ব্রিটেনের এই হাইপারসনিক মিসাইল আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, এর শক্তি জেনে ঘুম উড়ল চিনের

Missile: বিশ্বে যুদ্ধের পদ্ধতি পরিবর্তন হচ্ছে। প্রতিটি দেশই উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র ও অস্ত্র তৈরির প্রতিযোগিতায় নেমেছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্রিটেন ও আমেরিকা সফলভাবে হাইপারসনিক মিসাইল ইঞ্জিনের পরীক্ষা…

missile

Missile: বিশ্বে যুদ্ধের পদ্ধতি পরিবর্তন হচ্ছে। প্রতিটি দেশই উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র ও অস্ত্র তৈরির প্রতিযোগিতায় নেমেছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্রিটেন ও আমেরিকা সফলভাবে হাইপারসনিক মিসাইল ইঞ্জিনের পরীক্ষা করেছে, যা বিশ্বের যেকোনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে সক্ষম। এই পরীক্ষাটি ভার্জিনিয়ার ল্যাংলি রিসার্চ সেন্টারে পরিচালিত হয়েছিল, যা AUKUS চুক্তির অংশ।

এই হাইপারসনিক মিসাইল ইঞ্জিনের শক্তি এমন যে এটি শব্দের গতির চেয়ে 5 গুণ দ্রুত উড়তে পারে। এর পরীক্ষাটি ছয় সপ্তাহ ধরে চলতে থাকে, যার মধ্যে রিয়েল টাইম ডেটা সংগ্রহ করা হয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ক্ষেপণাস্ত্র ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে গেম চেঞ্জার হিসাবে প্রমাণিত হতে পারে, কারণ কিছুক্ষণ আগে এই অঞ্চলে চিনা জাহাজগুলিকে ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছিল। তাই এটি চিনের জন্য একটি বড় শঙ্কা।

   

যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্র সফল পরীক্ষা পরিচালনা করেছে 
ব্রিটেন ও আমেরিকা একটি মিশনের অধীনে হাইপারসনিক মিসাইল ইঞ্জিনের সফল পরীক্ষা করেছে। এটি AUKUS প্রতিরক্ষা চুক্তির অংশ, যাতে অস্ট্রেলিয়াও অন্তর্ভুক্ত। এই প্রকল্পে ব্রিটেনের ডিফেন্স সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ল্যাব, ইউএস এয়ার ফোর্স এবং গ্যাস ডায়নামিক্স কোম্পানির মধ্যে একটি অংশীদারিত্ব ছিল।

ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মতে, এই পরীক্ষার উদ্দেশ্য হল 2030 সালের মধ্যে হাইপারসনিক অস্ত্রের প্রোটোটাইপ তৈরি করা। এই পরীক্ষায়, ইঞ্জিনের শক্তি, তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া এবং রিয়েল-টাইম ডেটা সহ প্রযুক্তি উন্নত করা হয়েছে। এই পরীক্ষাগুলো ভবিষ্যতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়।

এই হাইপারসনিক এর বৈশিষ্ট্য কী কী?
এই হাইপারসনিক মিসাইলগুলি মাক 5 গতিতে অর্থাৎ শব্দের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি গতিতে উড়তে পারে। এত বেশি গতির কারণে এই মিসাইলগুলো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে সক্ষম। এর পাশাপাশি, তাদের দিক পরিবর্তন করার ক্ষমতা তাদের আরও বিপজ্জনক করে তোলে।

ব্রিটেন ও আমেরিকার এই প্রযুক্তি শুধু দূর দূরত্বে সুনির্দিষ্ট আক্রমণ চালাতে পারে না, শত্রুকে প্রস্তুত হওয়ার সুযোগও দেয় না। এমন পরিস্থিতিতে হাইপারসনিক অস্ত্র দিয়ে আমেরিকা ও যুক্তরাজ্যের কৌশলগত অবস্থান আরও মজবুত হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই পরীক্ষা বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের পদ্ধতি বদলে দিতে পারে।

Advertisements

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে
AUKUS অংশীদারিত্ব বিশেষভাবে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। এখন এই হাইপারসনিক প্রযুক্তির কারণে এ অঞ্চলে আমেরিকা ও ব্রিটেনের দখল আরও শক্তিশালী হবে। এই প্রযুক্তিকে চিনের বাড়তে থাকা হস্তক্ষেপের জবাব হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ইন্দো-প্যাসিফিক এখন যুদ্ধের পরবর্তী হটস্পট হয়ে উঠতে পারে, যেখানে এই আধুনিক অস্ত্রগুলি মোতায়েন করা হবে। একই সময়ে, এই হাইপারসনিক অস্ত্রগুলি আমেরিকা এবং যুক্তরাজ্যের দ্রুত প্রতিক্রিয়া এবং প্রি-এমপটিভ স্ট্রাইকের জন্য সক্ষমতা বাড়িয়ে তুলবে, যা এলাকায় উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

চিনের জন্য বড় হুমকি
গত কয়েক বছরে, চিন তার হাইপারসনিক প্রোগ্রামে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে, তবে AUKUS-এর এই পরীক্ষা চিনের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। সম্প্রতি কিছু চিনা যুদ্ধজাহাজকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ঘুরতে দেখা গেছে। অন্যদিকে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েক বছরে অস্ট্রেলিয়ার নৌ সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে এই হাইপারসনিক মিসাইল শুধু অস্ট্রেলিয়াকেই শক্তি জোগাবে না। বরং, AUKUS চুক্তির অধীনে, UK-US ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে তাদের দখল আরও শক্তিশালী করবে। সম্প্রতি তুরস্কও তার ‘টাইফুন’ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে, যখন জাপান ও আমেরিকা নতুন ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি নিয়ে একসঙ্গে কাজ করছে। এই পরিস্থিতিতে চিনকে তার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আপডেট করতে হতে পারে।