
আটা ও তেলের ক্রমবর্ধমান দাম এবং প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানে (Pakistan) অর্থনৈতিক মন্দা সংক্রান্ত পরিস্থিতি আরও গুরুতর হয়ে উঠছে। এদিকে পাকিস্তানের তেল কোম্পানিগুলো সতর্ক করেছে যে, ডলারের ঘাটতি এবং টাকার অবমূল্যায়নের কারণে বাণিজ্য ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় দেশটির পেট্রোলিয়াম শিল্প ধ্বংসের পথে। নিউজ চ্যানেল জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাহিদা মেটাতে ডলারের ওপর থেকে সীমা তুলে নিয়েছে সরকার। এই কারণে পাকিস্তানি রুপি আন্তর্জাতিক বাজারে ঐতিহাসিক পতনে পৌঁছেছে প্রতি ডলার ২৭৬.৫৮ টাকা।
স্থানীয় মুদ্রার জন্য বাজার-নির্ধারিত বিনিময় হার এবং জ্বালানি ভর্তুকি সহজীকরণ সহ ত্রাণ প্যাকেজ পুনরুদ্ধার করতে আইএমএফ বেশ কয়েকটি শর্ত আরোপ করেছে। সরকার ইতোমধ্যে উভয় শর্তই মেনে নিয়েছে।
তেল কোম্পানি উপদেষ্টা পরিষদ, তেল ও গ্যাস নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ এবং বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়কে পাঠানো এক চিঠিতে বলেছে, টাকার বিনিময় হারের পতনের কারণে শিল্পের কোটি কোটি টাকা লোকসান হয়েছে কারণ নতুন হারের সম্ভাবনা রয়েছে। বৈদেশিক পুঁজির রিজার্ভ কমে যাওয়ার কারণে লেটার অব ক্রেডিটেও বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। ২৭ জানুয়ারির তথ্য অনুযায়ী, বৈদেশিক মূলধনের রিজার্ভ ৩০৮.৬২ মিলিয়ন ডলার হ্রাস পেয়েছে, যা মাত্র ১৮ দিনের আমদানির জন্য যথেষ্ট।
অর্থনৈতিক মন্দার এই যুগে পাকিস্তান পেমেন্টের গুরুতর ভারসাম্য সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে, যার কারণে টাকার মূল্য দ্রুত পতন হচ্ছে এবং আমদানিকৃত পণ্যের দাম অত্যন্ত ব্যয়বহুল হয়ে উঠছে। সম্প্রতি পাকিস্তানে পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম ৩৫ টাকা বেড়েছে। এ কারণে দেশে প্রতি লিটার পেট্রোল বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়। সরকারের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ মানুষ লাহোরে পেট্রোল পাম্পে আগুন ধরিয়ে দেয়।
অন্যদিকে অর্থনৈতিক সংকট থেকে মুক্তি ও ঋণ পাওয়ার চেষ্টায় থাকা প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেছেন, আইএমএফ যে শর্ত দিয়েছে তা বিস্ময়কর। কিন্তু এসব শর্ত মানা বাধ্যতামূলক। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল পাকিস্তানে পৌঁছেছে। এই দলটি ৯ ফেব্রুয়ারি সিদ্ধান্ত নেবে ইসলামাবাদকে বেলআউট প্যাকেজ দেবে কি না?