গদরে শুরু হলো কসাইখানা: চিনে রপ্তানি হবে পাকিস্তানী গাধা

অসন্তোষ জিইয়ে রেখে পাকিস্তানের বালুচিস্তান প্রদেশে শুরু হলো দেশের সর্ব বৃহৎ কসাইখানা, যেখান থেকে চিনে রপ্তানি হবে গাধার মাংস, হাড় এবং চামড়া। পাকিস্তান সরকারের তরফে…

অসন্তোষ জিইয়ে রেখে পাকিস্তানের বালুচিস্তান প্রদেশে শুরু হলো দেশের সর্ব বৃহৎ কসাইখানা, যেখান থেকে চিনে রপ্তানি হবে গাধার মাংস, হাড় এবং চামড়া। পাকিস্তান সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, গদরে নির্মিত এই কসাইখানাটি শুধু দেশেরই নয়, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম পশুপ্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র হতে চলেছে। এই প্রকল্পে বিশাল অঙ্কের বিনিয়োগ এসেছে, যার মূল লক্ষ্য হচ্ছে চিনের বিশাল বাজারে গাধার বিভিন্ন অংশ রপ্তানি করা।

চিনে গাধার মাংস বেশ জনপ্রিয়, বিশেষত কিছু প্রদেশে এটি সুস্বাদু খাবার হিসেবে গণ্য হয়। শুধু তাই নয়, চিনের ঐতিহ্যবাহী ওষুধ তৈরিতে গাধার চামড়া ও হাড় ব্যবহৃত হয়। বিশেষ করে, গাধার চামড়া থেকে প্রস্তুত করা হয় ‘ইজিয়াও’ নামক এক ধরনের জেলাটিন, যা ঔষধি গুণাগুণের জন্য পরিচিত। ফলে, চিনে গাধার চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

   

পাকিস্তানে গাধার সংখ্যা প্রায় ৫.৭ মিলিয়ন বা ৫৭ লাখ, যা বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম গাধার জনসংখ্যা। সরকারের লক্ষ্য, এই প্রাণীগুলোকে রপ্তানি শিল্পে কাজে লাগানো। এর আগেও পাকিস্তান সরকার চিনের সঙ্গে গাধা রপ্তানির বিষয়ে একাধিক চুক্তি করেছিল, তবে এত বড় মাপের কসাইখানা স্থাপনের উদ্যোগ এবারই প্রথম।

পাকিস্তানের লাহোর, করাচি, এবং পেশোয়ারের মতো শহরগুলিতে ইতিমধ্যেই ছোট আকারের গাধা প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র রয়েছে, কিন্তু গদরে স্থাপিত এই কসাইখানা পুরোপুরি বাণিজ্যিকভাবে গাধার মাংস ও অন্যান্য অংশ রপ্তানির জন্য নির্মিত হয়েছে। এই প্রকল্প শুরু হওয়ার পর থেকেই পাকিস্তানের বিভিন্ন মহলে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। পশু অধিকারকর্মীরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বলছেন, এটি নির্মমতা এবং পশু নিধনের মাধ্যমে ব্যবসা করার অমানবিক প্রচেষ্টা।

Advertisements

এছাড়া, বালুচিস্তানের স্থানীয় বাসিন্দারাও এই প্রকল্পের বিরোধিতা করছেন। প্রথম থেকেই বালুচিস্তানের বাসিন্দারা চিনের কোনো প্রকল্পে সন্তুষ্ট নন। এই তীব্র অসন্তোষ এর মধ্যেই গদরে এই সর্ব বৃহৎ কসাইখানা তৈরী হচ্ছে। কসাইখানা উৎপাদনে কাজ করছে কিছু চিনা সংস্থাও, কিন্তু অনেকেই প্রশ্ন চলেছেন যে জীবন্ত পশু কেন রপ্তানী করা হবেনা।

পাকিস্তানের অর্থনীতি বর্তমানে ভয়াবহ সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার ক্রমশ কমছে, মূল্যস্ফীতি চরমে, এবং কর্মসংস্থানের সুযোগও সীমিত। এমন পরিস্থিতিতে সরকার আশা করছে, গদরের এই কসাইখানা বড় আকারে বৈদেশিক মুদ্রা আনতে সাহায্য করবে।

আমাদের Google News এ ফলো করুন

২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।

Google News Follow on Google News