দীর্ঘ দু-আড়াই বছরের রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের (Russia Ukraine war) ধ্বংসস্তূপে বিধ্বস্ত ইউক্রেন (Ukraine) এখন আরও এক নতুন বিপদের মুখোমুখি। ইউক্রেনের পূর্ব সীমান্তে এখন নিঃশ্বাস ফেলছে উত্তর কোরিয়ার সেনা, এবং যেকোনও মুহূর্তে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সস্কি এই নতুন হুমকি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU) এবং পশ্চিমী মিত্রদেশগুলির সক্রিয় ভূমিকা কামনা করেছেন।
চিনকে রুখতে ১৩০০০ ফিট উচ্চতায় এয়ারবেস বানাল ভারত, চলবে তিব্বতের ওপর নজরদারি
জেলেন্সস্কি জানান, ইউক্রেনের কাছে স্পষ্ট তথ্য রয়েছে যে, রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তের কাছে উত্তর কোরিয়ার সেনা মোতায়েন রয়েছে এবং তারা ইউক্রেনে প্রবেশ করার জন্য প্রস্তুত।
এ অবস্থায় ইউক্রেন নিজেকে রক্ষার জন্য লংরেঞ্জের মিসাইল ব্যবহার করতে পারে, যা প্রয়োজন হলে উত্তর কোরিয়ার সেনাদের ওপর আঘাত হানতে সক্ষম। তবে এই ধরনের পদক্ষেপ নিতে হলে ইউক্রেনকে ইউরোপীয় মিত্রদেশগুলির অনুমোদন প্রয়োজন, এবং তাদের সমর্থনই এই মুহূর্তে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন জেলেন্সস্কি।
পোশাক খুলে প্রতিবাদ, তরুনীর মুক্তির দাবিতে উত্তাল ইরান
এছাড়াও, জেলেন্সস্কি আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানির মতো দেশগুলির ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন যে, তারা শুধু দেখছে এবং অপেক্ষা করছে যে কখন পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে। পশ্চিমী মিত্রদের কাছ থেকে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা সহযোগিতা না পেয়ে তিনি আশাহত এবং ক্ষুব্ধ।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যান্য পশ্চিমী মিত্ররা যদি আরও সক্রিয় না হন, তবে ইউক্রেনের সামনে আসন্ন বিপদ রোধ করা কঠিন হয়ে পড়বে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইতিমধ্যেই ইউরোপ ও পশ্চিমা বিশ্বের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে, আর এখন উত্তর কোরিয়ার মতো একটি পরমাণু শক্তিধর দেশ এই সংকটে যুক্ত হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে। উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীর উপস্থিতি কেবল ইউক্রেনের জন্য নয়, পুরো ইউরোপীয় অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্যই এক নতুন হুমকি হতে পারে।
এই অবস্থায় ইউক্রেনের পাশের দেশগুলিও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে, কারণ এই সংঘাত সীমান্ত পেরিয়ে তাদেরও প্রভাবিত করতে পারে।
সংখ্যালঘু বিরোধী কোনও কাজে মোদীকে সমর্থন করবে না নায়ডু: টিডিপি
জেলেন্সস্কি এর আগে বারবার ইউক্রেনের জন্য আরও প্রতিরক্ষা সহযোগিতার আবেদন করেছেন, বিশেষ করে আমেরিকা ও ন্যাটো দেশগুলির কাছে। কিন্তু পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হওয়ার পরও সেখান থেকে কাঙ্ক্ষিত সহযোগিতা না পেয়ে ইউক্রেন সরকারের হতাশা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইউক্রেনের সীমান্তে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে, এবং জেলেন্সস্কি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, তারা সর্বশক্তি দিয়ে নিজেদের রক্ষা করতে প্রস্তুত।
এই পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন যদি সক্রিয় পদক্ষেপ নেয় এবং ইউক্রেনকে প্রয়োজনীয় সামরিক ও কৌশলগত সহায়তা প্রদান করে, তবে ইউক্রেন এই নতুন হুমকির মুখে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবে। তবে এখন পর্যন্ত এই সংকটে ইউরোপীয় দেশগুলির ভূমিকা কতটা কার্যকর হয়, সেটিই দেখার বিষয়।