অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারদের কাছে অনেক মর্যাদার ব্যাগি গ্রিন। অভিষেকে পাওয়া ক্যাপ তুলে ধরে তাঁদের মাহাত্ম্য, গর্ব আর ত্যাগের ইতিহাস। অবশ্য ডেভিড ওয়ার্নারের ক্ষেত্রে বিষয়টি একটু আলাদা। ২০১৮ সালে কেপটাউন টেস্টে বল টেম্পারিংয়ে জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় ডেভিড ওয়ার্নারকে ১ বছর নিষিদ্ধ করেছিল ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। একই সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে আর কোনো দলকে কখনো নেতৃত্ব দিতে পারবেন না, এমন নিষেধাজ্ঞাও দেওয়া হয়েছিল। সাড়ে ৪ বছরের বেশি সময় পর সেই আজীবন নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পেলেন ওয়ার্নার (David Warner Ban Lifted)। এবার নিজ দেশের যে কোনো দলের অধিনয়ক হতে পারবেন তিনি। অর্থাৎ অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ লিগের আগামী মরসুমেই সিডনি থান্ডারের অধিনায়ক হতে আর কোনও বাধা নেই তাঁর।
গতকাল ৩৭ বছর বয়সী এই ওপেনার তিন সদস্যের একটি প্যানেলের সামনে নিজের আবেদন উপস্থাপন করেন। আসলে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া মূল রায় থেকে কিছুটা স্বস্তি পেতেই ছিল ওয়ার্নারের এই প্রয়াস। অবশেষে প্যানেলটি সবকিছু পর্যালোচনা করে দেখেছে , শাস্তি পাওয়ার পর থেকে ওয়ার্নার কিভাবে তাঁর কর ভুলের জন্য ‘সম্মানজনক ও অনুশোচনাপূর্ণ’ আচরণ করেছেন।
শুধু শাস্তি কমানোর ব্যাপারেই ওয়ার্নারের আবেদন ছিল এমনটি নয়। এদিন নিজের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের দায়ও স্বীকার করেছেন তিনি। যদিও নিজের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার জন্য একপ্রকার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন তিনি। তাই প্রাক্তন অস্ট্রেলিয়ার ওপেনারের সমস্ত বক্তব্যের ভিত্তিতে অবশেষে তিন সদস্যের প্যানেল আজ সর্বসম্মতভাবে ওয়ার্নারের ওপর থেকে আজীবন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার ঘোষণা করে।
David Warner’s lifetime leadership ban lifted 6 years after ball-tampering scandal
DETAILS: https://t.co/EXCkXhhztc#DavidWarner #CricketAustralia @davidwarner31
— TOI Sports (@toisports) October 25, 2024
এ বছরের শুরুতেই টেস্ট ও ওয়ানডেকে বিদায় বলেছেন ওয়ার্নার। গত জুনে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইট পর্ব থেকে অস্ট্রেলিয়া ছিটকে পড়লে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ততম সংস্করণ থেকেও অবসর নিয়ে নেন তিনি। তবে অবসর নিলেও বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক লিগ খেলে বেড়াচ্ছেন ওয়ার্নার। অবশ্য সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, অবসর ভেঙে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে তিনি প্রস্তুত। বিশেষত আসন্ন বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি (Border–Gavaskar Trophy) খেলতে বেশ মুখিয়ে রয়েছেন তিনি।
এদিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আবেদনে ওয়ার্নার রেফারেন্স হিসেবে অস্ট্রেলিয়া দলের কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড ও অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের নাম উল্লেখ করেন। নিউজিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক কেইন উইলিয়ামসনও তাঁকে সমর্থন জানান। আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি সানরাইজার্স হায়দরাবাদে একসময় সতীর্থ ছিলেন উইলিয়ামসন ও ওয়ার্নার।
পুরুষদের ‘অতিসুন্দর’ সাফল্যের পর মহিলাদের ‘দীপ্তির’ ঝলকে ব্যাকফুটে নিউজিল্যান্ড
২০১৮ সালের মার্চে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কেপটাউন টেস্টে সিরিশ কাগজ দিয়ে বল টেম্পারিং কাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন ওয়ার্নার। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তাঁকে সহযোগিতা করেন সেই সময়ের অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ ও ব্যাটসম্যান ক্যামেরন ব্যানক্রফট। টিভি ক্যামেরায় বল বিকৃতির দৃশ্য স্পষ্ট ধরা পড়ে। আর সেই ঘটনার জেরেই এই তিন ক্রিকেটারকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। পরে অবশ্য নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় অস্ট্রেলিয় ক্রিকেট বোর্ড।
রিভিউ নিতেই ধুন্ধুমার কান্ড! সরফরাজের দক্ষতায় ‘তাজ্জব’ রোহিত
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পাওয়ায় আগামী বিগ ব্যাশ লিগে সিডনি থান্ডারকে নেতৃত্ব দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে ওয়ার্নারের (David Warner Ban Lifted)। এ ব্যাপারে সিএর প্রধান নির্বাহী নিক হকলি বলেছেন, ‘আমি সন্তুষ্ট যে ডেভিড ওয়ার্নার তার ওপর নিষেধাজ্ঞার শাস্তি পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে এই মৌসুমেই অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটে অধিনায়কের পদ ফিরে পাওয়ার জন্য বিবেচিত হবে।’