নিউজ ডেস্ক, শ্রীনগর: শুক্রবার সকালে গুলির শব্দে ঘুম ভাঙল শ্রীনগরের রামবাগ (Rambagh) এলাকার মানুষের। কাশ্মীরে একটানা গোলাগুলির আওয়াজ স্থানীয় বাসিন্দাদের (local people) কাছে কিছু আশ্চর্যজনক ঘটনা নয়। এদিন নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের গুলির লড়াইয়ে চার জঙ্গি (terrorist) খতম হয়েছে। নিহতদের মধ্যে একজন লস্কর-ই-তৈবার শাখা সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টের শীর্ষস্থানীয় কমান্ডার। অন্য একজন হিজবুল মুজাহিদিন (hijbul mujahidin) জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্য।
জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের আইজি বিজয় কুমার জানিয়েছেন, গোপন সূত্রে খবর মেলে রামবাগ এলাকায় সশস্ত্র জঙ্গিদের একটি দল আত্মগোপন করে আছে। ওই খবরের ভিত্তিতে শুক্রবার ভোররাতে নিরাপত্তাবাহিনী গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে তল্লাশি চালাতে শুরু করে। বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে জঙ্গিরা ক্রমশ পিছু হটতে থাকে। কিন্তু চারি দিক থেকেই তল্লাশি অভিযান শুরু হওয়ায় জঙ্গিরা পালানোর সুযোগ পায়নি। তাই তারা গুলি চালাতে শুরু করে। সঙ্গে সঙ্গেই পাল্টা জবাব দেয় নিরাপত্তাবাহিনী। কিছুক্ষণ গুলির লড়াই চলার পর সংঘর্ষ বন্ধ হয়। এরপর তল্লাশি চালিয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর চার জঙ্গির দেহ উদ্ধার করে।
মৃতদের মধ্যে একজন লস্কর-ই-তৈবার শাখা সংগঠনের শীর্ষ কমান্ডার অপর এক জঙ্গি হিজবুল মুজাহিদীন গোষ্ঠীর সদস্য। তবে বাকি দু’জনের পরিচয় মেলেনি। অন্যদিকে, ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করায় নৌসেরা সেক্টর এক জঙ্গিকে গুলি করে মেরেছে নিরাপত্তা বাহিনী। বৃহস্পতিবার রাতে এই ঘটনা ঘটে।
সম্প্রতি কাশ্মীরে ফিরে এসেছে প্রায় ৩২ বছর আগের স্মৃতি। ১৯৮৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর জঙ্গিরা কাশ্মীরে টিকালাল তাপলু নামে এক হিন্দু ব্রাহ্মণকে হত্যা করেছিল। ওই কাশ্মীরি পন্ডিতকে খুনের পর গোটা উপত্যকায় ছড়িয়েছিল তীব্র আতঙ্ক। বেশিরভাগ কাশ্মীরি পন্ডিত পরিবার ঘর ছেড়ে পাড়ি দিয়েছিলেন ভিন রাজ্যে। তিন দশকেরও বেশি সময় পর আবারও জঙ্গিরা কাশ্মীরে সংখ্যালঘু ও পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর হামলা চালাতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই পরিযায়ী শ্রমিকরা অনেকেই প্রাণ বাঁচাতে কাজ ফেলে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। ফলে রাজ্যের আপেল চাষিরাও পড়েছেন চরম সঙ্কটে। সাধারণ নিরীহ মানুষের খুনের বদলা নিতেই সক্রিয় হয়ে উঠেছে নিরাপত্তাবাহিনী। তারই ফলশ্রুতিতে এবার সেনার হাতে খতম হল চার জঙ্গি।