আদিত্য ঘোষ, কলকাতা: রবিবারের রাত। তখন ঘড়িতে রাত দশটা। ছবির জন্য সিনেমা হল ভিজিট করার কথা ছিল মনে হলো। ফোনটা বেজে গেল। এখন পর্যন্ত ‘আলাপ ‘ নিয়ে বেশ রমরমা খবর ছুটে আসছে। অনেকে লিখছেন ‘ এই গরমে অল্প একটু বসন্তের ছোঁয়া।’ আবার একজন দেখলাম লিখেছেন, ‘ এই রকম প্রেমের ছবি বাংলায় খুব হোক।’ এছাড়াও আরও হইহই রব উঠেছে। এসবের মাঝে স্বস্তিকার (Swastika Dutta) ফোন তো বেজে যাওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু রিং ব্যাক করল স্বস্তিকা। কথা হলো দীর্ঘ। আমাদের স্বল্পসময়ের আলাপ ঘিরে থাকল সিনেমার আলাপকে।
স্বস্তিকা কতটা স্বাতীলেখা হয়ে উঠতে পারল, সেটা না হয় দর্শকেরা ঠিক করবে কিন্তু স্বস্তিকার কথায়, ” আগামী পাঁচ বছর চুটিয়ে অভিনয় করব। কারণ সব কিছুরই তো একটা বয়স হয়, তাই আমার ইচ্ছে আগামী পাঁচ বছর শুধু কাজটাই। বাকি সব আউট অফ সাইট আউট অফ মাইন্ড।” জিজ্ঞাসা করলাম, ” আলাপের শুরু কী করে?” স্বস্তিকা একটু থামল, ভেবে বলল, ” সবটাই আমাদের পরিচালক কৃষ্ণেদু বিকাশ চাকী স্যারের পরিকল্পনা। উনিই আমাকে ডেকেছিলেন। তারপরেই কাজ শুরু।” তুমি কি এই সিনেমার সেকেন্ড লিড?” স্বস্তিকা একটু নীচু স্বরে বলল, ” এখানে ফার্স্ট, সেকেন্ড বলে কিছু নেই। আমাদের গল্পটাই শেষ কথা। আমার চেয়েছি সিনেমার ওই প্রথাকে ভাঙতে।”
একটু থেমে স্বস্তিকা আবার শুরু করল, ” এটা গল্পপ্রধান সিনেমা। এখানে হিরো, হিরোইন এইগুলো ফ্যাক্টর না। এটি একদম পারিবারিক ছবি। আট থেকে আশি সবাই দেখতে পারেন।” জিজ্ঞাসা করলাম, ” আবীর এবং মিমি চক্রবর্তীর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন?” স্বস্তিকা উচ্ছ্বসিত হয়ে বলল, ” দারুন অভিজ্ঞতা। এত সিনিয়র এবং নামী সেলিব্রেটি হয়েও তারা যে সহঅভিনেতাকে এত স্পেস দেন, এটাই সবচেয়ে বড় ব্যাপার। আর দেখতে দেখতে আবীরদার সঙ্গে এইটা আমার তৃতীয় কাজ হয়ে গেল।”
একটু থেমে স্বস্তিকা আরও জানাল যে, ” মিমিদির মতো মানুষ দেখিনি। মিমিদি একজন স্টার। একজন কাল্ট অভিনেত্রী তিনি। আর কেউ মিমিদি হবে না।” আলাপের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে তিনি বললেন, ” এক জায়গায় শুটিং হচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবে সেখানে সাধারণ মানুষ ভিড় করেছে। মিমিদি নিজের নিরাপত্তা রক্ষীকে বলছে ওদের কাউকে কিছু বলবে না। ওরা কোনও ক্ষতি করবে না। ওরা শুটিং দেখতে এসেছে। তাহলে ভাব উনি একজন কত বড় মাপের অভিনেত্রী।”
তিনি আরও বললেন, ” ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পরে প্রথম মিমিদি ফোন করে বলেছে তুই একা একটা সিনেমাকে টেনে নিয়ে যেতে পারবি। তোর সে ক্ষমতা আছে।” গর্বে কি বুকের ছাতি ফুলে ঢোল হয়ে গিয়েছে? নাকি স্বস্তিকা এখনও মাটির কাছাকাছিই থাকতে চান ? তিনি বললেন,” কাজটাই আসল। সেটা সিরিয়ালও হতে পারে। আবার ওয়েবও হতে পারে। কাজটাই আমাকে বাঁচিয়ে রাখে। সব ব্যথা ভুলিয়ে রাখে।” ব্যথার কথায় মনে হলো, ” পুরোনো প্রেমের ব্যথা কি আজও ব্যথা দেয়?” তিনি হাসতে হাসতে বলল, ” সব কিছুর ওষুধ কাজ।” জিজ্ঞাসা করলাম, ” বাংলা দর্শকে কি হলমুখী করতে পারবে আলাপ?” তিনি হাসতে হাসতে বললেন, ” ওটাই তো চ্যালেঞ্জ। করতেই হবে।”