দুর্গাপুজোর জন্য বন্ধ লন্ডন ব্রিজ

লন্ডন: প্রতি বছর ইংল্যান্ডে বাঙালি প্রবাসীদের উদ্যোগে দুর্গাপুজো (Durga Puja) ধুমধাম করে পালিত হয়। ভারতীয় এবং বাঙালি সংস্কৃতি লালন করার এ এক অসাধারণ প্রচেষ্টা যেখানে…

London Bridge Temporarily Closed for Vibrant Durga Puja Celebrations

short-samachar

লন্ডন: প্রতি বছর ইংল্যান্ডে বাঙালি প্রবাসীদের উদ্যোগে দুর্গাপুজো (Durga Puja) ধুমধাম করে পালিত হয়। ভারতীয় এবং বাঙালি সংস্কৃতি লালন করার এ এক অসাধারণ প্রচেষ্টা যেখানে কলকাতা থেকে প্রায় আট হাজার কিলোমিটার দূরেও মায়ের আগমন ও বিসর্জনের আনন্দ সমানভাবে উপভোগ করা হয়। পাঁচদিনব্যাপী এই পুজোতে প্রতিবারের মতো এবারও আয়োজনের কোনো খামতি নেই। পুজো পরবর্তী টেমস নদীতে দুর্গা প্যারেড এবছরও পুজোর অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এবারের টেমস প্যারেডে বিশেষ রীতি হিসেবে যুক্ত হয়েছে “সাত সমুদ্র তেরো নদী ওয়াটার রিচুয়াল,” যা ইতিমধ্যেই ইংল্যান্ডের বাঙালিদের মধ্যে উৎসাহের সঞ্চার করেছে।

   

লন্ডন ব্রিজে বন্ধ যান চলাচল ও স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা
দুর্গা পুজোর কারণে লন্ডন ব্রিজে যানবাহন চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়, এবং এ জন্য স্থানীয় প্রশাসন পুরোপুরি সহায়ক ভূমিকা পালন করে। প্রশাসনের তরফ থেকে প্যারেডের সময় ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ, সিকিউরিটি ব্যবস্থা ও জল পরিবহন ব্যবস্থা ঠিকঠাক রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এই প্যারেডে অংশ নিতে বাঙালি প্রবাসীদের পাশাপাশি অন্যান্য ভারতীয় সম্প্রদায়ও উপস্থিত থাকেন, এবং তাদের সমর্থন এই উৎসবকে আরও সফল করে তোলে।

ভক্তদের উদ্দীপনা ও উৎসবের পরিবেশ
ইংল্যান্ডে বসবাসরত বাঙালিরা দুর্গাপুজোকে তাদের শিকড়ের সাথে পুনঃসংযোগের মাধ্যম হিসেবে দেখেন। এবছরও একই রকম আবেগের স্রোত বয়ে যায় পুজো মণ্ডপে। পুজোর পাঁচদিন ধরে চলছে ভক্তিমূলক গান, ধর্মীয় আলোচনা, খাবারের আয়োজন এবং নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এমনকি ছোটদের জন্য প্রতিযোগিতা, কুইজ প্রোগ্রাম, এবং ধর্মীয় প্রবন্ধ পাঠেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর পাশাপাশি ছিল সিঁদুর খেলা এবং ধুনুচি নাচের প্রতিযোগিতা যা দেখতে প্রচুর ভিড় জমে।

প্রবাসে পুজো, মায়ের কাছে ফেরার অনুভূতি
প্রবাসে বসবাসরত প্রত্যেক বাঙালির কাছে দুর্গাপুজো মানেই মায়ের কাছে ফেরা, শিকড়ের টান অনুভব করা। লন্ডনের টেমস নদীতে দুর্গা প্যারেড একটি উল্লেখযোগ্য অনুষ্ঠান হয়ে উঠেছে। বিশেষত, লন্ডন ব্রিজে পূজোর বিসর্জনের আয়োজন বাঙালির ঐতিহ্যের পাশাপাশি তাদের একাত্মবোধের দৃষ্টান্ত। এইসব আয়োজনের মাধ্যমে তারা প্রমাণ করছে যে হাজার মাইল দূরে থেকেও তারা তাদের সংস্কৃতিকে লালন করতে ভুলছেন না।
এইবারের পুজো এবং “সাত সমুদ্র তেরো নদী ওয়াটার রিচুয়াল” ইংল্যান্ডের বাঙালি কমিউনিটিতে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে, এবং এটি একদিকে যেমন প্রবাসে বাঙালি ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে, তেমনই প্রবাসীদের হৃদয়ে কলকাতার পুজোর আমেজকে জীবন্ত করে রেখেছে।