ভক্তদের জন্য সুখবর, ফের শুরু হচ্ছে বৈষ্ণোদেবী যাত্রা

ত্রিকূট পাহাড়ের কোলঘেঁষে অবস্থিত মাতা বৈষ্ণোদেবী মন্দিরে (Vaishno Devi) আবারও শুরু হচ্ছে যাত্রা। দুর্ঘটনার কারণে দীর্ঘ ১৯ দিন বন্ধ থাকার পর আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে…

ভক্তদের জন্য সুখবর, ফের শুরু হচ্ছে বৈষ্ণোদেবী যাত্রা

ত্রিকূট পাহাড়ের কোলঘেঁষে অবস্থিত মাতা বৈষ্ণোদেবী মন্দিরে (Vaishno Devi) আবারও শুরু হচ্ছে যাত্রা। দুর্ঘটনার কারণে দীর্ঘ ১৯ দিন বন্ধ থাকার পর আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে ভক্তরা ফের মন্দিরে পৌঁছতে পারবেন। গত ২৬ আগস্ট অর্ধকুওয়ারির কাছে ভয়ঙ্কর ভূমিধসে ৩৪ জন তীর্থযাত্রীর মৃত্যু হয়েছিল। তার পরই প্রশাসনের তরফে যাত্রা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়।

শ্রাইন বোর্ডের সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, “অপ্রত্যাশিত খারাপ আবহাওয়া এবং পথ মেরামতির কারণে বৈষ্ণোদেবী যাত্রা বন্ধ রাখা হয়েছিল। সবকিছু ঠিকঠাক হওয়ায় ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে যাত্রা শুরু হবে। তবে আবহাওয়ার পরিস্থিতির ওপরই নির্ভর করবে যাত্রার নির্বিঘ্ন পরিচালনা।”

   

তীর্থযাত্রীদের জন্য বোর্ড কিছু বিশেষ নির্দেশও দিয়েছে। বৈধ পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখা, নির্দিষ্ট যাত্রাপথ ব্যবহার করা এবং কর্তব্যরত কর্মীদের নির্দেশ মেনে চলা আবশ্যিক। এছাড়াও লাইভ আপডেট, বুকিং পরিষেবা এবং হেল্পলাইনের জন্য ভক্তদের ওয়েবসাইট ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বোর্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “এই যাত্রা কেবল ধর্মীয় আচার নয়, এটি আমাদের বিশ্বাস এবং ঐক্যের প্রতীক। দুর্ঘটনার পরে দীর্ঘ অপেক্ষা সত্ত্বেও ভক্তরা ধৈর্য ধরে ছিলেন, তাঁদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।”

দুর্ঘটনার পরপরই লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিংহ ২৯ আগস্ট একটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। অতিরিক্ত প্রধান সচিব শালীন কাবরা, জম্মুর আইজি ভীম সেন তুতি এবং বিভাগীয় কমিশনার রমেশ কুমারকে নিয়ে গঠিত ওই কমিটির দায়িত্ব ছিল দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করে দুই সপ্তাহে রিপোর্ট দেওয়া। তবে এখনও সেই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসেনি।

Advertisements

এর আগে ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি বৈষ্ণোদেবী মন্দিরে ভিড়ের চাপে পদদলিত হয়ে ১২ জন তীর্থযাত্রীর মৃত্যু হয়েছিল। তখনও একই ধরনের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু সেই রিপোর্টও সামনে আনা হয়নি। এই প্রবণতার সমালোচনা করেছে সমাজকর্মী ও আইনি বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসন বারবার তদন্তের নামে কমিটি বানাচ্ছে, কিন্তু রিপোর্ট গোপন রেখেই চলছে।

এদিকে দুর্ঘটনার পরে এবার যাত্রাপথে নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাহাড়ি পথে অতিরিক্ত সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে, ভূমিধস প্রবণ এলাকায় সতর্কতামূলক বোর্ড লাগানো হয়েছে, এবং মেডিকেল টিম মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া রাতের যাত্রার জন্য বাড়ানো হয়েছে আলোর ব্যবস্থা ও নিরাপত্তারক্ষী বাহিনী।

প্রতিদিন হাজার হাজার ভক্ত জম্মুর কাটরা থেকে ১৩ কিলোমিটার পাহাড়ি পথে হেঁটে বৈষ্ণোদেবীর দর্শন করেন। দুর্ঘটনার কারণে ভক্তদের মধ্যে ভয় তৈরি হলেও, যাত্রা পুনরায় শুরু হওয়ার ঘোষণায় অনেকেই স্বস্তি পাচ্ছেন। এবার তাঁদের আশা, যাত্রাপথ আরও সুরক্ষিত হবে।

অতএব, দীর্ঘ বিরতির পর আবারও ভক্তদের জন্য খুলে যাচ্ছে বৈষ্ণোদেবীর দ্বার। দুর্ঘটনার ট্র্যাজেডি ভুলে না গিয়ে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মধ্যেই ভক্তরা তাঁদের প্রার্থনা ও বিশ্বাসের যাত্রা শুরু করবেন।