উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদের ( Ghaziabad) ক্রসিং রিপাবলিক থানার অধীনে এক অস্বাভাবিক এবং ভয়াবহ ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, GH-7 সোসাইটিতে এক গৃহপরিচারিকা রীনা (পুলিশের দেওয়া পরিচয় অনুযায়ী) ময়দার আটা তৈরি করার সময় তাতে প্রস্রাব (Urine in Flour Dough) মেশানোর অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন। এই ঘটনাটি গাজিয়াবাদের ওয়েভ সিটির অধীনে ঘটেছে, যেখানে সোসাইটির বাসিন্দারা এমন ঘটনার শিকার হয়ে হতভম্ব।
অভিযোগের বিবরণ
এই অস্বাভাবিক ঘটনার সূত্রপাত ঘটে ১৪ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে, যখন ক্রসিং রিপাবলিক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এক মহিলা বাসিন্দা। তিনি অভিযোগ করেন যে, তার ফ্ল্যাটে কাজ করা গৃহপরিচারিকা রীনা আটার মধ্যে প্রস্রাব মিশিয়ে আটা তৈরি করছিলেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ দ্রুত তদন্তে নামে এবং ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে শুরু করে।
ওয়েভ সিটির কমিশনার অফ পুলিশ (CP) লিপি নগায়াচ বলেন, “১৪ অক্টোবর ক্রসিং রিপাবলিক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল যে GH-7 সোসাইটির এক বাসিন্দার ফ্ল্যাটে কাজ করা গৃহপরিচারিকা রীনা আটা মাখার সময় তাতে প্রস্রাব মিশিয়েছিলেন। এর প্রেক্ষিতে আমরা তৎক্ষণাৎ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিই।”
রীনার গ্রেফতার
অভিযোগ পাওয়ার পর, পুলিশের একটি বিশেষ দল গঠন করা হয় অভিযুক্তকে গ্রেফতারের জন্য। তারা তদন্ত শুরু করে এবং ১৫ অক্টোবর GH-7 সোসাইটির থেকে রীনাকে গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে তিনি পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন এবং তার বিরুদ্ধে আইনের প্রাসঙ্গিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তারা আরও তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং এই মামলায় প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
#WATCH | Uttar Pradesh: A woman, identified by Police as Reena, arrested by Crossings Republic PS team for allegedly mixing urine to make flour dough at a flat in a residential society in Ghaziabad.
(Video: Ghaziabad Police) pic.twitter.com/I0gXGfFcRv
— ANI (@ANI) October 16, 2024
আইনি পদক্ষেপ ও তদন্ত
এই ধরনের ভয়াবহ ঘটনা সোসাইটির বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে। রীনার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির প্রাসঙ্গিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে এবং পুলিশ ইতিমধ্যেই মামলার অগ্রগতির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। ক্রসিং রিপাবলিক থানার পুলিশ দল নিশ্চিত করেছে যে, এই ঘটনায় তারা দ্রুত এবং কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
সমাজের প্রতিক্রিয়া
এমন ভয়াবহ ঘটনার সংবাদ প্রকাশ্যে আসতেই, GH-7 সোসাইটির অন্যান্য বাসিন্দারা হতবাক এবং আতঙ্কিত। এই ঘটনা পুরো সোসাইটির মধ্যে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছে এবং গৃহপরিচারিকা নিয়ে মানুষের মধ্যে ব্যাপক আস্থা হারিয়েছে। অনেকেই তাদের গৃহপরিচারিকাদের কর্মশক্তি এবং আচরণ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন।
সোসাইটির এক বাসিন্দা বলেছেন, “এমন একটি ঘটনা শুনে আমি খুবই আতঙ্কিত। আমরা যাদের ওপর ভরসা করি, তারা যদি এমন কাজ করে, তবে আমরা আর কাকে বিশ্বাস করব? প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে এবং এমন অপরাধের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।”
পুলিশের আশ্বাস
পুলিশ ইতিমধ্যেই বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করেছে যে, তারা তদন্তে সর্বাত্মক পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে সোসাইটিতে সচেতনতা এবং নিরাপত্তার ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে। কমিশনার লিপি নগায়াচ বলেন, “আমরা সমাজের বাসিন্দাদের নিরাপত্তার জন্য সদা সতর্ক রয়েছি। এই ধরনের ঘটনা ঘটলে, দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা ইতিমধ্যেই এই ঘটনার পূর্ণ তদন্ত শুরু করেছি এবং অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করব।”
#WATCH | ACP Lipi Nagayach of Wave City in Ghaziabad says, “On 14th October, a written complaint was lodged at Crossings Republic PS by a complainant that a domestic help at her flat, Reena mixed urine to make flour dough. A case under relevant sections was registered at the PS.… pic.twitter.com/VwUZTxM3MP
— ANI (@ANI) October 16, 2024
গাজিয়াবাদের GH-7 সোসাইটিতে ঘটিত ময়দায় প্রস্রাব মেশানোর এই ঘটনা সবার মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এবং গৃহপরিচারিকা নিয়ে মানুষের আস্থার উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে। প্রশাসন এবং পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপ প্রশংসনীয় হলেও, এই ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে আরও কঠোর আইন এবং নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন। সমাজের বাসিন্দারা যাতে তাদের দৈনন্দিন জীবনে সুরক্ষিত এবং নিরাপদ বোধ করতে পারেন, সেদিকে প্রশাসনের বিশেষ নজর দেওয়া উচিত