News Desk, New Delhi: কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিনে (Narendra Modi Birthday) গোটা দেশে রেকর্ড সংখ্যক আড়াই কোটি মানুষকে করোনার টিকা (vaccination) দেওয়া হয়েছে বলে ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার নেমেছিল কেন্দ্রীয় সরকার (central government)। দল হিসেবে বিজেপিও বিষয়টি নিয়ে ঢাক পেটাতে শুরু করেছিল। কিন্তু কেন্দ্রের এই দাবি নিয়ে প্রথম থেকেই সন্দিহান ছিল তৃণমূল কংগ্রেস (trinamul congress) নেতৃত্ব। সেই সন্দেহ যে অমূলক ছিল না সেটা কেন্দ্রীয় সরকার নিজেই স্বীকার করল শুক্রবার।
এদিন টিকাকরণের রেকর্ড নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কাছে একাধিক প্রশ্ন রাখেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি কেন্দ্রের কাছে জানতে চান, রেকর্ড টিকাকরণের দিন ভ্যাকসিন পাননি বা মৃত মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে এমন ভুরি ভুরি অভিযোগ উঠেছে। এটা কি ঠিক? যদি এটা হয়ে থাকে তবে কেন্দ্র এ বিষয়ে কী চিন্তা ভাবনা করছে? অভিষেক আরও জানতে চান রেকর্ডসংখ্যক আড়াই কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার মধ্যে মৃত এবং ভ্যাকসিন না পাওয়া মানুষের নামগুলিও কি যুক্ত আছে? ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ভুল না হয় তার জন্য কেন্দ্র কি কোনও পরিকল্পনা করেছে?
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ভারতী প্রবীণ পাওয়ার এদিন জানিয়েছেন, এ ধরনের কিছু ছোটখাটো ভুলের কথা তাঁদের নজরে এসেছে। এটা নিতান্তই বিচ্ছিন্ন ব্যাপার। ভুরি ভুরি এমন অভিযোগ উঠেছে এটা ঠিক নয়। কয়েকটি ক্ষেত্রে মৃত মানুষের নাম বা ভ্যাকসিন পাননি এমন মানুষের নামও ভ্যাকসিন প্রাপকের তালিকা উঠে গিয়েছে। এমনকী, তাঁদের নামে ভ্যাকসিন নেওয়ার শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। তবে এই অভিযোগ অত্যন্ত সামান্য কয়েকটি ক্ষেত্রে উঠেছে। যারা ডেটা এন্ট্রির দায়িত্বে ছিলেন তাদের ভুলের জন্যই এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। যে সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মী ডেটা এন্ট্রির কাজ করছিলেন তাঁরা দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার তথ্য সঠিকভাবে আপডেট না করায় এ ধরনের কিছু ভুল হয়েছে। এই ভুল সংশোধন করার জন্য বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে অনুরোধ জানান হয়েছে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই উত্তরে এটা পরিষ্কার হয়ে গেল যে, তৃণমূল কংগ্রেস এতদিন ধরে য অভিযোগ করে আসছিল সেটা ঠিক। অর্থাৎ মোদীর জন্মদিনে রেকর্ড সংখ্যক মানুষকে টিকা দেওয়ার কথা বলতে গিয়ে কেন্দ্র ওই পরিসংখ্যানে অনেক জল মিশিয়েছে। রেকর্ডের কথা বলার জন্য ভ্যাকসিন নেয়নি এমন মানুষের নামও টিকা প্রাপকদের তালিকায় তুলে দেওয়া হয়েছে। এমনকী, মৃতদের নামেও শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র ভ্যাকসিন প্রাপকের সংখ্যা বাড়িয়ে দেখাতেই এটা করা হয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত নিন্দনীয়। মোদী সরকার জেনে-বুঝেই এটা করেছে। এখন নিরীহ ডেটা এন্ট্রি অপারেটরদের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে নিজেদের দোষ ঝেড়ে ফেলছে।
তবে অভিষেকের দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, কেন্দ্রের এদিনের জবাবে তারা যথেষ্ট বেকায়দায় পড়েছে। কারণ এই স্বীকারোক্তির মধ্য দিয়ে কেন্দ্র এটাই স্বীকার করে নিয়েছে যে, মোদীর জন্মদিনে আড়াই কোটি মানুষকে টিকা দিয়ে রেকর্ড গড়ার যে দাবি করা হয়েছিল তা একেবারেই ঠিক নয়। বরং এই পরিসংখ্যানে অনেকটাই জল মিশে রয়েছে।