বার বার কেঁপে উঠছে হিমালয় ঘেরা দেশ নেপালের মাটি! বার বার ভূমিকম্প এবং মৃত্যুর হাতছানি। কীসের ইঙ্গিত? শেষের শুরু? গত একমাসে তিনটে ভয়াবহ ভূমিকম্প। এখানেই কি থামবে প্রকৃতি? নাকি আরও হিংস্র হবে পৃথিবী? ভূকম্পবিদরা সকলকে সতর্ক থাকার বার্তা দিচ্ছেন। কারণ নেপালের কেন্দ্রীয় ভূমিস্তর সক্রিয়ভাবে কম্পন তালিকায়। এরফলে আরও বড় ভূমিকম্পের বার্তা আসছে। ২০১৫ সালে নেপালের ভূমিকম্পে ৯ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। শুক্রবার রাতে রিখটার স্কেলে ৬.৪ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রতিবেদন লেখার সময় (বেলা ১.৩০ মিনিট) অবধি ১৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত শতাধিক। নেপালের ভূমিকম্পের জেরে কম্পন অনুভূত হয় দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, বিহার এবং কলকাতাতেও।
অজয় পাল, একজন সিসমোলজিস্ট যিনি পূর্বে হিমালয়ান জিওলজির ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউটে সংযুক্ত। তিনি বলেছেন শুক্রবারের ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল নেপালের ডোটি জেলার কাছাকাছি অঞ্চলে। ২০২২ সালের নভেম্বরে একটি ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্প এই জেলায় ৬ জন মারা গিয়েছিলেন। অজয় পাল আরও বলেন, ৩ অক্টোবর নেপালে ধারাবাহিক ভূমিকম্পগুলিও একই এলাকার আশেপাশে হয়ে। তিনি বলেন, এই কম্পনগুলি নেপালের কেন্দ্রীয় বেল্টে অবস্থান করে, যদিও পশ্চিমে সামান্য। এই সিসমোলজিস্ট বলেন, জনগণকে সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে।
বেশ কিছু বিজ্ঞানী ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে হিমালয় অঞ্চলে ‘যেকোন সময়’ একটি বড় ভূমিকম্প আঘাত হানবে কারণ ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটটি উত্তরে সরে যাওয়ার সাথে সাথে ইউরেশিয়ান প্লেটের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। প্রায় ৪০-৫০ মিলিয়ন বছর আগে ইউরেশিয়ান প্লেটের সাথে সংঘর্ষের জন্য ভারতীয় প্লেট ভারত মহাসাগর থেকে উত্তরে চলে গেলে হিমালয় তৈরি হয়েছিল।
বিজ্ঞানীদের মতে, হিমালয়ের নিচে চাপ তৈরি হচ্ছে কারণ ভারতীয় প্লেট তার উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছে, ইউরেশিয়ান প্লেটের সাথে বিরোধ সৃষ্টি করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে হিমালয়ের উপর চাপ সম্ভবত এক বা একাধিক বড় ভূমিকম্পের মাধ্যমে মুক্তি পাবে, রিখটার স্কেলে আটের বেশি পরিমাপ করা হবে। তবে ঠিক কখন এত বড় ভূমিকম্প ঘটবে তা সঠিকভাবে অনুমান করার কোনো উপায় নেই।