দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে এক ঐতিহাসিক সাক্ষাৎ। দীর্ঘ বিরতির পর ফের মুখোমুখি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। দুই বৃহৎ অর্থনীতির নেতার এই বৈঠকেই মিলল কূটনৈতিক উষ্ণতার আভাস- একে অপরকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান।
একে অপরের প্রশংসা
বৈঠকের শুরুতেই ট্রাম্প বলেন, “চিনের প্রেসিডেন্ট শি এক মহান দেশের মহান নেতা। তাঁর সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক আমার, এবং আমরা একসঙ্গে বহু বিষয়ে একমত হয়েছি। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের এই বন্ধুত্ব আরও বহু বছর স্থায়ী হবে।”
উত্তরে শি জিনপিংও সমান আন্তরিক সুরে বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, বহু বছর পর আপনার সঙ্গে আবার দেখা হয়ে খুবই ভালো লাগছে। আপনার পুনর্নির্বাচনের পর আমরা তিনবার ফোনে কথা বলেছি, কয়েকবার চিঠি বিনিময়ও হয়েছে। আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক সামগ্রিকভাবে স্থিতিশীল রয়েছে। যদিও সব বিষয়ে মত মিলবে না, কিন্তু তা স্বাভাবিক। দুই বৃহৎ অর্থনীতির মধ্যে কিছু মতবিরোধ থাকবেই।”
বন্ধু হিসেবে থাকা Trump Xi Jinping Busan Meeting
শি আরও বলেন, “চিন ও আমেরিকার মধ্যে পার্থক্য থাকলেও আমাদের উচিত অংশীদার ও বন্ধু হিসেবে থাকা। দুই দেশ মিলে বিশ্বের মঙ্গলার্থে আরও অনেক গঠনমূলক কাজ করতে পারে।”
এই বহুল প্রত্যাশিত বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় বুসানের একটি বিমান ঘাঁটিতে, এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কোঅপারেশন (APEC) সম্মেলনের পাশে। বহু বছর পর দুই শীর্ষ নেতার মুখোমুখি বৈঠককে ঘিরে বিশ্বজুড়ে নজর ছিল তীব্র। প্রধান আলোচ্য বিষয়, বাণিজ্য যুদ্ধের উত্তেজনা প্রশমনের পথ খোঁজা।
সম্পর্কে গলল বরফ
ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন করে আরোপিত শুল্ক ও চিনের প্রতিশোধমূলক বিরল ধাতু রফতানি নিয়ন্ত্রণের ফলে গত কয়েক মাসে সম্পর্ক উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। তবে বৈঠকের আগে ইঙ্গিত মেলে, ওয়াশিংটন অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ আমদানি কর আরোপের পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে পারে, আর বেইজিংও কিছুটা নমনীয় হয়ে রফতানি নিয়ন্ত্রণ শিথিল ও মার্কিন সয়াবিন আমদানি পুনরায় শুরু করতে রাজি হতে পারে।
বৈঠকের পর রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই সাক্ষাৎ হয়তো দুই দেশের মধ্যে জমে থাকা বরফ গলানোর সূচনা। একদিকে আমেরিকার বাণিজ্যনীতি পুনর্গঠনের সংকল্প, অন্যদিকে চিনের অর্থনৈতিক স্থিতি রক্ষার প্রচেষ্টা, তার মাঝেই যেন নতুন করে সংলাপ ও সহযোগিতার দরজা খুলে গেল বুসানে।


