U.S. medicine import tariff
ওয়াশিংটন: আমেরিকায় ওষুধ আমদানিতে নজিরবিহীন শুল্ক আরোপের প্রস্তাব দিল ট্রাম্প প্রশাসন। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আমদানিকৃত ওষুধের উপর শুল্ক ২০০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর ভাবনা রয়েছে ওয়াশিংটনের। বর্তমানে অধিকাংশ ওষুধ শুল্কমুক্ত অবস্থায় আমেরিকায় প্রবেশ করে।
জাতীয় নিরাপত্তার যুক্তি
আমেরিকা ১৯৬২ সালের ট্রেড এক্সপ্যানশন অ্যাক্ট-এর সেকশন ২৩২-এর আওতায় এই পদক্ষেপ করছে। তাদের যুক্তি, কোভিড-১৯ মহামারী আমেরিকার ওষুধ আমদানিনির্ভরতা এবং ঘাটতির ঝুঁকি প্রকট করে তুলেছিল। ফলে দেশীয় ওষুধ উৎপাদন বাড়ানো এখন “জাতীয় নিরাপত্তার প্রয়োজন”।
প্রভাব: দাম বাড়বে, সরবরাহ ব্যাহত U.S. medicine import tariff
বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপে ওষুধের দাম বাড়বে এবং সরবরাহ শৃঙ্খলেও টান পড়বে। আইএনজি-র ডিডেরিক স্টাডিগ জানিয়েছেন, মাত্র ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ হলেও আমেরিকায় ওষুধের দাম গড়ে ১০ থেকে ১৪ শতাংশ বাড়তে পারে। এর সবচেয়ে বড় ধাক্কা লাগবে নিম্নআয়ের পরিবার ও বৃদ্ধ রোগীদের উপর। বিশেষত জেনেরিক ওষুধের ক্ষেত্রেই বিপর্যয় দেখা দিতে পারে, কারণ এই শিল্প খুব সীমিত মুনাফার উপর চলে।
কেন গুরুত্বপূর্ণ ভারত
ভারত বিশ্বের অন্যতম বড় জেনেরিক ওষুধ ও সক্রিয় ফার্মাসিউটিক্যাল উপাদান (API) সরবরাহকারী। ভারতীয় ফার্মাসিউটিক্যাল অ্যালায়েন্সের সেক্রেটারি জেনারেল সুদর্শন জৈন জানিয়েছেন, আপাতত আমেরিকা ভারতের জেনেরিক ওষুধকে শুল্কের আওতার বাইরে রেখেছে, কারণ সেগুলি সাশ্রয়ী চিকিৎসার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বাসব ক্যাপিটালের সহ-প্রতিষ্ঠাতা সন্দীপ পাণ্ডে বলেছেন, আমেরিকার ওষুধ আমদানির প্রায় ৬ শতাংশ ভারতের হাতে, কিন্তু প্রকৃত নির্ভরতা অনেক গভীর। অতীতে ভারতের একটি কারখানা অস্থায়ীভাবে বন্ধ হওয়ায় আমেরিকায় ক্যানসারের ওষুধের ঘাটতি তৈরি হয়েছিল।
মার্কিন উৎপাদন শৃঙ্খল পুনর্গঠন কেন কঠিন
দশকের পর দশক ধরে ওষুধ উৎপাদন ভারত, চিন, আয়ারল্যান্ড ও সুইজারল্যান্ডে স্থানান্তরিত হয়েছে। এখন তা ফের আমেরিকায় ফিরিয়ে আনা হবে ব্যয়বহুল এবং সময়সাপেক্ষ। ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের মার্তা ভোসিনস্কা বলেন, “দেশের ভেতরে সব গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ তৈরি করা আদর্শ হলেও এতে বিপুল অর্থব্যয় হবে এবং রোগীদের জন্য ওষুধ আরও দামি হয়ে উঠবে।”
শিল্প ও আইনি লড়াই
রোশ, জনসন অ্যান্ড জনসনের মতো বহুজাতিক ওষুধ সংস্থা আমেরিকায় বহু-বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ ঘোষণা করলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আমদানিকৃত কাঁচামাল বা উপাদানের বিকল্প এই মুহূর্তে তৈরি হবে না।
একই সঙ্গে আইনি জটিলতাও তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি মার্কিন আপিল কোর্ট রায় দিয়েছে, এ ধরনের সর্বব্যাপী শুল্ক আরোপ করতে কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন। ফলে মামলাটি শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে গড়াতে পারে।
সামনে কী অপেক্ষা করছে
অনেক সংস্থা ইতিমধ্যেই পর্যাপ্ত ওষুধ মজুত করে রেখেছে। তাই তাৎক্ষণিক কোনও বিপর্যয় নাও হতে পারে। তবে আগামী কয়েক বছরে যদি ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক কার্যকর হয়, তা হলে আমেরিকায় ওষুধের দাম লাফিয়ে বাড়বে। ভারতের ক্ষেত্রেও আপাতত শঙ্কা কম, তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, ওয়াশিংটনের নীতির সামান্য পরিবর্তনও ভারতের ২৫ বিলিয়ন ডলারের ওষুধ রফতানি শিল্পের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে উঠতে পারে।
World: The Trump administration proposes a drastic 200% tariff on imported drugs, citing national security. Learn how this move could increase medicine prices for American consumers, disrupt supply chains, and impact key exporters like India.