US-India relations under Trump
ওয়াশিংটন: ভারতের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে পাকিস্তানের দিকে ঝুঁকছেন ট্রাম্প? দুই দেশের শুল্ক যুদ্ধ নিয়ে যখন তোলপাড় রাজনৈতিক মহল, তখন সামনে এল চাঞ্চল্যকর এক দাবি৷ প্রাক্তন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভানের অভিযোগ, ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতি ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সুদৃঢ় সম্পর্ককে নষ্ট করেছে শুধুমাত্র তাঁর পরিবারের পাকিস্তানভিত্তিক ব্যবসায়িক স্বার্থ পূরণের জন্য। মেইডাসটাচ ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “ট্রাম্পের বিদেশনীতির সবচেয়ে অবহেলিত এবং ঝুঁকিপূর্ণ অংশগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম।”
পাকিস্তানের সঙ্গে চুক্তি
সুলিভান স্মরণ করিয়েছেন, দশকের পর দশক ধরে উভয় রাজনৈতিক দলের প্রশাসন ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করতে কাজ করেছে। ভারত শুধু বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র নয়, প্রযুক্তি, প্রতিভা, বাণিজ্য এবং চিনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। এই অংশীদারিত্বে দীর্ঘ সময় ধরে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। সুলিভানের দাবি, “পাকিস্তান ট্রাম্প পরিবারের সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তিতে আবদ্ধ, তাই ট্রাম্প ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে পিছনে সরিয়ে দিল। এটি কৌশলগতভাবে একটি বিশাল ক্ষতি, কারণ শক্তিশালী ভারত-আমেরিকা অংশীদারিত্ব আমেরিকার দীর্ঘমেয়াদী স্বার্থের জন্য অপরিহার্য।”
বৈশ্বিক প্রভাব US-India relations under Trump
সুলিভান সতর্ক করেছেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ শুধু ভারত-আমেরিকা সম্পর্ককে নয়, আমেরিকার বৈশ্বিক সুনামকেও আঘাত করছে। জার্মানি, জাপান ও কানাডা এই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং ভাবছে, “যদি ভারতের সঙ্গে এমন হতে পারে, আগামীকাল আমাদের সাথেও হতে পারে।”
তিনি বলেন, এই মনোভাব অন্যান্য দেশকে “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পুরোপুরি বিশ্বাস না রেখে বিকল্প পরিকল্পনা গ্রহণে” প্ররোচিত করছে। এটি আমেরিকার দীর্ঘমেয়াদী কূটনৈতিক স্বার্থের জন্য বিপজ্জনক।
ভারতীয় পণ্যের ওপর শুল্ক
ট্রাম্প প্রশাসন ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে, আংশিকভাবে বাণিজ্য ঘাটতি এবং ভারতের রাশিয়ান তেল কেনার অভিযোগ উল্লেখ করে। তবে জেফারিস এবং দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রকৃত কারণ ছিল ভারতের চার দিনের ইন্দো-পাক যুদ্ধের সময় ট্রাম্পের ভুয়া মধ্যস্থতার দাবি প্রত্যাখ্যান, যা ট্রাম্পকে রোষানলে ফেলেছিল।
ট্রাম্প ও পাকিস্তান সংযোগ
ইসলামাবাদ ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছে এবং পাকিস্তান ক্রিপ্টো কাউন্সিল (PCC)-এ তাঁর পরিবার ও ঘনিষ্ঠদের অন্তর্ভুক্ত করেছে। সুলিভানের দাবি, পাকিস্তানে ট্রাম্পের পরিবারের ক্রিপ্টো কারেন্সির ব্যবসায় ৬০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। মূলত এই কারণেই পাকিস্তানের সঙ্গে সখ্যতা বাড়িয়েছে ট্রাম্প।
পহেলগাঁও হামলার কয়েক দিনের মধ্যে ট্রাম্প পরিবার-সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড লিবার্টি ফিনান্সিয়াল (WLF) PCC-এর সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে। বিশেষজ্ঞরা এটিকে স্পষ্ট ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন যে, ট্রাম্প নীতিগতভাবে ইসলামাবাদের দিকে ঝুঁকেছেন, নয়াদিল্লির দিকে নয়। ভারতীয় পণ্যের ওপর শুল্ক ৫০ শতাংশ হলেও, পাকিস্তানের জন্য তা ছিল মাত্র ১৯ শতাংশ।
ক্রিপ্টো এবং ব্যক্তিগত স্বার্থ
PCC, যা ২৬ এপ্রিল ২০২৪-এ চালু হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার ক্রিপ্টো হাব গড়ার লক্ষ্য রাখে। WLF, যা ২০২৪ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি ডিসেন্ট্রালাইজড ফিন্যান্স প্ল্যাটফর্ম, ট্রাম্পের ছেলে এরিক ট্রাম্প, ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র এবং জামাই জারেড কুশনারের সঙ্গে যুক্ত।
WLF-এর ওয়েবসাইটে “Inspired by Donald J. Trump” লেখা রয়েছে, যেখানে তাঁকে Chief Crypto Advocate বলা হয়েছে। প্ল্যাটফর্মটি ব্লকচেইন উদ্ভাবন এবং স্টেবলকয়েন গ্রহণে মনোনিবেশ করছে, যা ট্রাম্প পরিবারের ব্যক্তিগত আর্থিক স্বার্থকে আরও শক্তিশালী করছে।
World: Former US National Security Advisor Jake Sullivan accuses Donald Trump of damaging the strong US-India relationship to benefit his family’s business interests in Pakistan. Discover how this alleged shift in policy could impact global trust in America and its long-term strategic alliances.