বছরের কয়েকটা মাস। বাংলার আনাচেকানাচে থেকে উঠে আসেন একাধিক ফুটবলার। শোনা যায় ফুটবলের প্রতি প্রেম, জীবন সংগ্রামের বহু গল্প। ইন্ডিয়ান সুপার লীগের জমানায় কলকাতা ফুটবল লীগ কার্যত ফ্যাকাসে। কিন্তু গুরুত্বে আজও অমলীন। গ্রাম বাংলার বহু ঘরের ছেলেরা আজও স্বপ্ন দেখে কলকাতার কোনো ক্লাবে খেলার। সেই স্বপ্ন নিয়ে ক্রমে বেড়ে ওঠা। কেউ করে দেখান, অনেকে পারেন না। চাকদার অয়ন ভট্টাচার্য (Ayan Bhattacharya) করে দেখিয়েছেন।
ছোটবেলার ধান জমি থেকে কলকাতার মাঠে উঠে আসার গল্প লুকিয়ে রাখেননি অয়ন। সবার সামনেই তুলে ধরেছেন নিজের সংগ্রাম, লড়াইয়ের কথা। অয়নের এই উত্থান বাংলার বহু তরুণ প্রতিভার অনুপ্রেরণার উৎস হতে পারে। সামাজিক মাধ্যমে অয়ন লিখেছেন, “সালটা ২০১৩, আজ থেকে ঠিক দশ বছর আগে গ্রামের পাড়ার এক ধানের জমিতে খালি পায়ে ফুটবল খেলা শুরু করেছিলাম বন্ধুদের সঙ্গে। একদিন খেলতে যাওয়ার জন্য পাড়ার এক বন্ধুকে তাদের বাড়িতে ডাকতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি তাদের বাড়ির টিভিতে চলছে কলকাতা প্রিমিয়ার লীগের ম্যাচ।
যদিও তখন এই লীগ সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিল না। কারা খেলছেন, কীসের টুর্নামেন্ট ইত্যাদি ব্যাপারে কোনো ধারণাই তখন ছিল না। তবে টিভিতে সেই খেলা দেখি বন্ধুদের বলেছিলাম, চ আমরাও বুট পরে খেলি। তাহলে আমরাও ওদের মতো খেলতে পারবো। যদিও সেদিন বুট পরে খেলা হয়নি। কিন্তু দশ বছর পর ২০২৩ সালে সেই লীগ এখন আমার সামনে।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় অয়নের এই পোস্ট বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে ইতিমধ্যে। ময়দানের অনেকে লাইক করেছেন তার এই পোস্ট। ইতিমধ্যে খেলেছেন একাধিক ক্লাবে। শুরু করেছিলেন নদীয়া জেলার হয়ে মাঠে পরে, পর মোহনবাগানের অনূর্ধ্ব ১৯ দলে সুযোগ পেয়েছিলেন বাংলার এই তরুণ গোলরক্ষক। কলকাতা ফুটবল লীগে কালীঘাট এমএসের সদস্য। নিজের এই সাফল্যের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন তার প্রশিক্ষক চন্দন বিশ্বাসকে।
অয়নের কথায়, “ছোটবেলা থেকে গ্রামে অনেক টিটকিরি শুনতে হয়েছিল। কেউ পাশে ছিল না, এমনকি পরিবারের সদস্যরাও পাশে ছিল না। তবে একমাত্র ইনিই (চন্দন বিশ্বাস) আমার পাশে ছিলেন।”