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ রাজ্য বিজেপির (BJP) প্রাক্তণ সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। শুধু প্রশংসাই নয়, অভিষেককে (Abhishek Banerjee) কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) চেয়েও ভালো নেতা বললেন তিনি। এই মন্তব্যে রাজনীতির অন্দরমহলে শুরু হয়েছে তুমুল চর্চা।
মেদিনীপুরে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী সুজয় হাজরা, শুভেন্দু গড়েই ফুটল ‘জোড়া ফুল’
একটি টেলিভিশন চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে দিলীপ ঘোষ বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমি রাহুল গান্ধীর থেকে ভাল নেতা মনে করি। রাহুল গান্ধীর চেয়ে অভিষেকের কথাবার্তা অনেক বেশি বুদ্ধিদীপ্ত।” বরাবরই তৃণমূল বিরোধী অবস্থান বজায় রাখা দিলীপ ঘোষের মুখে এমন প্রশংসা শোনা বিরল ঘটনা।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মন্তব্য দিলীপ ঘোষের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ইঙ্গিত হতে পারে। অতীতে তৃণমূল কংগ্রেসে বিজেপি থেকে যোগদানের নজির রয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাধ্যমেই। ফলে দিলীপের বক্তব্য অনেকেই নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ হিসেবে দেখছেন।
তবে দিলীপ ঘোষ ঠিক কী কারণে এই মন্তব্য করলেন, তা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত রাজনৈতিক মহল। একাংশের মতে, এটি নিছকই রাজনৈতিক সৌজন্য। অন্যদিকে, আরেক অংশের মতে, দিলীপ ঘোষ বিজেপির বর্তমান নেতৃত্বের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়ায় নতুন শিবিরের সন্ধান করছেন।
উপনির্বাচনে ছক্কা হাঁকানোর পর সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যে বিজেপি নেতৃত্বের অস্বস্তি আরও বেড়েছে বলেই ধারণা। বরাবরই সোজাসাপ্টা এবং আক্রমণাত্মক বক্তব্যের জন্য পরিচিত দিলীপ ঘোষ, এবার তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে দলের অভ্যন্তরে একটি বার্তা দিতে চাইছেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে এখনো পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে দলের অন্দরমহলে এই মন্তব্য নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা শুরু হয়েছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে অবশ্য এই বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি।
দিলীপ ঘোষের মন্তব্যে একদিকে যেমন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক দক্ষতার প্রশংসা করা হয়েছে, তেমনি রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বের প্রতি বিজেপির দীর্ঘদিনের কটাক্ষও সামনে এসেছে। রাহুলকে বুদ্ধিদীপ্ত নয় বলে ইঙ্গিত করে দিলীপ কার্যত তার দলের প্রচলিত অবস্থানকেই প্রকাশ্যে এনেছেন।
ঝাড়খণ্ডে হেমন্তের ধাক্কায় বিচূর্ণ বিজেপি, ধোপে টিকল না ‘অনুপ্রবেশ’ ইস্যু
এই মন্তব্যের পর রাজনৈতিক মহলে দিলীপ ঘোষের দলবদলের সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। দিলীপ ঘোষ কি সত্যিই তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন? যদিও এখনই এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়, তবে অতীতে দেখা গেছে যে রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু হয় না।
বঙ্গ রাজনীতির মঞ্চে দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্য নতুন চমক এনে দিয়েছে। একদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বের প্রতি প্রশংসা, অন্যদিকে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে তুলনা করে তাকে ‘বুদ্ধিদীপ্ত’ আখ্যা দেওয়ার পেছনে দিলীপ ঘোষের কৌশল কী, তা স্পষ্ট নয়। তবে এই মন্তব্য শুধু সৌজন্য নয়, বরং একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক সমীকরণের অংশ হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।